দারভাঙ্গা, 11 নভেম্বর: ধনতেরাস উপলক্ষে বিহারের দারভাঙ্গা এমন একটি ঘটনার সাক্ষী থাকল যা কেবল চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন সিরিয়ালেই দেখতে পাওয়া যায় ৷ মায়ের সমস্যা দেখে ছোট মেয়ে দোকানে গিয়ে মায়ের জন্য মিক্সার পছন্দ করেছিল ৷ যার দাম চার হাজার 100 টাকা। মেয়েটি তার কাছে জমানো সমস্ত টাকা দোকানদারের সামনে কার্যত উপুর করে দেয় ৷ যদিও তার কাছে জমানো টাকা ছিল মাত্র এক হাজার 800 ৷ কিন্তু দোকানদার মেয়েটির মিক্সারের গল্প শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি ৷ আর মেয়েটির পছন্দ করা মিক্সারটি তিনি দিয়ে দেন।
নগর থানা এলাকার মহারাজি সেতুর কাছে রাম চকের বাসিন্দা 11 বছরের লাডলি কুমারী তার মা'কে মশলা পিষতে দেখত। আশেপাশের সকলেই যখন মিক্সার ব্যবহার করেছে তার মায়ের অবস্থা দেখে মেয়েটি আর সামলাতে পারেনি নিজেকে। সে তার টাকা জমাতে শুরু করে ৷ এরপর মায়ের জন্য একটি মিক্সার কিনতে দোকানেও যায়। মেয়েটি তার মায়ের জন্য যে মিক্সারটি বেছে নিয়েছিল তার দাম ছিল পিগি ব্যাংকে রাখা টাকার চেয়েও অনেক বেশি। তবে দোকানদার মায়ের প্রতি লাডলির অটুট ভালবাসা দেখে দামের তোয়াক্কা না করে মেয়েটিকে মিক্সারটি দিয়ে দেন।
মেয়েটির যখন জিজ্ঞেস করা হয় কেন সে মিক্সার কিনল ? খেলার বয়সে সে কেন এটি কিনছে ? তার উত্তর শুনে সেখানে উপস্থিত সকলেই অবাক হয়ে যায় ৷ লাডলি খুব নিরীহভাবে বলে, "আমার মায়ের মিক্সার নেই। মা মশলা পিষতেন মর্টারে আর আমাদের বন্ধুর মা মিক্সারে মশলা পিষতেন। এটা দেখে আমাদের ভালো লাগত না, তাই বাবা যখনই টাকা দিতেন। আমি আমার পিগি ব্যাঙ্কে এক বা দুই টাকা সঞ্চয় করতাম। আমি ধনতেরাস উপলক্ষে আমার মাকে একটি মিক্সার উপহার দিতে চেয়েছিলাম। তাই আমি একটি মিক্সার কিনতে এক হাজার 800 টাকা নিয়ে এসেছি।"
অন্যদিকে দোকানদার বিবেক শর্মা জানান, একটি ছোট মেয়ে তার ছোট ভাইকে নিয়ে দোকানে এসেছিল। তিনি আরও জানান, তার মা একটি শিলবাটায় চাটনি বা মশলা পিষে রান্না করেন। তার হাতেও কিছু সমস্যা রয়েছে। দোকানদার বলেন, "মেয়েটি চার হাজার 100 টাকা মূল্যের মিক্সারটি পছন্দ করেছিল, কিন্তু মেয়েটির আবেগ এবং তার মায়ের প্রতি ভালবাসা দেখে আমি খুশি হয়েছিলাম ৷ অনুভব করেছি যে এটি কোনও ব্যবসার বিষয় নয়। ধনতেরাসের দিন আমার মনে হয়েছিল যেন মা লক্ষ্মীই আমার দোকানে এসেছেন। মেয়েটির আনা কয়েনগুলি দেখে আমার কোনও অংশেই তা সোনার কয়েনের কম মনে হয়নি ৷"
আরও পড়ুন: