শ্রীনগর, 22 মার্চ: রাখে হরি মারে কে ! অনন্তনাগ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে তখন সিজার চলছে ৷ হঠাৎ অনুভূত ভূ-কম্পন ৷ ধীরে ধীরে দুলছে সবকিছু ৷ হঠাৎ নিভে গেল আলো ৷ চিকিৎসকরা তখন সমস্বরে ভগবানকে ডাকছেন ৷ কয়েকমুহূর্ত পরেই কম্পন থেমে গেল ৷ জ্বলল আলোও ৷ আর তারপর ফের কাজ শুরু করলেন চিকিৎসকরা ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই কান্নার আওয়াজ ৷ চিকিৎসকদের মুখে স্বস্তির ছাপ ৷ ভূমিষ্ঠ হল সদ্যোজাত (Baby Delivered in the Time of Earthquake)৷
মঙ্গলবার রাতে ভূমিকম্প আতঙ্কে যখন রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন বহু মানুষ ঠিক তখনই পৃথিবীর আলো দেখল এক সদ্যোজাত ৷ জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ হাসপাতালে এক শিশুর জন্ম হল ভূমিকম্প চলাকালীন ৷ কম্পনের সময়ই চিকিৎসকরা সিজারের মাধ্যমে শিশুটিকে মায়ের গর্ভ থেকে বের করে আনেন (Birth in Earthquake)৷
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, "অনন্তনাগের সাব ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালে যখন এই সিজার চলছিল তখন শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয় ৷ এই হাসপাতালের বিজবেহারার কর্মীদের অনেক ধন্যবাদ যারা এই সিজারিয়ান সেকশনটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছেন ৷ এর জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে সবকিছু ঠিক আছে ৷"
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত 10টা 20মিনিট নাগাদ শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ ৷ রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল 6.8 ৷ যার উৎসস্থল ছিল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বতমালা সংলগ্ন অংশে ৷ এদিন 40 থেকে 45 সেকেন্ড ধরে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় ৷ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায় ৷ বহু মানুষ বাড়ি-ঘর ও কর্মক্ষেত্র ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন ৷ যদিও এই কম্পনে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি ৷
তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পেও দেখা গিয়েছে এরকমই অদ্ভুত ঘটনা ৷ ভূমিকম্পের 48 ঘণ্টা পর শুধু লাশের পর লাশ উদ্ধারের মাঝে উদ্ধারকারীরা শুনতে পান নবজাতকের কান্নার আওয়াজ ৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দেখা যায় মায়ের নাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সদ্যোজাত ৷ মায়ের মৃত্যু হয়েছে আগেই ৷ কিন্তু তার নাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে তখনও বেঁচে রয়েছে একরত্তি ৷ উদ্ধারের পর এখন দিব্য আছে সে ।
আরও পড়ুন : ধ্বংসস্তূপে মৃত মায়ের নাড়িতে আটকে সদ্যোজাত, ভূমিকম্পে মৃত প্রায় 8 হাজার