নয়াদিল্লি, 25 ডিসেম্বর: ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকের অন্য শরিকদের সঙ্গে কীভাবে আসন সমঝোতা হবে, সেই নিয়ে আগে দলের অন্দরে আলোচনা করতে চায় কংগ্রেস ৷ তাই আগামী 30 ও 31 ডিসেম্বর এই ইস্য়ুতে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছে রাহুল গান্ধির দল ৷ সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ৷
তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করবেন কংগ্রেসের পাঁচ সদস্য়ের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স কমিটি ৷ ওই কমিটিতে রয়েছেন সদ্য প্রাক্তন হওয়া দুই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত (রাজস্থান) ও ভূপেশ বাঘেল (ছত্তিশগড়) ৷ কমিটির বাকি তিনজন হলেন সলমন খুরশিদ, মুকুল ওয়াসনিক ও মোহন প্রকাশ৷ বৈঠকে কংগ্রেসের সব প্রদেশ সভাপতি ও বিভিন্ন রাজ্যে পরিষদীয় দলের নেতাদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে ৷ সেখানে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে যেমন আলোচনা হবে, পাশাপাশি কথা হবে 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েও ৷
সারা দেশের মধ্যে 11টি রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেসের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ৷ এই রাজ্যগুলি হল - উত্তরপ্রদেশ (80 আসন), বিহার (40), মহারাষ্ট্র (48), ঝাড়খণ্ড (14), পঞ্জাব (13), দিল্লি (7), গুজরাত (26), অসম (14), জম্মু ও কাশ্মীর (6), তামিলনাড়ু (39) ও পশ্চিমবঙ্গ (42) ৷ সূত্রের খবর, কংগ্রেসের এই জোট-প্যানেল সারা দেশে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতার রূপরেখা তৈরি করবে ৷ তার পর তা শীর্ষ নেতৃত্বকে দেওয়া হবে ৷ জানুয়ারিতে ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকের বৈঠকে সেই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে ৷
কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে 2024 সালের নির্বাচনের জন্য এআইসিসি (অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি)-কে পুনর্গঠন করেছেন ৷ তাছাড়া গত 21 ডিসেম্বর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিও ‘ইন্ডিয়া’ ব্লককে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ এর কয়েকদিন পরেই এই পদক্ষেপ করা হল ।
উত্তরপ্রদেশে এআইসিসি-র ইনচার্জ অবিনাশ পাণ্ডে ইটিভি ভারত-কে বলেন, "কংগ্রেস তার জোটের শরিকদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ । জোটের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই এবং আসন ভাগাভাগি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল । অবশ্যই, বিষয়গুলি নিয়ে এখন থেকে আরও পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে । জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে ।"
তাঁর দাবি, সমাজবাদী পার্টি ও আরএলডি জোটের সঙ্গেই আছে৷ বহুজন সমাজ পার্টিও জোটের অংশীদার হতে আগ্রহী ৷ তিনি বলেন, "আমি আশা করি উত্তরপ্রদেশের সমস্ত দল বিজেপির বিভাজনমূলক অ্যাজেন্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্রিত হবে । 2024 সালের লড়াই হল সংবিধান রক্ষা করা এবং দেশে গণতন্ত্র রক্ষা করার লড়াই । বিরোধী জোট বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো জনসাধারণের সমস্যাগুলিতে ফোকাস করতে চলেছে, যা বিজেপি আলোচনা করতে চায় না ।’’
অবিনাশ পাণ্ডে এর আগে ঝাড়খণ্ডে এআইসিসি-র তরফে কংগ্রেসের দায়িত্বে ছিলেন ৷ সেখানে এখন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও আরজেডি-র সঙ্গে সরকারে রয়েছে কংগ্রেস ৷ সেই ঝাড়খণ্ডের প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ৷ সেখানে আবার কংগ্রেস আরজেডি ও নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর সঙ্গে জোটে রয়েছে ৷ সেখানে এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা অজয় কাপুর জানান, জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেস, বাম জোট বিহার শাসন করছে, তাই সেখানেও আসন ভাগাভাগি মসৃণ হবে ।
মল্লিকার্জুন খাড়গে সম্প্রতি কংগ্রেসের জোট-প্যানেলের সদস্য মোহন প্রকাশকেও বিহারের দায়িত্বে নিযুক্ত করেছেন ৷ কারণ, তিনি লো প্রোফাইল বজায় রাখতে পছন্দ করেন ৷ তাই কোনও ঝামেলা ছাড়াই নীতিশ কুমার ও লালু প্রসাদের মতো জোটের অংশীদারদের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনায় সক্ষম হবেন বলে মনে করা হচ্ছে ৷
মহারাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি সেক্রেটারি আশিস দুয়া জানান, ওই রাজ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না ৷ কারণ শিবসেনা (ইউবিটি), এনসিপি, কংগ্রেস জোট 2019 থেকে 2022 সাল পর্যন্ত রাজ্যে শাসন করেছিল ৷ সেখানে শিবসেনা ও এনসিপি-র মধ্যে ভাঙন ধরলেও ভোটাররা উদ্ধব ঠাকরে ও শরদ পাওয়ারের সঙ্গেই রয়েছেন বলে তাঁর দাবি ৷
আরও পড়ুন: