নয়াদিল্লি, 25 ফেব্রুয়ারি: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে (Russia-Ukraine War), তার সমাধান হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত ও জার্মানি ৷ শনিবার দুই দেশের তরফে জারি করা যৌথ বিবৃতিতে এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এদিন সকালে দু‘দিনের ভারত সফরে এসেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ (German Chancellor Olaf Scholz) ৷ রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে স্বাগত জানানো হয় ৷ পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Prime Minister Narendra Modi) সঙ্গে বৈঠক করেন স্কোলজ ৷ সেই বৈঠকের পরই এই যৌথ বিবৃতি জারি করা হয় (India-Germany Joint Statement) ৷
প্রসঙ্গত, স্কোলজের এই সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি প্রথমবার ভারতে এলেন ৷ আর এমন একটা সময় তিনি ভারত সফরে এলেন, যখন জি20 গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সভাপতিত্ব করার ভার রয়েছে ভারতের কাছে (G20 Presidency) ৷ গত ডিসেম্বরে এই দায়িত্ব এসেছে ৷ তার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে বৈঠক করেছেন জি20 গোষ্ঠীভুক্ত দেশের প্রতিনিধিরা ৷
স্কোলজ এদিন রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই বিষয়টির উপর জোর দেন ৷ তাঁর বক্তব্য, বলপ্রয়োগ করে সীমান্ত পরিবর্তন করা যায় না ৷ যেহেতু এই যুদ্ধের জেরে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, তাই একে তিনি বিপর্যয় বলেই ব্যাখ্যা করেছেন ৷ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকী গিয়েছে শুক্রবার ৷ তার পরদিনই এই যুদ্ধের অবসানের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি ৷ বললেন, "আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার দেশগুলি আগ্রাসনের ভয়ানক যুদ্ধ দ্বারা দৃঢ়ভাবে ও নেতিবাচকভাবে যেন প্রভাবিত না হয় ৷’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ভারত আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে তার সমাধানের ওপর জোর দিয়ে আসছে । ভারত যেকোনও শান্তি প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে প্রস্তুত । সারা বিশ্ব কোভিড-19 অতিমারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বুঝতে পেরেছে ৷ উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আরও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে এই দুই সংকট ।
সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ দমন করার জন্য ভারত ও জার্মানির মধ্যে সক্রিয় সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ৷ জানান যে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ নিশ্চিহ্ন করার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপের প্রয়োজনে দুই দেশ একমত হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কার প্রয়োজনীয়তার পক্ষে সওয়াল করেছেন ৷ এই নিয়ে জার্মানিও ভারতের সঙ্গে সহমত বলে তিনি জানিয়েছেন ৷ জার্মানি ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ৷ ভারতে বিনিয়োগের মূল উৎসও এই দেশ ৷
আরও পড়ুন: 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষে ভোট দিইনি, শান্তির কথা বলছি', রাষ্ট্রসংঘে মোদি সরকার