নয়াদিল্লি, 7 অগস্ট: অন্যের মতামত গ্রহণ এবং তাকে সহ্য করা মানে এই নয় যে, 'হেট স্পিচ'কেও মেনে নিতে হবে ৷ গুজরাতে ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এ কথা বললেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ স্নাতকস্তরের আইনি পড়ুয়াদের তিনি 'নিজের বিবেক এবং নিরপেক্ষ যুক্তি'র উপর ভিত্তি করে চলার পরামর্শ দেন (Justice D Y Chandrachud says being tolerant of views not mean hate speech should be tolerated) ৷
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ "সামাজিক মাধ্যমে মানুষের মনোযোগ সীমাবদ্ধ ৷ এটাও মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা এমন অনেক কাজ করি, যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে ৷ প্রতিদিনের ঝঞ্ঝাট নিয়ে দুশ্চিন্তা করা উচিত নয়", বলেন দেশের ভাবী প্রধান বিচারপতি ৷ উল্লেখ্য, দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা অবসর নিলে বিচারপতি ইউইউ ললিত প্রধান বিচারপতি হবেন ৷ তারপর বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সেই আসনে বসার কথা ৷
তিনি ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের (Voltaire) একটি উক্তি তুলে বলেন, "তুমি যা বলছো, আমি তা নাও মানতে পারি ৷ কিন্তু তোমার বলার অধিকারের জন্য আমি মৃত্যু পর্যন্ত লড়ব ৷" এই উদ্ধৃতিটি নিজেদের জীবনে কার্যকর করতে বলেন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি ৷ ভুল করা, কোনও কারণ ছাড়া নিজেকে গ্রহণযোগ্য ও সহনীয় করে তোলার অর্থ অন্ধের মতো আচরণ ৷ এর মানে এটা নয় যে, হেট স্পিচের বিরুদ্ধে গলা তোলা যাবে না, জানান বিচারপতি ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে "বাড়তে থাকা কোলাহল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনৈতিক ধন্দ, সামাজিক এবং নৈতিক সংঘাতে"র মধ্যে গিয়ে পড়বেন তাঁরা ৷ সেখানে তাঁদের নিজের বিবেক, বিচারবুদ্ধি দিয়ে চলতে হবে, ভবিষ্যৎ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বার্তা বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের ৷
আরও পড়ুন: 'মা হতে রাজি নই', অন্তঃসত্ত্বা কুমারীর গর্ভপাতে সম্মতি সুপ্রিম কোর্টের
তিনি সেথ গোদিনের (Seth Godin's analogy) স্রোত এবং বাতাসের একটি তুলনা উল্লেখ করে বলেন, "নদীতে নৌকাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাতাসের থেকে স্রোতের বড় ভূমিকা রয়েছে ৷ কিন্তু বাতাস আমাদের মনকে বিক্ষিপ্তি করে দেয়... স্রোতটা হল আমাদের শ্রেণি, বর্ণ, লিঙ্গ এবং শক্তিশালী অর্থনীতি ৷ এর সঙ্গে জাতপাতকেও আমি যোগ করব ৷" তিনি আইনি পড়ুয়াদের স্রোতকে জয় করা অথবা এর গতিপথ বদলানোর জন্য উৎসাহিত করেন ৷