সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশন চলাকালীন জ়িরো আওয়ার সংকোচিত করা হয়েছে ৷ এছাড়া কোনও কোয়েশ্চন আওয়ার এবং কোনও প্রাইভেট মেম্বারদের বিল থাকবে না ৷ কোরোনা পরিস্থিতিতে লোকসভা এবং রাজ্যসভা সচিবালয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
আনস্টারড প্রশ্নগুলির জন্য সরকার সম্মতি দিয়েছে : আসন্ন অধিবেশনটির জন্য সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্ব বন্ধ রাখার বিষয়ে বিস্তর আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আনস্টারড প্রশ্ন রাখা যাবে অধিবেশনে ৷ অর্থাৎ, লিখিতভাবে করা প্রশ্নের লিখিত প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে ৷
কোয়েশ্চেন আওয়ার : সংসদের প্রতিটি অধিবেশনের শুরুতে প্রথম ঘণ্টাটি নির্ধারিত রাখা হয় প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য ।
প্রশ্নের ধরন
স্টারড কোয়েশ্চেনস - একটি স্টারড কোয়েশ্চেন বলতে বোঝায়, যে প্রশ্নের উত্তর মধ্যে একজন মন্ত্রীর থেকে মৌখিকভাবে চাওয়া হয় । সাংসদদের সাপ্লিমেন্টারি প্রশ্নও থাকতে পারে এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তরে ।
আনস্টারড কোয়েশ্চেনস - আনস্টারড কোয়েশ্চেন হল এমন প্রশ্ন যেগুলির লিখিত আকারে জবাব দেওয়া হয় । প্রশ্নগুলি লিখিতভাবে সংসদভবনে পেশ করা হয় । যেহেতু এইধরনের প্রশ্নের মৌখিক জবাব দেওয়া যায় না, তাই এই প্রশ্নের ক্ষেত্রে কোনও সাপ্লিমেন্টারি প্রশ্ন করা যায় না ।
শর্ট নোটিস কোয়েশ্চেনস - কোনও সাংসদ জনস্বার্থে বা জরুরি কোনও প্রশ্নের নোটিস দিতে পারেন । এই ধরনের নোটিসের উত্তর সাধারণত মৌখিকভাবে দশ দিনের মধ্যে দেওয়া হয় । এই জাতীয় প্রশ্নকে ‘শর্ট নোটিস প্রশ্ন’ বলে ।
কোয়েশ্চেনস টু প্রাইভেট মেম্বারস - লোকসভায় কার্যপ্রণালি ও আচারণবিধির 40 নম্বর বিধি অনুযায়ী, সংসদের প্রাইভেট সদস্যদেরও প্রশ্ন করা যায় । সেক্ষেত্রে প্রশ্নটি কোনও বিল বা রেসোলিউশন বা সংসদীয় কোনও কার্যপ্রণালি সংক্রান্ত হতে হবে ।
কোয়েশ্চেন আওয়ারের গুরুত্ব
- সাধারণত, লোকসভার একটি অধিবেশনের প্রথম ঘণ্টা প্রশ্নের জন্য রাখা হয় । এই ঘণ্টাটিকে কোয়েশ্চেন আওয়ার বলা হয় । সংসদের কার্যক্রমে এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ।
- প্রশ্ন করাটা সাংসদদের একটি অন্তর্নিহিত সংসদীয় অধিকার । প্রশ্নোত্তরের সময় সাংসদরা প্রশাসনিক এবং সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রতিটি বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন ।
- সাংসদরা প্রশ্নোত্তরের সময় প্রাসঙ্গিক তথ্য সন্ধান করার চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সরকারি নীতিগুলির উপর আলোকপাত করেন ।
- প্রশ্নোত্তর চলাকালীন সরকারকে তার বিভিন্ন কাজের খতিয়ান প্রমাণ করতে হয় । প্রশ্ন অনুযায়ী প্রত্যেক মন্ত্রীকেই পালা করে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্ত্রকের প্রশাসনিক কাজের জবাব দিতে হয় ।
- কোয়েশ্চেন আওয়ারের মাধ্যমে সরকার জনগণের চাহিদা কী, তা অনুভব করতে পারে এবং সেই অনুসারে সরকারের নীতি নির্ধারণ করা হয় । সংসদের এই প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমেই প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না তা বুঝতে পারে সরকার ।
- প্রশ্নগুলির মাধ্যমে মন্ত্রকগুলি বুঝতে পারে তাদের নীতি এবং প্রশাসনিক কাজ নিয়ে জনগণের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে ।
- প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে বিভিন্ন খামতি মন্ত্রীদের নজরে আসে, যা আগে নজর এড়িয়ে গেছিল ।
- কখনও কখনও জনসাধারণের স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন অনেক প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে একটি কমিশন, একটি তদন্তকারী কমিটিও গঠন হতে পারে ।
- সংসদীয় কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কোয়েশ্চেন আওয়ার । প্রশ্নগুলির মাধ্যমে প্রধানত কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তথ্য উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয় । সাংসদ ও মন্ত্রীরা তাঁদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে এই কার্যপ্রণালিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন ।
- কখনও কখনও প্রশ্নোত্তর পর্বে কৌতুক ও রসিকতার মিশেলও তৈরি হয় ।
- আর এই কারণেই কোয়েশ্চেন আওয়ারের সময় পাবলিক গ্যালারি ও প্রেস গ্যালারিতে ভিড় হয়ে থাকে ।