কলকাতা, 3 এপ্রিল: রামনবমীর সন্ত্রাস প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কড়া আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শাহকে আক্রমণ করতে গিয়ে ঘুরপথে বিলকিস বানোর প্রসঙ্গ টেনে আনলেন তিনি। কৃষ্ণনগরের সাংসদের দাবি, রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিহারে যারা সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করেছে শাহ তাদের ফাঁসি দিতে চান কিন্তু গুজরাতে তিনিই খুনি ও ধর্ষকদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করেন।
রামনবমীর মিছিল ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে বিহার-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন শাহ। কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে শনিবার বিহারে যান তিনি। তাঁর সাসারামেও যাওয়ার কথা ছিল। সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি হওয়া সাসারাম সফর বাতিল করেন শাহ। পাশাপাশি সন্ত্রাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে সরাসরি অভিযুক্তও করেন শাহ। তাঁর মতে যে সরকারে লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডির মতো দল থাকে তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। নিজের ভাষণে বিহারের জঙ্গলরাজ নিয়েও সরব হন তিনি। একইসঙ্গে বিহারকে অবিলম্বে এই জোট সরকারের হাত থেকে মুক্ত করার কথাও ঘোষণা করেন বিজেপির এই প্রাক্তন সভাপতি।
এরপরই তাঁকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ মনে করছে, নাম না করে বিলকিসের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন মহুয়া। গুজরাত দাঙ্গার সময় গণধর্ষণের শিকার হন বিলকিস। তাঁর পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যকে খুনও করা হয়। ঘটনায় 11 জন দোষী সাব্যস্ত হয়। গত বছর গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই 11 জনকে মুক্তি দেয় রাজ্য সরকার। সেই ঘটনা ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি বিষয়টি আইনি দিকেও মোড় নিতে থাকে । এই 11 জনের মুক্তির বিরোধিতা করে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিলকিস। এই মামলা শোনার জন্য আলাদা বেঞ্চও গঠিত হয়েছে। এবার ঘুরপথে এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মহুয়া আক্রমণ করলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । এই প্রথম নয়, এর আগেও রামনবমীর সন্ত্রাস নিয়ে শাহকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল। হাওড়ার শিবপুরের সন্ত্রাসের ঘটনা নিয়ে একইভাবে শাহকে আক্রমণ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মনে হয়, হাওড়ার সন্ত্রাসের নেপথ্যে শাহের হাত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: বিলকিস বানোর ধর্ষকের সঙ্গে একই মঞ্চে বিজেপি নেতারা, ছবি টুইট মহুয়ার