পটনা, 8 জুলাই: বিহারের পটনার ফুলওয়ারিশরিফের এক মহাদলিত পরিবারের ছেলে তাঁর ভবিষ্যত তৈরি করবে আমেরিকায় । পাটনার গনপুরা গ্রামের 17 বছর বয়সি প্রেম কুমার আমেরিকার লাফায়েট কলেজে পড়ার জন্য 2.5 কোটি টাকার স্কলারশিপ পেয়েছেন (Prem kumar Got Scholarship from America)। প্রেম ভারতে এই কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রথম দলিত ছাত্র । বিশ্বের 6 জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন যিনি লাফায়েটে কলেজ থেকে সম্মানজনক 'ডায়ার ফেলোশিপ' পান । প্রেম বিহারের মহাদলিত মুসাহার সম্প্রদায়ের ৷
জানা গিয়েছে, প্রেম গত চার বছর ধরে পাটনার একটি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করছে । কয়েকদিন আগে ইনস্টিটিউট থেকেই সে জানতে পারে, আমেরিকার নামকরা কলেজ লাফায়েটে সে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে । স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য কলেজ থেকে 2.5 কোটি টাকার বৃত্তিও পেয়েছে । পড়াশোনার সম্পূর্ণ খরচের পাশাপাশি অন্যান্য খরচও বহন করবে তারা । এর মধ্যে রয়েছে টিউশন ফি, বাসস্থান, বই, স্বাস্থ্যবীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি ।
আরও পড়ুন : Tokiyo QUAD Fellowship : টোকিয়ো-কোয়াডে চালু ফেলোশিপ, ভারতীয় পড়ুয়াদের আবেদন জানাতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
1826 সালে প্রতিষ্ঠিত লাফায়েট কলেজটি আমেরিকার শীর্ষ 25টি কলেজের মধ্যে অন্যতম । এটি আমেরিকার 'হিডেন আইভি' কলেজের ক্যাটাগরিতে গণনা করা হয় । এই ফেলোশিপটি নির্বাচিত সেইসব ছাত্রদের দেওয়া হয় যাঁদের বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন থেকে কঠিনতম সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা রয়েছে ।
প্রেম কুমার বলেন, "আমার বাবা-মা কখনও স্কুলে যেতে পারেননি । এটা অবিশ্বাস্য । বিহারের মহাদলিত শিশুদের জন্য যে ডেক্সটারিটি গ্লোবাল সংস্থা কাজ করছে তা খুবই প্রশংসনীয় । তাদের কারণেই আজ এই সাফল্য পেয়েছি ।"
ডেক্সটিরিটি গ্লোবালের (Dexterity Global) সিইও শরদ সাগর বলেন, "2013 সাল থেকে আমরা বিহারে মহাদলিত শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করেছি । আমাদের লক্ষ্য এই সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নেতৃত্ব তৈরি করা, তাদের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো ৷"
আরও পড়ুন : স্কলারশিপ অমিল, জাতীয় সড়ক অবরোধ সিধু-কানু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের
সূত্রের খবর, প্রেম তার পরিবারের প্রথম সদস্য যে কলেজে যায় । এখন সে আমেরিকার লাফায়েট কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশোনা করবে । এর জন্য আমেরিকার স্বনামধন্য লাফায়েটে কলেজ তাকে 2.5 কোটি টাকার স্কলারশিপ দিয়েছে । এই ঘোষণায় খুশি গোটা গ্রাম । প্রেম কুমারের বাবা জিতন মাঝি একজন শ্রমিক । মা কালবতী দেবী 10 বছর আগে মারা গিয়েছেন । প্রেম তার পাঁচ বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই । 2020 সালে দানাপুরের শোষিত সমাধান কেন্দ্র উদ্যান টোলা থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে সে । এই সমাধান কেন্দ্র থেকে 2022 সালে বিজ্ঞান থেকে ইন্টার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ।
14 বছর বয়সে প্রেম তার প্রতিভার জন্য জাতীয় সংস্থা ডেক্সটিরিটি গ্লোবাল (Dexterity Global) দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছিল ৷ তাকে ইনস্টিটিউটে স্থান দেওয়া হয় ৷ ডেক্সটিরিটি গ্লোবাল একটি জাতীয় সংস্থা যা শিক্ষাগত সুযোগ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভারত ও বিশ্বের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব তৈরি করে । গত সপ্তাহে, ডেক্সটিরিটি গ্লোবাল-এর প্রতিষ্ঠাতা, সিইও এবং বিহারের বিখ্যাত সামাজিক উদ্যোক্তা শরদ সাগর ঘোষণা করেছিলেন যে সংস্থার কেরিয়ার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম 'ডেক্সটিরিটি টু কলেজ'-এর অধীনে, শিক্ষার্থীরা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে 100 কোটিরও বেশি বৃত্তি পেয়েছে ।