নয়াদিল্লি, 17 ফেব্রুয়ারি: ‘আসল’ শিবসেনার কর্তৃত্ব পেয়ে গেলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (Maharashtra Shiv Sena) ৷ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের (ECI) তরফে শিবসেনা নাম এবং দলের প্রতীক তির ও ধনুক ব্যবহার করতে পারবেন শিন্ডে শিবির ৷ যার অর্থ বালাসাহেব ঠাকরের (Bal Thackeray) তৈরি দলের কর্তৃত্ব হারালেন তাঁর ছেলে উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) ৷ স্বাভাবিকভাবে এই নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে দেশের রাজনীতিতে ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে শিবসেনার (Shiv Sena) দখল কার কাছে থাকবে, এই নিয়ে বিবাদের শুরু হয় গত বছরের মাঝামাঝি ৷ সেই সময় মহারাষ্ট্রে মহা বিকাশ আঘাড়ি সরকার (MVA Government) ৷ কংগ্রেস (Congress) ও এনসিপির (NCP) সঙ্গে জোট করে সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ৷ আচমকাই বিদ্রোহ করে বসেন একনাথ শিন্ডে ৷ অনুগামীদের নিয়ে মহারাষ্ট্র ছাড়েন ৷ তার পর একাধিক রাজ্য ঘুরে আবার ফেরেন মুম্বইয়ে ৷
কিন্তু ততদিনে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যায় ৷ সরকার বাঁচাতে হুঁশিয়ারি-আবেদনের সব কৌশলই ব্যর্থ হয় উদ্ধবের ৷ তিনি আদালতেরও দ্বারস্থ হন ৷ কিন্তু সেখানেই হেরে গিয়ে অনাস্থা ভোটের আগের দিন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন উদ্ধব ঠাকরে ৷ তার পর দিন মহারাষ্ট্রে বিজেপি (BJP) ও শিবসেনার জোট সরকার তৈরি হয় ৷ সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন একনাথ শিন্ডে ৷ উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবীশ ৷
তার পর থেকে শিবসেনা দু’ভাগ হয়ে যায় ৷ একনাথ শিন্ডে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন শিবসেনার দখল নেওয়ার জন্য ৷ কমিশন সেই সময় বিবাদমান দু’পক্ষকে আলাদা করে দেয় ৷ শিবসেনা নাম ও প্রতীক বাজেয়াপ্ত করে ৷ শুক্রবার কমিশন এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাল ৷ সেই সিদ্ধান্তের জেরেই একনাথ শিন্ডে হলেন বালাসাহেবের তৈরি শিবসেনার নেতা ৷
কিন্তু কিসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন, সেই প্রশ্নই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি ৷ তবে এই সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে শিবসেনার বর্তমান সংবিধান অগণতান্ত্রিক । কোনও নির্বাচন ছাড়াই অগণতান্ত্রিকভাবে একটি গোষ্ঠীর লোকদের পদাধিকার বলে নিয়োগ করা হয়েছে । এ ধরনের দলীয় কাঠামো আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয় ।
কমিশন আরও জানিয়েছে, 2018 সালে শিবসেনার সংশোধিত সংবিধান কমিশনকে দেওয়া হয়নি । কমিশনের চাপে পড়ে 1999 সালে প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরে দলের সংগঠনে যে সংশোধনী এনেছিলেন, তা বাতিল করে দেওয়া হয় ৷ কমিশন পর্যবেক্ষণ করেছে যে শিবসেনার মূল সংবিধানের অগণতান্ত্রিক নিয়মগুলি, যা 1999 সালে কমিশন দ্বারা গৃহীত হয়নি, গোপন পদ্ধতিতে তা ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৷
একই সঙ্গে সমর্থনের বিষয়টি কমিশনের পক্ষে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ ওই বিষয়টি কমিশনের কাছে জমা দিয়েছিল শিন্ডে ও উদ্ধব দুই পক্ষই ৷ তার ভিত্তিতে কমিশন জানিয়েছে যে এই মুহূর্তে শিন্ডের পক্ষেই শিবসেনায় পাল্লা ভারী ৷
আরও পড়ুন: আসল শিবসেনা কারা, নির্বাচন কমিশনকেই সিদ্ধান্তের ভার সুপ্রিম কোর্টের