হায়দরাবাদ: তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রতিভাবান নেত্রী এবং একজন লেখক, যিনি তাঁর লেখায় নিরন্তর শব্দের জাদু ব্যবহার করেছেন। তিনি আর কেউ নন, ভারতের নাইটিঙ্গেল সরোজিনী নাইডু । আজ এই অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর জন্মবার্ষিকী । নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতার জন্য তাঁর প্রয়াসের কারণে তাঁর জন্মদিনটি জাতীয় নারী দিবস হিসেবে পালিত হয় (National Women's Day 2023)।
সরোজিনী নাইডু ছিলেন একজন কিংবদন্তি স্বাধীনতা সংগ্রামী ৷ একাধারে ছিলেন কবি এবং রাজনীতিবিদ । অন্যদিকে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন । প্রতিবছর 13 ফেব্রুয়ারি সরোজিনী নাইডুর জন্মদিন জাতীয় নারী দিবস হিসেবে পালিত হয় ৷ নারী অধিকার আন্দোলন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদানকে স্মরণ করা হয় এই দিনটিতে ।
তিনি শুধু রাজনীতি বা সামাজিক ক্ষেত্রেই নয়, সাহিত্য জগতেও অবদান রেখেছেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন । ট্র্যাজেডি, রোমান্স এবং দেশপ্রেম তাঁর লেখায় সুপরিচিত হয়েছে । হায়দরাবাদের নিজামের কাছ থেকে স্কলারশিপ পাওয়ার পর, তিনি ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করতে যান এবং নারীর সমতা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারণা সম্পর্কে জানতে পারেন ।
ভারতে ফিরে আসার পর, তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন । পরে 1925 সালে, সরোজিনী নাইডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি হন এবং স্বাধীনতার পর উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবেও নিযুক্ত হন ৷ ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল তিনিই।
তাঁর কবিতা সংকলন 'গোল্ডেন থ্রেশহোল্ড' এবং 'বার্ড অফ টাইম' ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্যের মাস্টারপিস হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তিনি সাহিত্যে কৃতিত্বের জন্য বিশ্বে স্বীকৃত। তাঁর কবিতা আমাদের দেশ, দেশবাসী ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রতিফলিত করে এবং পাঠকদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে। সরোজিনী নাইডু ছিলেন মহিলাদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় মহিলা সমিতির অন্যতম নেত্রী । তিনি নারী অধিকারের পক্ষেও কথা বলতেন । ভোটের অধিকার, সমতার অধিকার, প্রতিনিধিত্বের অধিকার, বিধবাদের অধিকার এবং সমান রাজনৈতিক পদের অধিকারের জন্য তিনি কঠোর সংগ্রাম করেছিলেন ।
নারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অর্জন উদযাপন করতে এবং আধুনিক সময়েও সমাজে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে জাতীয় নারী দিবস পালিত হয় । অতীতের ভারতের অন্যতম মহান নারীর জীবন ও কৃতিত্বকে স্মরণ করা, বর্তমান সময়ে নারীদের অবদান উদযাপন করা এবং আমাদের দেশের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তরুণ মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও অনুপ্রাণিত করা, এই দিনটির মূল উদ্দেশ্য ৷
আরও পড়ুন: রাতের উদুপিতে ভরসা সাধারণের রূপান্তরকামীদের ক্যান্টিন, শিরোনামে পূর্বী-বৈষ্ণবী-চন্দনা