হায়দরাবাদ, 1 সেপ্টেম্বর: প্রায় এক বছর হতে চলল ভালোবেসে বিয়ে করে স্ত্রীর জন্য সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছেন পাকিস্তানি যুবক ৷ পাকিস্তান থেকে নেপাল হয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে হায়দরাবাদে পৌঁছন তিনি ৷ 9 মাস পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই গ্রেফতার যুবক ৷ হায়দরাবাদের পশ্চিম অঞ্চলের ডিসিপি সাই চৈতন্য বৃহস্পতিবার রাতে একটি বিবৃতি দিয়ে জানান যে, ওই পাকিস্তানি যুবক অন্য ব্যক্তির নামে আধার কার্ড নেওয়ার চেষ্টা করার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ৷
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে ফায়াজ আহমেদ নামে বছর 24-এর এই যুবক চাকরির জন্য 2018 সালে ডিসেম্বর মাসে শারজাহ গিয়েছিলেন ৷ সেখানে সাইফজোনে টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পান তিনি ৷ এদিকে, 2019 সালে হায়দরাবাদের বাহাদুরপুর থানার অন্তর্গত কিশানবাগের 29 বছরের যুবতি নেহা ফতিমাও কাজের জন্য শারজাহ গিয়েছিলেন ৷ সেই সময় ফায়াজ তাঁকে মিলেনিয়াম ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি পেতে সাহায্য করেন ৷ এরপর দু'জনের মধ্যে পরিচয় হয় ৷ ধীরে ধীরে প্রেম ও 2019 সালেই শারজাহতে বিয়ে করেন তাঁরা ৷ তাঁদের একটি ছেলে রয়েছে ৷
ফতিমা একাই গত বছর হায়দরাবাদে ফিরে এসে কিশানবাগের আসাফ বাবানগরে থাকতে শুরু করেন ৷ ওদিকে ফায়াজও পাকিস্তানে যান ৷ এই সময় ফতিমার বাবা-মা ফায়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ তাঁরাই ফায়াজকে আশ্বস্ত করেন যে হায়দরাবাদে থাকার জন্য সমস্ত পরিচয়পত্র তাঁরা তৈরি করবেন ৷
ভিসা বা অন্য কোনও পরিচয় না থাকা সত্ত্বেও ফায়াজ 2022 সালের নভেম্বরে পাকিস্তান থেকে নেপালে যান ৷ সেখানে ফতিমার বাবা জুবায়ের শেখ ও মা আফজাল বেগম দুজনেই কাঠমান্ডুতে গিয়ে ফায়াজের সঙ্গে দেখা করেন ৷ কিছু লোকের সহায়তায় তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে ফায়াজকে ভারতে নিয়ে আসেন ৷ এরপর তাঁরা কিশানবাগে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করে ৷ ফতিমার মা-বাবা ফায়াজকে একটি আধার কার্ড দেন এবং পরিকল্পনা করেন এমন কিছু করতে হবে যাতে তাকে সকলে স্থানীয় মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করে ৷
তাঁরা ফায়াজকে মাদাপুরের একটি আধার কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে তাঁদের ছেলে মহম্মদ ঘাউসের নামে নথিভুক্ত করার চেষ্টা করে ৷ এমনকি এর জন্য জাল জন্ম সার্টিফিকেটও জমা করে ফতিমার মা-বাবা ৷ স্থানীয়দের মধ্যে যারা জানতেন যে জুবাই ও আফজলের মহম্মদ ঘাউস নামে কোনও ছেলে নেই, তাঁরা পুলিশকে বিষয়টি জানান ৷ খবর পেয়ে পুলিশ এসে কিশানগঞ্জের বাড়ি থেকে ফায়াজকে গ্রেফতার করে ৷ তাঁর পাকিস্তানি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানায় পুলিশ ৷ এদিকে বিষয়টি টের পেতেই পালিয়ে যায় ফতিমার মা ও বাবা ৷ অভিযুক্ত ফায়াজকে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ৷ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন কি না, তা নিয়ে গভীরভাবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে ৷ এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা ৷
আরও পড়ুন : 'প্রেমিকের জন্যই ভারতে', এটিএস-এর 13 প্রশ্নে আর কী বললেন পাক যুবতী ?