নয়া দিল্লি, 24 জুলাই : আজ বিশ্বে অন্যতম গুরত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক দেশ ভারত ৷ দেশের এই উত্তরণ একদিনে হয়নি ৷ এর পিছনে রয়েছে মনমোহন সিংয়ের বৈপ্লবিক বাজেট ৷ সেই বাজেট পেশের 30তম বর্ষ উদযাপন আজ ৷ 1991 সাল, দেশের প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাও ৷ অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং (Dr Manmohan Singh ) ৷ দেশে চলছে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ৷ আজকের দিনে অর্থমন্ত্রীর বাজেট দেশের অর্থনীতিকে স্বাধীন করেছিল ৷ বাজেটে সূচনা হয় ‘মুক্ত অর্থনীতি’র (Economic Liberalisation Process) ৷
আরও পড়ুন : কোভিড টিকা নিয়ে রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না, বিরোধীদের অনুরোধ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আজ সেই বিশেষ দিনটির কথা মনে করে মনমোহন সিং বলেন, "1991 সালে দেশের চরম অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে এই মুক্ত অর্থনীতি (Economic Liberalisation Process) চালু হয়েছিল ৷ কিন্তু সেটা শুধুমাত্র সংকটের মোকাবিলায় সীমাবদ্ধ ছিল না ৷ দেশের অর্থনৈতিক সংশোধনের বিশাল রূপায়ণ তৈরি হয়েছিল আমাদের নিজেদের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে অর্থনীতিকে মুক্ত করে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য ৷" আজ কোভিড-19 পরিস্থিতিতে দেশের এই অর্থনৈতিক মন্দায় তিনি শোকগ্রস্ত ৷ বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, চাকরি গিয়েছে অনেকের ৷ আজ দেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সামাজিক ক্ষেত্রগুলি পিছিয়ে পড়েছে ৷ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সেই গতি ধরে রাখতে পারেনি দেশ ৷ "বহু জীবন আর জীবিকা হারিয়ে গিয়েছে, যা হওয়া উচিত ছিল না", আক্ষেপ মনমোহনের ৷
অর্থনীতির উদারীকরণের বিশেষ দিন হলেও, আজ দিনটা আনন্দের নয় ৷ বরং পরিস্থিতি খুঁটিয়ে দেখে গভীর ভাবে চিন্তা করার সময় এটা, জানিয়েছেন সেদিনের অর্থমন্ত্রী ৷ তবে "1991-এর চেয়েও বেশি সংকটের সমাধান করতে হবে ৷ এখন নতুন করে বিচার-বিবেচনাকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার ৷ প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য একটা সুস্থ ও সম্মানের জীবন নিশ্চিত করা অবশ্য প্রয়োজন", বললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ৷
সে দিনের বাজেটে লাল ফিতের ফাঁস আলগা করে নতুন শিল্পনীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল ৷ একুশ শতকের বেসরকারিকরণের যুগ শুরু হয়েছিল, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের (Foreign Direst Investment) সীমা বৃদ্ধি করে ৷ আর সেই পথ অনুসরণ করে পরবর্তী তিন দশকে ভারতের অর্থনীতি পৌঁছেছে 3 লক্ষ কোটি ডলারে ৷ এর উল্লেখ করে তিনি বলেন, "সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটা যে, এই সময়ের মধ্যে প্রায় 30 কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা হয়েছে ৷ আমাদের তরুণদের জন্য লক্ষ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : দিল্লি সফরের আগেই সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় কমিটির চেয়ারপার্সন মমতা
ভারতের দু'বার প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী 1991-এর বাজেটের শেষে ভিক্টর হুগোর একটি উক্তি উল্লেখ করে বলেছিলেন, "যার সময় হয়েছে তার কোনও আইডিয়াকে পৃথিবীর কোনও শক্তি রুখতে পারবে না ৷" আর আজ 30 বছর পরে দেশবাসীকে রবার্ট ফ্রস্টের একটি কবিতার কথা মনে করালেন তিনি, " কিন্তু আমায় কথা রাখতে হবে আর ঘুমোতে যাওয়ার আগে আরও বহু দূর যেতে হবে ৷"