নয়াদিল্লি, 26 জানুয়ারি : কৃষি আইনের বিরোধিতায় রাজধানী দিল্লিতে ট্রাক্টর মিছিলে নেমেছিল 41 টি কৃষক ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ‘সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা’ ৷ 26 জানুয়ারির সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল রাজধানীতে ৷ লালকেল্লার মত ঐতিহ্য়শালী দূর্গের দখল নিয়ে নেয় আন্দোলনকারীদের একাংশ ৷ একাধিক গাড়ি ও বাসে ভাঙচুর চালানো হয় ৷ তলোয়ার সহ একাধিক হাতিয়ার নিয়ে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় বহু আন্দোলনকারীকে ৷ কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল জাতীয় রাজধানীতে? পুলিশ নিজেদের হাতে থাকা সত্ত্বেও কেন ব্য়র্থ হল কেন্দ্র সরকার ? এমনকি মিছিলে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে জেনেও কেন সতর্ক হয়নি প্রশাসন? এমন একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷
সাধারণতন্ত্র দিবসে কৃষকদের মিছিলে বহিরাগতরা ঢুকে রাজধানীকে উত্তপ্ত করতে পারে এমন খবর আগে থেকেই ছিল দিল্লি পুলিশের কাছে ৷ গত 25 জানুয়ারি দিল্লি পুলিশের তরফে এ নিয়ে সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল ৷ সেখানে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-র মদতে খলিস্তানি জঙ্গিরা কৃষকদের মিছিলে ঢুকে পরিস্থিতিকে অগ্নিগর্ভ করার চেষ্টা করবে ৷ ভারতীয় ইন্টালিজেন্সের তরফেও জানানো হয়েছিল, তারা পাকিস্তানের প্রায় 300টি টুইটার অ্য়াকাউন্ট ফোলো করেছিল ৷ যে অ্যাকাউন্টগুলিতে চলা কথাবার্তায় গোয়েন্দাররা আন্দাজ করেছিল, 26 জানুয়ারির এই মিছিলে অশান্তি পাকানোর একটা চেষ্টা চলছে ৷ ইন্টালিজেন্সের এই সাবধানতা থাকা সত্ত্বেও কি, প্রয়োজনীয় ব্য়বস্থা নেয়নি দিল্লি প্রশাসন? সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে ৷ প্রসঙ্গত, গতকালের মিছিলে অস্ত্র হাতে অনেককে দেখা গিয়েছিল ৷ তারা পুলিশের দিকে তেড়েও যায় বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের মিছিল ঘিরে যদি এমন অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে ৷ তবে, অন্য় সময়ে রাজধানী কতটা নিরাপদ তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে ৷ এমনকি জঙ্গি অনুপ্রবেশের মত ঘটনাও যে ঘটবে না, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে? এমনই একাধিক প্রশ্ন 26 জানুয়ারির কৃষক মিছিলের ঘটনার পর উঠতে শুরু করেছে ৷ যার কোনও জবাব এই মুহূর্তে কেন্দ্র সরকারের কাছে নেই ৷
আরও পড়ুন : দিল্লিতে সংঘর্ষের ঘটনায় 22টি এফআইআর দায়ের
আর এখানেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র যোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ৷ তাদের অভিযোগ, গোয়েন্দা বিভাগের সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও কেন আগে থেকে উত্তেজনা প্রবণ এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হল না? এমনকি দিল্লি পুলিশ ট্রাক্টর মিছিলের অনুমতি দেওয়ার পর, কৃষকদের সেই মিছিলের পথ কেন সুনির্দিষ্ট করে দেয়নি? এমন একাধিক প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলি ৷ আজ এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ একাধিক রাজনীতিবিদ অমিত শাহের পদত্য়াগ দাবি করেছেন ৷