কার্গিল যুদ্ধ জয়ে বোফর্স কামানের ভূমিকা
- কার্গিলের উচ্চতায় পাকিস্তানকে হারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে কামান ৷
- LOC-র উভয় পক্ষে শত্রুপক্ষের লক্ষ্যবস্তু নিযুক্ত ছিল ৷ আর্টিলারি গান, ছোটো কামান, মর্টার্স ও একটি রকেট ব্যাটারি-সহ প্রায় 50টি ফায়ার ইউনিট বিভিন্ন কারণে অভিযানক্ষেত্রগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছিল ৷ প্রদত্ত উদ্দেশ্যগুলি ধ্বংস করার জন্য, পদাতিক সেনাবাহিনীর আক্রমণকে সমর্থন করার জন্য এবং পাল্টা বোমাবাজি চালানোর জন্য এই ইউনিটকে মোতায়েন করা হয়েছিল ৷
- এগুলির মধ্যে ইউনিটগুলি 90 দিনের পিরিয়ডে আড়াই লাখ গোলা বা রকেট নিক্ষেপ করেছিল ৷
- মাঝারি রেঞ্জের কামান দিয়ে মোট পরিমাণের মধ্যে 30 শতাংশ গোলা বর্ষণ করা হয়েছিল ৷ কখনও পাঁচ মিনিটের মধ্যে 1,200 রাউন্ড উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হয়েছিল ৷ যা দিয়ে টাইগার হিল ও টোলোলিঙের 4,875টি বস্তুকে আক্রমণ করা হয়েছিল ৷
- পাহাড়ের যুদ্ধে কার্যকরীভাবে ব্যবহারের জন্য ফিল্ড গান, 155 মিলিমিটার বোফোর্স কামান, 130 মিলিমিটার মাঝারি রেঞ্জের কামান ও 122 মিলিমিটার গ্র্যাড মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার মোতায়েন করা হয়েছিল ৷ 17 কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংসের জন্য এই অস্ত্রগুলি ব্যবহার করা হয়েছিল ৷
- বেশ কয়েকজন ফরওয়ার্ড অবজ়ারভেশন অফিসার এবং ব্যাটারি কমান্ডাররা হামলাকারী সৈন্যদের সঙ্গে যাওয়ার সময় তাঁদের উপর ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয় ৷ তাঁরা এই প্রক্রিয়াতে হতাহত হয়েছিলেন ।
- কিছু ক্ষেত্রে যখন একজন কম্পানি কমান্ডার হতাহত হতেন তখন ফরওয়ার্ড অবজ়ার্ভিং অফিসার রাইফেল কম্পানিকে নেতৃত্ব দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুকে দখল করতে নিয়ে যেতেন ৷
বোফোর্স কামান সম্পর্কে তথ্য
- কার্গিলের উঁচু রাস্তায় 35 কিলোমিটার রেঞ্জের বোফোর্স দুই সেনার মধ্যে পার্থক্যের প্রমাণ ছিল ৷
- বোফোর্স 12 সেকেন্ডে তিন রাউন্ড গোলা বর্ষণ করতে সক্ষম ছিল ৷ এটি 90 ডিগ্রি কোণে থাকা শত্রুপক্ষের পোস্টগুলিকে ধ্বংস করতে সক্ষম ছিল ৷ এই বিশেষ ক্ষমতার জন্য পাহাড়ের উঁচু জায়গায় দখল করে থাকা পাকিস্তানি সেনাদের নাকের ডগা দিয়ে এই কামান ব্যবহার করা সম্ভব ছিল ৷
- মারসেডিজ় বেনজ় ইঞ্জিন এই বোফোর্স কামান তৈরি করেছিল ৷ এই কামানগুলিকে স্বল্প দূরত্ব সরানোর জন্য অন্য যানবাহনের প্রয়োজন পড়ে না ৷ এগুলিকে কোনও সাহায্য ছাড়াই সরানো যায় ৷ কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীন এই কামানগুলিকে শত্রুপক্ষকে আক্রমণের পর নিজেদের জায়গা থেকে সরিয়ে রাখা হত ৷ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পালটা আক্রমণ থেকে বাঁচাতেই এরকম করা হত ৷
- এই বোফোর্স কামানের ফলে কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে বহু হতাহত হয় ৷ এটাই প্রথমবার, যখন বোফোর্স কামানকে সরাসরি প্রথমসারিতে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগানো হয়েছিল ৷
- কার্গিল সেক্টরের বেশিরভাগ রাস্তায় আট হাজার ফুট উঁচুতে ৷ এই উচ্চতায় আর্টিলারি শক্তি যেকোনও সেনাবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে ৷ এছাড়া, কার্গিল যুদ্ধের সময় সরকারের তরফেও বায়ুসেনার ব্যবহার সীমিত করা হয়েছিল ৷
- ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের হারানোর প্রদত্ত পরিস্থিতিতে একটি কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছিল ৷ তাদের বেশিরভাগই নর্দান লাইট ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসে ।
- পাকিস্তানি সেনার কাছে 155 মিলিমিটার FH77 বোফোর্স কামান ছিল, যা মাঝারি রেঞ্জের কামানগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভালো ৷
- 2003 সালে সীমান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয় ৷ তার আগে পর্যন্ত প্রতিবার গোলা বর্ষণের আদান-প্রদানে বোফোর্সের টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা পাকিস্তানি সেনাকে দমিয়ে রাখার জন্য ভারতীয় সেনাকে সাহায্য করেছিল ৷