ETV Bharat / bharat

Russia-Ukraine Conflict : ভারতের সঙ্গে কথা চলছে, রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে মন্তব্য বাইডেনের

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে (Russia-Ukraine Conflict) ভারতের অবস্থান কী হবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা ৷

Joe Biden in Consultation with India
রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে মন্তব্য বাইডেনের
author img

By

Published : Feb 25, 2022, 10:05 AM IST

Updated : Feb 25, 2022, 1:23 PM IST

ওয়াশিংটন, 25 ফেব্রুয়ারি : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ন্যাটো বাহিনীর আশঙ্কাকে সত্যি করে শুরু হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ ৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে ৷ ভারত বর্তমানে মধ্যপন্থা নিয়ে চলছে বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে এপ্রসঙ্গে আলোচনা চলছে (US in consultations with India on situation in Ukraine) ৷ তাঁর কথায়, "ভারতের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে, সেটা এখনও শেষ হয়নি ৷"

ঘটনা হল, রাশিয়ার ইউক্রেনের উপর এই হামলাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের উপর সবচেয়ে বড় সঙ্কট হিসেবে দেখা হচ্ছে ৷ ইউরোপের বহুদেশ ন্যাটো গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ৷ আর এই ন্যাটো গোষ্ঠীর মাথা ধরা হয় আমেরিকাকে ৷ ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ৷ গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সেই প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হওয়া মানে কার্যত রাশিয়ার দোড়গোড়ায় মার্কিন সেনার উপস্থিতি ৷ আমেরিকার চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার সেটা মেনে না নেওয়াই স্বাভাবিক ৷ এবং এই পরিস্থিতি এড়াতেই ভ্লাদিমির পুতিন হামলা করেছেন ইউক্রেনে ৷ অর্থাৎ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে কার্যত তাল ঠুকছে আমেরিকা ও রাশিয়া ৷

আরও পড়ুন : ইউক্রেনের চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দখল নিল রাশিয়া, রেডিয়েশন লিকের শঙ্কা !

আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভারতের অবস্থান ৷ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর চিন ইতিমধ্যেই রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ চিন বিষয়টিকে রাশিয়ার দখলদারি হিসেবে দেখতে নারাজ ৷ আমেরিকা চাইছে এর পাল্টা, ভারত যোগ দিক মার্কিন অক্ষে ৷ মহাশক্তিধর এই দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের সুসম্পর্কের ইতিহাস ৷ রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অন্যতম পুরনো বন্ধু মনে করে ভারত ৷ গত কয়েক দশকে আমেরিকার সঙ্গেও ভারতের সমঝোতা ও সখ্য বেড়েছে ৷ তাই কোনও এক পক্ষে অবস্থান নেওয়া এই মুহূর্তে ভারতের পক্ষে শক্ত বলেই মত কূটনৈতিক মহলের ৷ ফলে বর্তমানে মধ্যপন্থা বেছে নিতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে ৷

এক্ষেত্রে কাজ করছে আরও বেশকিছু বিষয় ৷ তথ্য বলছে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতে ব্যবহৃত প্রায় 50 শতাংশ অস্ত্র, সরঞ্জামই রাশিয়ায় তৈরি ৷ ভারতের অস্ত্র চুক্তির প্রায় 60 শতাংশই রাশিয়ার সঙ্গে ৷ ভারতীয় সেনার ব্যবহৃত মূল দুটি শ্রেণির যুদ্ধ ট্যাঙ্ক টি-72 এম ওয়ান ও টি-90 এস রাশিয়ায় তৈরি ৷ এই ট্যাঙ্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও সরঞ্জামের জন্য ভারতকে এখনও রাশিয়ার উপর নির্ভর করতে হয় অনেকাংশে ৷ রাশিয়া থেকে টি-90 এমএস ট্যাঙ্ক কেনার বিষয়েও আলোচনা চলছে ভারতের ৷ ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম নির্ভরযোগ্য যুদ্ধ বিমান সুখোইও রাশিয়ায় তৈরি ৷ যন্ত্রাংশ-সহ আরও সুখোই যুদ্ধবিমান রাশিয়া থেকে কিনতে চাইছে ভারত ৷ চাইছে প্রয়ুক্তির আদান-প্রদান ৷ এছাড়াও রয়েছে একাধিক যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন রাশিয়ার থেকে কেনার বিষয়ও ৷ রাশিয়ার থেকে 20 হাজার কালশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেল ও 5টি এস-400 ট্রিয়াম্ফ এয়ার মিশাইল সিস্টেম কেনার চুক্তি করেছে ভারত ৷ এই এয়ার মিশাইল সিস্টেম কেনার চুক্তির অঙ্ক প্রায় 5 বিলিয়ন ডলার ৷ ইতিমধ্যেই একটি সিস্টেম ভারতে পাঠিয়েছে রাশিয়া, চলতি বছরের মধ্যেই বাকিগুলিও আসার কথা দেশে ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে ভারত যদি এই পরিস্থিতিতে মার্কিন পক্ষ নেয় সেক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে করা এই সামরিক চুক্তিগুলিতে প্রভাব পড়বে ৷ টান পড়তে পারে ভারতীয় সেনার যুদ্ধাস্ত্রেও ৷

আরও পড়ুন : ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে বেসমেন্টে লুকিয়ে 400 ভারতীয় পড়ুয়া

এছাড়াও রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল, পেট্রোপণ্য, গ্যাস, সার আমদানি করে থাকে ভারত ৷ তাই বুঝে পা ফেলতে হচ্ছে ভারতকে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যেই কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন রাশিয়ার উপর ৷ একাধিক বাধানিষেধ জারি হয়েছে আমদানি, রফতানি ক্ষেত্রেও ৷ রাশিয়াকে কোনও দেশ সমর্থন করলে তাকেও ফল ভোগ করতে হতে পারে বলে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বাইডেন ৷ সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক চুক্তিগুলির ভবিষ্যত, ভারত-মার্কিন, ভারত-রুশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ নিয়ে একটা প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে ৷

ওয়াশিংটন, 25 ফেব্রুয়ারি : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ন্যাটো বাহিনীর আশঙ্কাকে সত্যি করে শুরু হয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণ ৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে ৷ ভারত বর্তমানে মধ্যপন্থা নিয়ে চলছে বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে এপ্রসঙ্গে আলোচনা চলছে (US in consultations with India on situation in Ukraine) ৷ তাঁর কথায়, "ভারতের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে, সেটা এখনও শেষ হয়নি ৷"

ঘটনা হল, রাশিয়ার ইউক্রেনের উপর এই হামলাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের উপর সবচেয়ে বড় সঙ্কট হিসেবে দেখা হচ্ছে ৷ ইউরোপের বহুদেশ ন্যাটো গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ৷ আর এই ন্যাটো গোষ্ঠীর মাথা ধরা হয় আমেরিকাকে ৷ ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ৷ গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সেই প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হওয়া মানে কার্যত রাশিয়ার দোড়গোড়ায় মার্কিন সেনার উপস্থিতি ৷ আমেরিকার চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়ার সেটা মেনে না নেওয়াই স্বাভাবিক ৷ এবং এই পরিস্থিতি এড়াতেই ভ্লাদিমির পুতিন হামলা করেছেন ইউক্রেনে ৷ অর্থাৎ ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে কার্যত তাল ঠুকছে আমেরিকা ও রাশিয়া ৷

আরও পড়ুন : ইউক্রেনের চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দখল নিল রাশিয়া, রেডিয়েশন লিকের শঙ্কা !

আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভারতের অবস্থান ৷ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর চিন ইতিমধ্যেই রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ চিন বিষয়টিকে রাশিয়ার দখলদারি হিসেবে দেখতে নারাজ ৷ আমেরিকা চাইছে এর পাল্টা, ভারত যোগ দিক মার্কিন অক্ষে ৷ মহাশক্তিধর এই দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের সুসম্পর্কের ইতিহাস ৷ রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অন্যতম পুরনো বন্ধু মনে করে ভারত ৷ গত কয়েক দশকে আমেরিকার সঙ্গেও ভারতের সমঝোতা ও সখ্য বেড়েছে ৷ তাই কোনও এক পক্ষে অবস্থান নেওয়া এই মুহূর্তে ভারতের পক্ষে শক্ত বলেই মত কূটনৈতিক মহলের ৷ ফলে বর্তমানে মধ্যপন্থা বেছে নিতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে ৷

এক্ষেত্রে কাজ করছে আরও বেশকিছু বিষয় ৷ তথ্য বলছে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতে ব্যবহৃত প্রায় 50 শতাংশ অস্ত্র, সরঞ্জামই রাশিয়ায় তৈরি ৷ ভারতের অস্ত্র চুক্তির প্রায় 60 শতাংশই রাশিয়ার সঙ্গে ৷ ভারতীয় সেনার ব্যবহৃত মূল দুটি শ্রেণির যুদ্ধ ট্যাঙ্ক টি-72 এম ওয়ান ও টি-90 এস রাশিয়ায় তৈরি ৷ এই ট্যাঙ্কগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও সরঞ্জামের জন্য ভারতকে এখনও রাশিয়ার উপর নির্ভর করতে হয় অনেকাংশে ৷ রাশিয়া থেকে টি-90 এমএস ট্যাঙ্ক কেনার বিষয়েও আলোচনা চলছে ভারতের ৷ ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম নির্ভরযোগ্য যুদ্ধ বিমান সুখোইও রাশিয়ায় তৈরি ৷ যন্ত্রাংশ-সহ আরও সুখোই যুদ্ধবিমান রাশিয়া থেকে কিনতে চাইছে ভারত ৷ চাইছে প্রয়ুক্তির আদান-প্রদান ৷ এছাড়াও রয়েছে একাধিক যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিন রাশিয়ার থেকে কেনার বিষয়ও ৷ রাশিয়ার থেকে 20 হাজার কালশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেল ও 5টি এস-400 ট্রিয়াম্ফ এয়ার মিশাইল সিস্টেম কেনার চুক্তি করেছে ভারত ৷ এই এয়ার মিশাইল সিস্টেম কেনার চুক্তির অঙ্ক প্রায় 5 বিলিয়ন ডলার ৷ ইতিমধ্যেই একটি সিস্টেম ভারতে পাঠিয়েছে রাশিয়া, চলতি বছরের মধ্যেই বাকিগুলিও আসার কথা দেশে ৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে ভারত যদি এই পরিস্থিতিতে মার্কিন পক্ষ নেয় সেক্ষেত্রে রাশিয়ার সঙ্গে করা এই সামরিক চুক্তিগুলিতে প্রভাব পড়বে ৷ টান পড়তে পারে ভারতীয় সেনার যুদ্ধাস্ত্রেও ৷

আরও পড়ুন : ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্তে বেসমেন্টে লুকিয়ে 400 ভারতীয় পড়ুয়া

এছাড়াও রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল, পেট্রোপণ্য, গ্যাস, সার আমদানি করে থাকে ভারত ৷ তাই বুঝে পা ফেলতে হচ্ছে ভারতকে ৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যেই কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন রাশিয়ার উপর ৷ একাধিক বাধানিষেধ জারি হয়েছে আমদানি, রফতানি ক্ষেত্রেও ৷ রাশিয়াকে কোনও দেশ সমর্থন করলে তাকেও ফল ভোগ করতে হতে পারে বলে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বাইডেন ৷ সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক চুক্তিগুলির ভবিষ্যত, ভারত-মার্কিন, ভারত-রুশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ নিয়ে একটা প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে ৷

Last Updated : Feb 25, 2022, 1:23 PM IST

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.