জবলপুর (মধ্যুপ্রদেশ), 25 সেপ্টেম্বর: চিকিৎসকের গাফিলতিতে নষ্ট হয়েছিল চোখ। অবশেষে মিলল বিচার। 20 বছর বাদে ক্ষতিপূরণ বাবদ 40 লক্ষ টাকা পেতে চলেছে জবলপুরের তরুণীর পরিবার। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এবং তিনি যে হাসপাতালে কর্মরত তাদেরই দিতে হবে ক্ষতিপূরণের টাকা। শুধু তাই নয়, 20 বছরের পুরনো মামলা হওয়ায় আলাদা করে দিতে হবে সুদের টাকাও। সবমিলিয়ে 85 লক্ষ টাকা পাবে পরিবার। মধ্যপ্রদেশের ক্রেতা সুরক্ষা দফতর এই নির্দেশ দিয়েছে।
জবলপুরের বাসিন্দা শৈলেন্দ্র জৈনের মেয়ে সাক্ষীর জন্ম হয় 2003 সালে। জন্মের সময় তাঁর বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল। সেই কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। জন্মের পর বেশ কিছুদিন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণেই থাকতে হয় সদ্যজাতকে। এরপর হাসপাতাল থেকে সদ্যজাতকে বাড়ি নিয়ে আসে পরিবার। তখনও কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি।
কিছুদিন পর সাক্ষীর ঠাকুমা সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে পড়েন সময়ের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের চোখের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। শরীরে বেশি পরিমাণে অক্সিজেনের প্রবেশ ঘটলে চোখ চিরদিনের মতো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রতিবেদনটি পড়ে আর দেরি করেনি পরিবার। স্থানীয় একটি হাসপাতালের চিকিৎসক মুকেশ খাড়ের কাছে সদ্যজাতকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেশ কিছুটা সময় তাঁর অধীনেই চিকিৎসা চলে। একটা সময় পরিবার বুঝতে পারে এই চিকিৎসক শেষমেশ কাজের কাজ করে উঠতে পারবেন না। এরপর আত্মীয়দের পরামর্শে দিল্লি এবং গুজরাতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয় পরিবার। দেশের দুই খ্য়াতনামা চিকিৎসকের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়।তাঁরা জানান, প্রথম দিকে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে এখন আর করার কিছু নেই। শেষ চেষ্টা হিসেবে অস্ত্রোপচারও করায় পরিবার। তাতেও লাভ হয়নি। ফেরেনি দৃষ্টিশক্তি।
পরিবার অবশ্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে দায়ের হয় মামলা। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে। শেষমেশ 20 বছর মিলল বিচার। দফতর সুদ-সহ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল চিকিৎসক এবং হাসপাতালকে। এদিকে 20 বছর বয়সিও সাক্ষীও হার স্বীকার করেননি। স্কুল শেষ করে এখন দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। আগামিতেও এভাবেই লড়াই করে, জীবনকে পদে পদে চ্যালেঞ্জ করেই এগিয়ে যেতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: বিহারে বিষ মদের বলি 2, তদন্তে পুলিশ