পালাক্কড়(কেরালা), 4 জুন : গর্ভবতী হাতির খুনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ এই আশ্বাস দিলেন কেরালার বনমন্ত্রী কে রাজু৷ তবে ঘটনাটি কেরালার মালপ্পুরমে নয়, পালাক্কড়ে ঘটেছে বলে জানিয়ে দেন তিনি৷
এদিকে প্রাণীর বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার এই ঘটনাটিকে কেরালা সরকার গুরুত্ব সহকারে নেয়নি বলে অভিযোগ তোলেন BJP সাংসদ ও পশু অধিকার কর্মী মানেকা গান্ধি৷ শুধু তাই নয়, তিনি এও অভিযোগ করেন, প্রাণীদের উপর অপরাধমূলক কাজকর্মের জন্য পরিচিত মালপ্পুরম৷ মেনকা গান্ধির অভিযোগ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি কেরালার বনমন্ত্রী৷ এই পরিস্থিতিতে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না বলে জানিয়ে দেন৷ এদিকে ঘটনাটিকে হত্যা বলেছেন মেনকা গান্ধি৷ পাশাপাশি মালপ্পুরমকে তিনি দেশের সবথেকে হিংস্র জেলা বলেন৷
কেরালার পালাক্কড়৷ খাবার না পেয়ে লোকালয়ে চলে এসেছিল একটি গর্ভবতী হাতি । খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল গ্রামে গ্রামে । ক্ষুধার্ত হাতিটিকে দেখে কেউ তো খেতে দেয়নি উলটে মারার ফন্দি আঁটে । হাতিটি কিন্তু কারও ক্ষতি করেনি । চাষের জমিতে দাপিয়েও বেড়ায়নি । ভাঙেনি কোনও বাড়ি । নিজের মতো খাবার খুঁজছিল সে ।
কিন্তু লোকালয়ে ঢুকে পড়াই কাল হয় তার । গ্রামবাসীরা একটি আনারসে বারুদ ভরে রেখে দেয় । হাতিটি মানুষকে বিশ্বাস করে সেটিকে খাবার ভেবে খেয়ে ফেলে । ব্যাস, সব শেষ । আনারসটি গলায় পৌঁছাতেই ফাটতে থাকে । তীব্র জ্বালায় ছটফট করতে থাকে সে । একজন মা হিসেবে তখনও সন্তানকে বাঁচানোর চেষ্টায় ভেল্লিয়ার নদীতে নেমে পড়ে । অর্ধেক জলে ডুবে শরীরের জ্বালা মেটানোর চেষ্টা করে । কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি । বারুদের তীব্রতায় পুড়ে যায় শরীরের ভিতরটা । প্রায় চার ঘণ্টা জলে দাঁড়িয়ে শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা করার পর শেষমেশ মৃত্যু হয় হাতিটির । বনকর্মীরা এলেও বাঁচাতে পারেনি তাকে । বিষয়টি ভাইরাল হতেই ধিক্কার জানানো শুরু হয় সোশাল মিডিয়ায় ।
পুরো বিষয়টি কেরালার বন দপ্তরের এক কর্মী নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান । তিনিই এই শিউরে ওঠার মতো ঘটনা বিশ্লেষণ করেন । বলেন, "হাতিটি গ্রামের কাউকে বিরক্ত করেনি । একটি বাড়িও ভাঙেনি । কারও কোনও ক্ষতিই করেনি ।" মোহন কৃষ্ণান নামে ওই ব্যক্তি আরও জানান, ওই হাতিকে তুলতে আরও দুটি হাতি আনা হয়েছিল । কিন্তু শত চেষ্টা করেও তারা ওই হাতিটিকে তুলতে পারেনি । জলে দাঁড়িয়েই মৃত্যু হয় তার । মানুষের অত্যাচারে আবারও চলে গেল একটি নিরীহ পশুর প্রাণ ।