নয়াদিল্লি, 22 এপ্রিল: সাংসদ হিসেবে পাওয়া সরকারি বাংলো ছেড়ে দিলেন রাহুল গান্ধি ৷ সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর লোকসভার হাউজিং কমিটি তাঁকে সরকারি বাসভবন ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল ৷ সেই চিঠি মোতাবেক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তিনি নয়াদিল্লির 24 আকবর লেনের ওই বাংলো খালি করে দিলেন ৷ আর তার সঙ্গে আরও একবার তিনি এই ইস্য়ুতে নিশানা করলেন বিজেপিকে ৷ কংগ্রেসের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ সভাপতির দাবি, তিনি সত্যি কথা বলেছিলেন ৷ তাই তাঁকে সেই সত্যি বলার খেসারত দিতে হল ৷ তবে এর জন্য তিনি যেকোনও মূল্য দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন রাহুল ৷
উত্তরপ্রদেশের আমেঠি লোকসভা আসন থেকে 2004 সালে প্রথমবার সাংসদ হন রাহুল গান্ধি ৷ তার পরই লোকসভার হাউজিং কমিটির তরফে তাঁর জন্য 24 আকবর লেনের ওই বাংলো বরাদ্দ করা হয় ৷ তার পর থেকে তিনি সেখানেই থাকতেন ৷ কিন্তু সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে সেই বাংলো ছাড়তে হল ৷ 19 বছর পর আজ, শনিবার তিনি বাংলোর চাবি সরকারি আধিকারিকদের হাতে তুলে দিয়ে এলেন ৷
যদিও এরই মধ্যে তাঁর সংসদীয় এলাকা পরিবর্তন হয়েছে ৷ 2019 সালে তিনি আমেঠির সঙ্গে কেরালার ওয়েনাড় লোকসভা আসন থেকে লড়েছিলেন ৷ আমেঠিতে হেরে গেলেও ওয়েনাড়ে তিনি জিতে যান ৷ ফলে সাংসদ পদ বহাল থাকে রাহুলের ৷ তাই চার বছর আগে বাংলোও ছাড়তে হয়নি তাঁকে ৷ কিন্তু ওই 2019 সালের নির্বাচনের সময় মোদি পদবি নিয়ে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে শনিবার ওই বাংলো ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হল তাঁকে ৷ বেরিয়ে আসার সময় তাই দেশের মানুষকে ধন্যবাদ দিয়েছেন রাহুল গান্ধি ৷ জানিয়েছেন, গত 19 বছর এই বাড়িতে থাকতে পারার জন্য তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদ দিতে চান ৷
প্রসঙ্গত, 2019 সালের ওই মন্তব্য নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা দায়ের হয় ৷ গত মার্চে সেই মামলায় তাঁকে দু’বছরের কারাদণ্ড দেয় গুজরাতের সুরাতের আদালত ৷ দু’বছরের সাজা হওয়ায় রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল হয় ৷ সেই কারণে তাঁকে বাংলো ছাড়তে বলা হয় ৷ সেই মতো গত কয়েকদিনে তিনি জিনিসপত্র সরাতে শুরু করেছিলেন ৷ শনিবার অবশেষে সেই বাংলো ছেড়ে বেরিয়ে এলেন তিনি ৷ এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা, মা সোনিয়া গান্ধি ও গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা ৷ রাহুল জানিয়েছেন, এবার থেকে তিনি মায়ের সঙ্গে 10 জনপথেই থাকবেন ৷
এদিকে রাহুল গান্ধি তাঁর সাজার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুরাতের সেশন কোর্টে আবেদন করেছিলেন ৷ কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে ৷ সুপ্রিম কোর্টেও কংগ্রেস রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের বিরোধিতা করে আবেদন করে ৷ সেই আবেদনও শীর্ষ আদালত খারিজ করে দিয়েছে ৷ ফলে আদৌ রাহুল সাংসদ পদ ফিরে পাবেন কি না, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে ৷ সেটা ফিরে পেলেও তিনি এই বাংলো বা অন্যকোনও সরকারি বাসভবনে ফিরবেন কি না, সেই নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা ৷
আরও পড়ুন: বিজেপির বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বাতিলের চক্রান্ত করার অভিযোগ কংগ্রেসের শিবকুমারের