নয়াদিল্লি, 13 অক্টোবর: জল নিয়ে বিরোধের অন্তহীন গল্পে এ বার কাবেরী ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (সিডব্লিউএমএ) আবারও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য একটি নির্দেশ জারি করল ৷ তারা 16 অক্টোবর থেকে 31 অক্টোবর পর্যন্ত 15 দিনের জন্য তামিলনাড়ুতে প্রতি সেকেন্ডে 3,000 ঘনফুট (কিউসেক) জল ছেড়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে । নয়াদিল্লিতে সিডব্লিউএমএ-এর সদর দফতরে একটি সাম্প্রতিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘস্থায়ী কাবেরী নদীর জল বরাদ্দ নিয়ে কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়েছে ৷
কয়েক দিন আগে কাবেরী ম্যানেজমেন্ট কমিটি (সিএমসিএ) দ্বারা জারি করা একই রকমের আদেশে কর্ণাটককে তামিলনাড়ুতে 3,000 কিউসেক জল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা দুটি দক্ষিণের রাজ্যের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত করে । এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ু উভয় রাজ্যই কৃষক এবং কর্মীদের প্রতিবাদের সাক্ষী হয়, যাঁরা কাবেরী নদীর জলের ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন । ক্ষতিগ্রস্ত স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষ বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে ।
সিডব্লিউএমএ-এর বৈঠকের আগে তামিলনাড়ুর জলসম্পদ মন্ত্রী দুরাই মুরুগান কাবেরী নদী থেকে 16,000 কিউসেক জল ছাড়ার দাবিতে রাজ্যের ইচ্ছের কথা ঘোষণা করেছিলেন । তাঁর এই দাবি জল বিরোধের দ্বন্দ্ব আরও তীব্র করে, কাবেরী ওয়াটার রেগুলেটরি কমিটি (সিডব্লিউআরসি) 3,000 কিউসেক জল ছাড়ার পূর্ববর্তী সুপারিশ সত্ত্বেও তামিলনাড়ু তার অনুরোধে অটল থাকে ।
কাবেরী নদীর জলবণ্টন নিয়ে কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্যে আলোচনায় অচলাবস্থা এখনও অব্যাহত রয়েছে । আজ কাবেরী ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সভা আহ্বান করছে, তবে দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা বিশ বাঁও জলে বলেই মনে করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: কাবেরী জল বন্টন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বনধের ডাক কর্ণাটকে
তামিলনাড়ু তার দাবিতে অটল রয়েছে, যার তীব্র বিরোধিতা করেছে কর্ণাটক । সিডব্লিউআরসি-এর সাম্প্রতিক সুপারিশগুলি দুই রাজ্যের মধ্যে ব্যবধান খুব একটা কমাতে পারেনি বলেও মনে করা হচ্ছে । এ দিকে, তামিলনাড়ু অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত 16,000 কিউসেক জল পাওয়ার জন্য জোর দিচ্ছে, যা পরিস্থিতির জটিলতা বাড়িয়ে দিয়েছে ।
অচলাবস্থা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের সম্ভাবনা অধরাই থেকে যায় এবং কাবেরী নদীর জল বরাদ্দ নিয়ে স্থবিরতা কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ু উভয়ের জন্যই গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । এই জট কাটার কোনও সম্ভাবনা দেখা না যাওয়ায় পরিস্থিতি পুরোপুরি অনিশ্চিত । তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আপাতত সমস্যা মিটে যেতে পারে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের ।