ওড়িশা, 24 জানুয়ারি : স্বাদে অতুলনীয়। আবার গুণেও নাকি অনবদ্য। ওড়িশার আদিবাসীদের খাবারের মেনুতে নয়া মাত্রা এনে দেয় একটি সস। আবার কোরোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এই সস বিশেষ কার্যকরী বলে বিশ্বাস আদিবাসীদের। এ কথা শুনে হুড়মুড়িয়ে সসের দোকানে ভিড় করলে ভুল করবেন। টমেটো, চিলি বা সাধারণ সোয়া সস নয়। আদিবাসীদের তৈরি আশ্চর্য এই সস তৈরি করা হয় পিঁপড়ে দিয়ে।
ওড়িশার গজপতি জেলার গুমা ব্লকের আদিবাসী সম্প্রদায় বন্য কালো পিঁপড়ে দিয়ে এই সস তৈরি করে। যার পোশাকি নাম 'কাই'। জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়ে চাক থেকে বিশেষ ধরনের কালো বুনো পিঁপড়ে সংগ্রহ করে আনেন আদিবাসীরা। তারপর সেগুলিকে পুড়িয়ে পিষে ফেলা হয়। পিঁপড়ের সঙ্গে পিঁয়াজ, রসুন, নুন ও লঙ্কাও পাথর দিয়ে ঘষেঁ বেটে নেওয়া হয়। তৈরি হয় কাই সস। সেখানকার মানুষদের দাবি, জিভে জল এনে দেয় এই সস। ফ্যানা ভাত ও রাগির রুটি দিয়ে খেতে নাকি অসাধারণ লাগে। যে কোনও মেনুতে আলাদা মাত্রা এনে দেয় এই সস বা চাটনি।
আদিবাসীদের দাবি, শুধু স্বাদেই নয় গুনেও এই কাই সসের জুড়ি মেলা ভার। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এটি কোরোনা ভাইরাসকে কাছে ঘেঁষতে দেয় না। যে কোনও বয়সের মানুষের জন্য এটি উপকারী। এই সস সারাতে পারে আর্থারাইটিসের মতো রোগ। ভালো করে দেয় দৃষ্টিশক্তি। আদিবাসীদের দাবি, কাই সস নিয়মিত খান বলেই তাঁদের গ্রামে এখনও হানা দিতে পারেনি কোভিড 19।
আরও পড়ুন: চাকরির খোঁজে বাড়ি পালানো ৫ শিশু উদ্ধার গুয়াহাটিতে
বিজ্ঞানের চোখ দিয়ে দেখলে দেখা যায়, পিঁপড়ের মধ্যে আছে ফরমিক অ্যাসিড, যা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ রুখতে সাহায্য করে। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই সস মানুষের খাওয়া ঠিক নয়। গজপতির এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, 'কাই সসের কোনও মেডিসিনাল ভ্যালু নেই। বরং এটি খেলে পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আদিবাসীরা যাতে এই সস না-খান, সে জন্য তাঁদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন।'
আদিবাসীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নানা পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। এ ব্যাপারে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও কাজ করছে। তবে এখনও অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের চিরাচরিত ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি আদিবাসীরা। সেই কারণেই বহু বছর ধরে তাঁরা নিয়মিত নিজেদের ডায়েটে রেখেছেন কাই সস।