চণ্ডীগড়, 17 ডিসেম্বর: ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ইতিমধ্যেই তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নতুন মুখ বেছে নিয়েছে ৷ তারপরই দল সুচিন্তিত রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে চলেছে ৷ কংগ্রেস-সহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলিকে কার্যত পিছনে ফেলে যেভাবে বিজেপি রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে, এবার সেই সূত্র ধরেই পিছিয়ে পরা অনগ্রসর শ্রেণী তাস খেলতে চাইছে পদ্ম শিবির। সূত্রের খবর, হরিয়ানা নির্বাচনেও একই কার্ড খেলতে চলেছে বিজেপি ৷
বিজেপি মধ্যপ্রদেশে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি) প্রার্থী মোহন যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছে ৷ অন্যদিকে, ছত্তিসগড়ে উপজাতি প্রার্থী বিষ্ণু দেও সাই শপথ নিয়েছেন। রাজস্থানে অনশ্য ব্রাহ্মণ প্রার্থী ভজন লাল শর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এইভাবে, বিজেপি বর্ণ সমীকরণের লাইন ধরে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতিতে কার্যত ব্যালেন্সের খেলা খেলেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজস্থানে, দলিত প্রার্থী প্রেম চাঁদ বৈরওয়া এবং দিয়া কুমারী (ব্রাহ্মণ) উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে, মধ্যপ্রদেশে জগদীশ দেবদা (ব্রাহ্মণ) এবং রাজেন্দ্র শুক্লা (দলিত) উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। ছত্তিশগড়ে আবার উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা একজন ব্রাহ্মণ এবং দ্বিতীয় অরুণ সাও একজন ওবিসি সদস্য।
পরিসংখ্যান অনুসারে, হরিয়ানার জাঠ ভোট ব্যাঙ্কের উপর বিজেপির 17 শতাংশ ভাগ সত্ত্বেও পোক্ত দখল নেই। দল রাজ্যের অন্যান্য অংশ থেকে ভোট পেতে সফল হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় ৷ হরিয়ানায় ব্রাহ্মণ, বেনিয়া এবং শিখ সম্প্রদায়ের 30 শতাংশ ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে যেখানে ওবিসি (আহির এবং যাদব) শ্রেণীতে রয়েছে 24 শতাংশ ভোট শেয়ার ৷ একই সঙ্গে, 21 শতাংশেরও বেশি ভোট ব্যাংক তফসিলি জাতি (এসসি)-র অন্তর্ভুক্ত ৷ বাকিগুলি গুর্জর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ধীরেন্দ্র অবস্থি মনে করেন, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রায়ই ব্রাহ্মণদের খুশি করার একটা অভিযোগ ওঠে।
এটা একরকম প্রকাশ্যই ছিল যে, বেশিরভাগ ব্রাহ্মণ বিজেপির পক্ষে তাদের ভোট দিয়েছে ৷ কিন্তু দল কখনই ব্রাহ্মণ প্রার্থীদের বড় পদে নিয়োগ করেনি। সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের মাধ্যমে, বিজেপি এই মিথ ভেঙে তিনটি রাজ্যে একজন ব্রাহ্মণ মুখ্যমন্ত্রী এবং দুইজন ব্রাহ্মণ উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করেছে। ধীরেন্দ্র অবস্থিত জানান, হরিয়ানায় দলের জয় চূড়ান্তভাবে রাজ্যের জন্য উপকৃত হবে ৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বেশ স্পষ্ট যে, বিজেপি দক্ষিণ হরিয়ানায় ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে আয়ত্তে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করবে, কারণ এই অঞ্চলে সম্প্রদায়ের বিশাল আধিপত্য রয়েছে ৷ একই সঙ্গে ব্রাহ্মণ ভোটব্যাঙ্ককেও তুষ্ট করার চেষ্টা করবে দল।
অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারকে মধ্যপ্রদেশে দলের পর্যবেক্ষক করে তাঁর মর্যাদা আরও বাড়িয়েছে ৷ পাশাপাশি তাঁর বিরোধীদের একটি শক্তিশালী বার্তাও দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক গুরমিত সিংয়ের দাবি, বিজেপি যে পদ্ধতি মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করেছে তাতে জাতপাতের সমীকরণের অনেকটাই সমাধান করতে সফল হয়েছে ৷ সেই সঙ্গে, বিরোধীদের দাপটকেও অনেকটাই দুর্বল করেছে।
আরও পড়ুন
'সংসদে নিরাপত্তায় বড় গলদ ছিল, বাংলার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই !' দিল্লি যাওয়ার আগে দাবি মমতার
'সংসদে স্মোক ক্যানিস্টার হামলায় কোনও তর্ক-বির্তক নয়,' মন্তব্য নরেন্দ্র মোদির
একুশে বৈঠকে সিডব্লিউসি; এজেন্ডা লোকসভার রণকৌশল, আসন ভাগাভাগি ও ভারত জোড়োর মতো যাত্রার কর্মসূচি