ETV Bharat / bharat

Hati Bondhu: হাতির রসনা তৃপ্তির অভিনব উপায়ে তাণ্ডব থেকে জনবসতিকে রক্ষা করছে অসমের এনজিও

Assam NGO Hati Bondhu: হাতির রসনা তৃপ্তির অভিনব উপায়ের মাধ্যমে এই বন্যের সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্ব মেটাচ্ছে অসমের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হাতি বন্ধু ৷

Hati Bondhu
হাতি বন্ধু
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 9, 2023, 6:52 PM IST

নগাঁও (অসম), 9 নভেম্বর: অসমের কেন্দ্রস্থল হাতির বাসস্থান হিসেবে সমৃদ্ধ ৷ তবে তার ফলে মানুষ ও হাতিদের মধ্যে একটি অবিরাম দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে ৷ বিশেষ করে ফসল কাটার সময় এবং বর্ষার সময়, হাতিরা ঘন ঘন মানুষের বসতি এবং ধানের ক্ষেতে খাবারের সন্ধানে চলে আসে ৷ বছরের পর বছর ধরে এই সংগ্রামের পুনরাবৃত্তির ফলে ফসল, ঘরবাড়ি এবং এমনকি মানুষের জীবনের নানা ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ৷ মানুষ এবং হাতির মধ্যে এই নিরলস সংগ্রামের অবসানে এ বার এক অভিনব ভাবনা নিয়ে হাজির হাতি বন্ধু ৷

এটি নগাঁওয়ের একটি বিশিষ্ট প্রকৃতিপ্রেমী সংস্থা ৷ মানব-হাতি সংঘর্ষের অধ্যায়কে কমিয়ে আনতে তারা একটি সৃজনশীল সমাধানের পথের হদিশ দিয়েছে ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি নেপিয়ার ঘাস এবং অন্যান্য বনজ ফল চাষ করছে ৷ হাতিদের পছন্দের সমতল ভূমিতে এই চাষ করা হচ্ছে ৷

গুয়াহাটির নিবেদিতপ্রাণ প্রকৃতিপ্রেমী প্রদীপ কুমার ভূঁইয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হাতি বন্ধুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিনোদ দুলু বোরা । এনজিওর সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় 130 একর জমিতে তৈরি নেপিয়ার ঘাসের সন্ধানে আসতে শুরু করেছে হাতির পাল ৷ এই সৃজনশীল পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে কৃষকদের ধান ক্ষেতে হাতির তাণ্ডবের ঘটনা কমেছে ৷ কমেছে ফসল এবং মূল্যবান জিনিসের ক্ষয়ক্ষতি । বিনোদ দুলু বোরা ইটিভি ভারতকে বলেন যে, এটি 2018 সালে তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে সেখানে প্রচুর চাষবাসবিহীন জমি রয়েছে, যা হাতিরা করিডোর হিসাবে ব্যবহার করত ।

তাঁর কথায়, "আমরা একই বছর জমিতে নেপিয়ার ঘাস, কাঁঠাল এবং হাতির আপেল রোপণ শুরু করি । আমরা এই ভূমিতে এই বন্য হাতির মধ্যে 200 টিকে তাদের খাদ্য সরবরাহ করতে সফল হয়েছি, যাতে তারা মানুষের বসতিতে অনুপ্রবেশ করে ধান নষ্ট করতে না পারে ।"

আরও পড়ুন: মান্ধাতার আমলের বন্দুক নিয়ে হাতির সঙ্গে লড়াই ! বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

তিনি আরও বলেন, তারা হাতিদের খাবার, জল এবং ভূমিতে সুরক্ষা সরবরাহ করেছেন, যা একসময় তাদের মানব বসতিতে প্রবেশের করিডোর ছিল । বোরার কথায়, "নেপিয়ার ঘাস খুবই পুষ্টিকর । গত 20 দিন ধরে, হাতিরা এখানে থেকেছে এবং মানুষের বসতির দিকে আর যায়নি । একবার তারা সমস্ত ঘাস খেয়ে ফেললে, আমরা তাদের 200 বিঘা ধানক্ষেতে প্রবেশ করতে দেব, যা আমরা নেপিয়ার ঘাসের মাঠের পাশে চাষ করেছি । আমরা নিশ্চিত করব, কৃষকরা তাদের ফসল কাটার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন এবং সেই সময়ে হাতিরা এখানে থাকবে । আমরা নিশ্চিত করেছি যাতে হাতিরা প্রায় এক মাস এই এলাকায় থাকে ৷"

হাতি বন্ধু মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রতিরোধে তাদের অটল অঙ্গীকারের জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশের থেকে প্রশংসা ও স্বীকৃতি পেয়েছে । গত কয়েকদিন ধরে, বোরার দল, তাঁর স্ত্রী মেঘনা ময়ূর হাজারিকার সহায়তায়, হাতির অন্যতম প্রিয় খাবার নেপিয়ার ঘাস চাষ করে পাহাড়ি অঞ্চলের উৎরাইতে বন্য হাতিদের আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছে । নগাঁও-কারবি আংলং সীমান্তে রোংহাং গ্রামের কাছে পাহাড়ে চাষ করা নেপিয়ার ঘাসের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বন্য হাতিরা খেয়ে ফেলেছে ।

বোরা এবং তাঁর স্ত্রী হাতিদের প্রতিটি গতিবিধির উপর নজর রাখছেন ৷ তাঁরা কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা নিশ্চিত করেছেন ৷ এইভাবে তাঁরা মানুষ এবং হাতির মধ্যে একটি সুনদর সহাবস্থান গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন ।

আরও পড়ুন: শুঁড়ে তুলে দুই গ্রামবাসীকে আছড়ে মারল হাতি, মৃতদের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য

নগাঁও (অসম), 9 নভেম্বর: অসমের কেন্দ্রস্থল হাতির বাসস্থান হিসেবে সমৃদ্ধ ৷ তবে তার ফলে মানুষ ও হাতিদের মধ্যে একটি অবিরাম দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে ৷ বিশেষ করে ফসল কাটার সময় এবং বর্ষার সময়, হাতিরা ঘন ঘন মানুষের বসতি এবং ধানের ক্ষেতে খাবারের সন্ধানে চলে আসে ৷ বছরের পর বছর ধরে এই সংগ্রামের পুনরাবৃত্তির ফলে ফসল, ঘরবাড়ি এবং এমনকি মানুষের জীবনের নানা ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ৷ মানুষ এবং হাতির মধ্যে এই নিরলস সংগ্রামের অবসানে এ বার এক অভিনব ভাবনা নিয়ে হাজির হাতি বন্ধু ৷

এটি নগাঁওয়ের একটি বিশিষ্ট প্রকৃতিপ্রেমী সংস্থা ৷ মানব-হাতি সংঘর্ষের অধ্যায়কে কমিয়ে আনতে তারা একটি সৃজনশীল সমাধানের পথের হদিশ দিয়েছে ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি নেপিয়ার ঘাস এবং অন্যান্য বনজ ফল চাষ করছে ৷ হাতিদের পছন্দের সমতল ভূমিতে এই চাষ করা হচ্ছে ৷

গুয়াহাটির নিবেদিতপ্রাণ প্রকৃতিপ্রেমী প্রদীপ কুমার ভূঁইয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হাতি বন্ধুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিনোদ দুলু বোরা । এনজিওর সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় 130 একর জমিতে তৈরি নেপিয়ার ঘাসের সন্ধানে আসতে শুরু করেছে হাতির পাল ৷ এই সৃজনশীল পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে কৃষকদের ধান ক্ষেতে হাতির তাণ্ডবের ঘটনা কমেছে ৷ কমেছে ফসল এবং মূল্যবান জিনিসের ক্ষয়ক্ষতি । বিনোদ দুলু বোরা ইটিভি ভারতকে বলেন যে, এটি 2018 সালে তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে সেখানে প্রচুর চাষবাসবিহীন জমি রয়েছে, যা হাতিরা করিডোর হিসাবে ব্যবহার করত ।

তাঁর কথায়, "আমরা একই বছর জমিতে নেপিয়ার ঘাস, কাঁঠাল এবং হাতির আপেল রোপণ শুরু করি । আমরা এই ভূমিতে এই বন্য হাতির মধ্যে 200 টিকে তাদের খাদ্য সরবরাহ করতে সফল হয়েছি, যাতে তারা মানুষের বসতিতে অনুপ্রবেশ করে ধান নষ্ট করতে না পারে ।"

আরও পড়ুন: মান্ধাতার আমলের বন্দুক নিয়ে হাতির সঙ্গে লড়াই ! বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

তিনি আরও বলেন, তারা হাতিদের খাবার, জল এবং ভূমিতে সুরক্ষা সরবরাহ করেছেন, যা একসময় তাদের মানব বসতিতে প্রবেশের করিডোর ছিল । বোরার কথায়, "নেপিয়ার ঘাস খুবই পুষ্টিকর । গত 20 দিন ধরে, হাতিরা এখানে থেকেছে এবং মানুষের বসতির দিকে আর যায়নি । একবার তারা সমস্ত ঘাস খেয়ে ফেললে, আমরা তাদের 200 বিঘা ধানক্ষেতে প্রবেশ করতে দেব, যা আমরা নেপিয়ার ঘাসের মাঠের পাশে চাষ করেছি । আমরা নিশ্চিত করব, কৃষকরা তাদের ফসল কাটার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন এবং সেই সময়ে হাতিরা এখানে থাকবে । আমরা নিশ্চিত করেছি যাতে হাতিরা প্রায় এক মাস এই এলাকায় থাকে ৷"

হাতি বন্ধু মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রতিরোধে তাদের অটল অঙ্গীকারের জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশের থেকে প্রশংসা ও স্বীকৃতি পেয়েছে । গত কয়েকদিন ধরে, বোরার দল, তাঁর স্ত্রী মেঘনা ময়ূর হাজারিকার সহায়তায়, হাতির অন্যতম প্রিয় খাবার নেপিয়ার ঘাস চাষ করে পাহাড়ি অঞ্চলের উৎরাইতে বন্য হাতিদের আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছে । নগাঁও-কারবি আংলং সীমান্তে রোংহাং গ্রামের কাছে পাহাড়ে চাষ করা নেপিয়ার ঘাসের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বন্য হাতিরা খেয়ে ফেলেছে ।

বোরা এবং তাঁর স্ত্রী হাতিদের প্রতিটি গতিবিধির উপর নজর রাখছেন ৷ তাঁরা কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা নিশ্চিত করেছেন ৷ এইভাবে তাঁরা মানুষ এবং হাতির মধ্যে একটি সুনদর সহাবস্থান গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন ।

আরও পড়ুন: শুঁড়ে তুলে দুই গ্রামবাসীকে আছড়ে মারল হাতি, মৃতদের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.