অযোধ্যা, 4 অগাস্ট : যাবতীয় অপেক্ষার অবসান হবে বুধবার ৷ 5 অগাস্ট হবে অযোধ্যার রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অংশগ্রহণ করবেন "ভূমি পূজন" অনুষ্ঠানে ৷ বৈদিক নিয়ম অনুযায়ী "ভূমি পূজা" হওয়ার কথা রয়েছে "অভিজাত মুহূর্ত" সকাল 11 টা থেকে 1.30-এর মধ্যে ৷ পুজোয় ব্যবহৃত হবে একটি তাম্রপাত্র ৷ যার উপর সংস্কৃতে লিখিত রাম মন্দির সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ৷ পৃথিবীর বৃহত্তম হিন্দু মন্দিরটি নির্মাণে আনুমানিক 3 বছর 5 মাস সময় লাগবে ৷
রাম মন্দিরের স্থাপত্য
15 ফুট গভীর ভিত ৷ যার 8 টি লেয়ার ৷ প্রতি লেয়ারের প্রস্থ 2 ফুট ৷ মন্দিরের উচ্চতা আগে ঠিক হয়েছিল 141 ফুট হবে ৷ পরের প্রস্তাবে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 161 ফুট ৷ তৈরি হবে 5 টি গম্বুজ ৷ মন্দিরটি চওড়া হচ্ছে 140 ফুট ৷ মন্দির চত্বর 69 একর জায়গা জুড়ে ছড়ানো ৷ বিশালাকার তিনতলা মন্দিরটির ভার বহন করবে 318 টি পিলার ৷ প্রতি তলায় রয়েছে 106 টি পিলার ৷ প্রথমে দ্বিতল মন্দিরের ভাবনা থাকলেও পরে তিনতলা মন্দিরের পরিকল্পনায় সিলমোহর পড়ে ৷
হিন্দু পুরাণ কাহিনির চিত্রপটে সাজানো হচ্ছে পিলারগুলিকে ৷ সন্তদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাম মন্দিরে অধিষ্ঠান করবেন হনুমান ও শ্রীকৃষ্ণও ৷ থাকছে প্রার্থনাস্থল ও বসবার জায়গা ৷ ভক্তরা যাতে মন্দির "পরিক্রমা" করতে পারে সেভাবে জায়গা রাখা হচ্ছে ৷ প্রবেশ দ্বার পাঁচটি ৷ যেগুলি হল সিংহ দুয়ার, নৃত্য মণ্ডপ, পূজা ঘর এবং গর্ভগৃহ ৷ রাম লালা অধিষ্ঠিত হবেন প্রথম তলে ৷ যার 2 হাজার ফুট নিচে রাখা থাকবে "টাইম ক্যাপসুল" ৷ যার ভেতরে সঞ্চিত থাকবে রাম মন্দিরে ইতিহাস ৷ ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্যে ৷
মন্দির নির্মাণে ব্যবহৃত ইট, মাটি, বালি
80 কেজি ওজনের রুপোর ইট আনা হচ্ছে গয়াধাম থেকে ৷ ব্যবহার করা হবে ফল্গু নদীর বালি ৷ "ভূমি পূজা" অনুষ্ঠানটি হবে পাঁচটি রুপোর ইটের উপরে ৷ হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী পাঁচটি ইটের অর্থ পঞ্চগ্রহ ৷ এছাড়াও ভূমি পুজোর জন্য অযোধ্যায় আনা হয়েছে গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর সঙ্গমস্থলের মাটি ও জল, 11 তীর্থের পবিত্র মাটি (যার মধ্যে রয়েছে রাজধানী দিল্লির মন্দির ও গুরুদোয়ারাও) ৷
57 একরের রাম মন্দির কমপ্লেক্স
মূল মন্দির নির্মিত হবে 10 একর জমিতে ৷ বাকি 57 একর রাম মন্দির কমপ্লেক্স ৷ 27 নক্ষত্র বৃক্ষ (নক্ষত্র বটিকা) রোপণ করা হবে কমপ্লেক্স চত্বরে ৷ যার ছায়াতলে বসে ধ্যান করতে পারবেন ভক্তরা ৷
উল্লেখ্য, কণামাত্র লোহাও ব্যবহার করা হবে না রাম মন্দির নির্মাণে ৷ বাল্মিকীর রামায়ণে যে সব গাছের উল্লেখ আছে, সেই সমস্ত গাছ রোপণ করা হচ্ছে মন্দির কমপ্লেক্সে ৷ তৈরি করা হবে "রামকথা কুঞ্জ পার্ক" ৷ যা আসলে রামের জীবন ও কর্ম বিষয়ক প্রদর্শনশালা ৷ তৈরি করা হচ্ছে রাম মিউজ়িয়ামও ৷ এইসঙ্গে আরও কিছু মন্দির যেমন, গোশালা, ধর্মশালা ইত্যাদি ৷
রাম মন্দিরের স্থপতিরা
রাম মন্দির নির্মাণ প্রকল্পের মূল স্থপতি বিশিষ্ট স্থাপত্যবিদ চন্দ্রকান্ত সোমপুর ৷ চন্দ্রকান্তের দুই ছেলে প্রখ্যাত স্থপতি নিখিল সোমপুরা ও আশিস সোমপুরা পরিবর্তিত নকশাটি তৈরি করেছেন ৷
মূল মন্দির নির্মাণে অনুমানিক খরচ হবে 300 কোটি টাকা ৷ 20 একরের মন্দির চত্বরের যাবতীয় নির্মাণে কাজে খরচ হতে পারে আরও 1 হাজার কোটি টাকা ৷
গত বছরের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় ৷ অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণে অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমির বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকার অযোধ্যার বিতর্কিত 2.77 একর জমি তুলে দেয় মন্দির ট্রাস্টের হাতে ৷