নয়াদিল্লি, 17 ডিসেম্বর: ইয়েমেনের ভিসার জন্য আবেদন করলেন মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মা ৷ তবে, এখনও তাঁর সেদেশে যাওয়ার ভিসার আবেদন মঞ্জুর হয়নি ৷ গতবছর 12 ডিসেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট নিমিশার মা প্রেমা কুমারিকে কোনও একজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে ইয়েমেনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ৷ এরপরই ভিসা পেতে আবেদন করেন তিনি।
কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে অনুমতি দিতে চায়নি ৷ কারণ, ইয়েমেনে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ সেখানে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে ভারত সরকার সাহায্য করার অবস্থায় নেই ৷ ইয়েমেনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার সময় হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ বলেছিলেন, প্রেমা কুমারি নিজের দায়িত্বে ইয়েমেন যাবেন ৷ সেখানে কিছু হলে, কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এর জন্য দায়ী থাকবে না ৷ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল প্রেমা কুমারিকে ইয়েমেনে যাওয়ার জন্য বিশেষ ছাড় দিতে ৷
উল্লেখ্য, 2017 সালে ইয়েমেনের নাগরিক তালাল আবদো মাহদিকে হত্যার অভিযোগ ওঠে নিমিশার বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ ছিল, নিমিশা তালাল আবদো মাহদিকে অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক দেন ৷ সেই কারণে মাহদির মৃত্যু হয় ৷ কিন্তু, কেন এমনটা করেছিলেন নিমিশা ! ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র সেদেশের নাগরিকদের ক্লিনিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেয় ৷ সেই কারণে, 2014 সালে নিমিশা ইয়েমেনে একটি ক্লিনিক তৈরি করার জন্য নিমিশা মাহদির কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন ৷
সেই সময় নিমিশা এবং মাহদি একে অপরের কাছাকাছি চলে আসেন ৷ কিন্তু, পরবর্তী সময়ে দু’জনে সম্পর্কে অবনতি দেখা দেয় ৷ নিমিশা অভিযোগ করেছিলেন, মাহদি তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নিয়েছিলেন ৷ এমনকী তাঁর উপর অত্যাচারও করতেন ৷ সেই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতেই নিমিশা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাহদিকে মাত্রাতিরিক্ত মাদক দিয়ে মেরে ফেলেন বলে অভিযোগ ৷
ইয়েমেনে সুপ্রিম কোর্ট নিমিশা প্রিয়াকে ফাঁসির সাজা থেকে বাঁচতে গতবছরের 13 নভেম্বর পর্যন্ত শেষ সুযোগ দিয়েছিল ৷ সেদেশে শরিয়া আইন নেমে চলে সেখানকার সরকার ৷ সেই অনুযায়ী, নিমিশাকে বংশের কোনও সম্পত্তি বা মূল্যবান সামগ্রী জরিমানা হিসেবে দিতে বলা হয়েছিল ৷ কিন্তু, ভারত সরকার নিমিশার মাকে ইয়েমেনে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায়, তাঁকে ফাঁসির সাজা শোনায় সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট ৷ তবে, মেয়েকে বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করতে চান প্রেমা কুমারি ৷ তাই আদালতের অনুমতিতে, বিশেষ ছাড়পত্রে ইয়েমেনের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: