নয়াদিল্লি, 31 মার্চ: 2030 সালের মধ্যে ভারতের রফতানি বাণিজ্যকে 2 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে দেওয়াই নয়া নীতির লক্ষ্য ৷ শুক্রবার বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি 2023-এর উদ্বোধন করে একথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ৷ শনিবার, অর্থাৎ 1 এপ্রিল (2023) থেকে এই নয়া নীতি কার্যকর হবে ৷
বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি 2023 বা এফটিপি 2023 সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল সন্তোষ সারাঙ্গি ৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, চলতি বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিটির মেয়াদ পাঁচ বছর ৷ কিন্তু, নয়া নীতির ক্ষেত্রে তেমন কোনও সময়সীমা থাকছে না ৷ তাই যখন যেমন প্রয়োজন হবে, তেমনভাবেই এটি সংশোধিত ও বর্ধিত করা যাবে ৷
সন্তোষ আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্য়েই ভারতের রফতানি বাণিজ্য 7 হাজার 760 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছুঁয়ে ফেলেছে ৷ চলতি অর্থবর্ষের শেষ দিনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধরলে এই একবছরে (2022-23 অর্থবর্ষ) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ হবে 760 থেকে 770 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ আগের অর্থবর্ষে (2021-22) এই পরিমাণটিই ছিল 676 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ এর আগে যে পঞ্চবার্ষিকী বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি ভারত কার্যকর করেছিল, তা শুরু হয়েছিল 2015 সালের 1 এপ্রিল ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে একাধিকবার সেটিকে সংশোধিত করা হয় এবং সেটির মেয়াদ বাড়ানো হয় ৷ মূলত করোনা অতিমারির কারণেই এই পদক্ষেপ করতে হয় সরকারকে ৷ শেষবার 2022 সালের সেপ্টেম্বর মাসে এটির মেয়াদ বাড়ানো হয় 2023 সালের 31 মার্চ পর্যন্ত ৷
ভারতের পুরনো বৈদেশির বাণিজ্য নীতিগুলির অধীনে এখনও পর্যন্ত মোট 39টি এমন শহর রয়েছে, যেগুলি রফতানির গুণমানযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ৷ এই শহরগুলিকে পোশাকি ভাষায় বলা হয়, 'টাউনস অফ এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স' বা টিইই ৷ নয়া নীতিতে এই তালিকায় আরও চারটি শহর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৷ এই চারটি শহর হল ফরিদাবাদ, মোরাদাবাদ, মির্জাপুর এবং বারাণসী ৷ পাশাপাশি, নয়া বৈদেশিক বাণিজ্যিক নীতিতে ই-কমার্সের মাধ্যমে রফতানি বাড়ানোর উপর বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে ৷ এর ফলে 2030 সালের মধ্যে রফতানি বাণিজ্যে ই-কমার্সের পরিসর বেড়ে 200 থেকে 300 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি, ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রফতানির মূল্যসীমা বা 'ভ্যালু লিমিট' প্রতি চালান বা 'কনসাইনমেন্ট'-এ 5 লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে 10 লক্ষ টাকা করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: তামাকজাত দ্রব্যে সেসের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দিল কেন্দ্র
সন্তোষের মতে, নয়া বৈদেশিক বাণিজ্য নীতির সৌজন্যে আগামী দিনে ভারতীয় মুদ্রা বা 'রুপি' একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রায় পরিণত হবে ৷ সেক্ষেত্রে ভারত নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহার করেই অন্য়ান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারবে ৷ এতে বৈদেশিক মুদ্রা কেনার ঝক্কি ও খরচ, দুই-ই কমবে ৷ সন্তোষের দাবি, নয়া বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি যুগোপযোগী এবং ক্রমবর্ধমান বেড়ে চলা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে করা হয়েছে ৷