ETV Bharat / bharat

গান্ধি পরিবারকে খোঁচা, দফায় দফায় মুলতুবি লোকসভা

author img

By

Published : Sep 18, 2020, 10:24 PM IST

Updated : Sep 18, 2020, 11:03 PM IST

পি এম কেয়ারস তহবিল প্রসঙ্গে বক্তব্যের মধ্যে গান্ধি পরিবারকে খোঁচা BJP সাংসদ তথা অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের । এরপরই অধিবেশন কক্ষে শুরু হয় তুমুল হইচই । দফায় দফায় মুলতুবি করা হয় লোকসভা ।

 অনুরাগ ঠাকুর
অনুরাগ ঠাকুর

দিল্লি, 18 সেপ্টেম্বর : চলছে সংসদের বাদল অধিবেশন । আজ পঞ্চম দিন । আজ লোকসভায় নেহরু-গান্ধি পরিবারকে খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করেন BJP সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর । পালটা বাক্যবাণ আসে কংগ্রেসের দিক থেকেও । অনুরাগ ঠাকুরকে ছোকরা বলে সম্বোধন করা হয় কংগ্রেস শিবিরের তরফে । আর এর জেরেই দফায় দফায় মুলতুবি হল লোকসভা । পাশাপাশি, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা শাসকদলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা ।

বিরোধের সূত্রপাত পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে । লোকসভায় তখন ট্যাক্সেশন ও অন্যান্য আইনের সংশোধন সংক্রান্ত বিল নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন অনুরাগ ঠাকুর । নিজের বক্তব্যের মাঝে পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে কথা শুরু করেন তিনি । প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে চলতে থাকা কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যেই এই তহবিলের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ।

পি এম কেয়ারস প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, "হাইকোর্ট থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট, সব আদালতে পি এম কেয়ারস তহবিল বৈধ বলে জানানো হয়েছে । ছোটো ছোটো শিশুরাও তাদের পিগি ব্যাঙ্কের জমানো টাকা দান করেছে । যখন পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন একবার প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল নিয়েও আলোচনা হোক । 1948 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ঘটা করে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন । কিন্তু 1948 সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তা নথিভুক্তই হয়নি । পি এম কেয়ারস একটি নথিভুক্ত তহবিল । আপনারা শুধুমাত্র গান্ধি ও নেহরু পরিবারের জন্যই তহবিল তৈরি করেছেন । নেহরু, সোনিয়া গান্ধি প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের সদস্য ছিলেন । এর তদন্ত হওয়া উচিত ।"

এরপরই বিরোধী শিবির বিশেষত কংগ্রেসের তরফ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ আসতে থাকে । লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরি তো BJP সাংসদকে "ছোকরা" বলে বসেন । অনুরাগ ঠাকুরকে উদ্দেশ করে বলেন, "হিমাচলের এই ছেলেটি কে ? তিনি কীভাবে এই বিতর্কের মধ্যে নেহরুকে টেনে আনছেন ? আমরা কি নরেন্দ্র মোদির নাম নিয়েছি ? দু-দিনের ছোকরা ..."

দু-পক্ষের বাক্যবাণে তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায় লোকসভার ভিতরে । নেহরু ও গান্ধি পরিবারকে নিয়ে মন্তব্য়ের জন্য সাংসদকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তোলে কংগ্রেস শিবির । স্লোগান ওঠে, "গোলি মারো মন্ত্রী"-র পদত্যাগের দাবিতেও । প্রসঙ্গত, CAA -এর প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের গুলি করার বিষয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুরাগ ঠাকুর ।

আরও পড়ুন : প্রতিরক্ষা খাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই 74 শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগে শিলমোহর কেন্দ্রের

এদিকে লোকসভার অধিবেশন কক্ষে মুখে মাস্ক পরে থাকার জন্য বিরোধীদের অনুরোধ করেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা । বলেন, "যাঁরা স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নিয়ম মানবেন না, তাঁদের নাম লিখে সংসদের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। "

এরপরই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন । BJP সাংসদদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় । কল্যাণবাবু বলেন, "আপনি যদি চান, আমাদের বাইরে বের করে দিন । কিন্তু আমরা এটা চলতে দেব না ।"

এরপরই অধ্যক্ষ বাধ্য হন লোকসভা মুলতুবি করে দিতে । সমস্যার সমাধান করতে সংসদীয় নেতাদের একটি বৈঠকে বসার জন্যও আহ্বান করেন তিনি । কিন্তু বৈঠক শেষে অধিবেশন শুরু হলে ফের শুরু হয় হই হট্টগোল । ফলে আবারও মুলতুবি করে দিতে হয় লোকসভা ।

পরে অবশ্য অনুরাগ ঠাকুর নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন । বলেন, "তিনি কাউকে আঘাত করার জন্য এইধরনের মন্তব্য করেননি । তাঁর মন্তব্যের জন্য কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি সে-জন্য দুঃখিত ।"

আজকের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের তরফে ট্যাক্সেশন ও অন্যান্য আইনের সংশোদন সংক্রান্ত বিলের তীব্র বিরোধিতা শুরু করা হয় । বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেসও । তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন,"পি এম কেয়ারস তহবিলের প্রয়োজন কী ? যেহেতু বলা হচ্ছে, এই তহবিলের কোনও অডিট রাখা হচ্ছে না, তাই আমি দাবি করছি এই পি এম কেয়ারস তহবিল অবিলম্বে বন্ধ করা হোক । যে টাকা অনুদান এসেছে, তা প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের সঙ্গে যুক্ত করা হোক ।" পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে আজ সংসদে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারিও ।

আরও পড়ুন : বাদল অধিবেশনে প্রতিদিন বাধ্যতামূলক অ্যান্টিজেন পরীক্ষা

পাশাপাশি কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কেন্দ্র অনেক দেরিতে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে বলেও অভিযোগ আনেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ । বলেন, "আমরা জানুয়ারি মাস থেকে কোরোনার বিষয়ে জানতাম । কিন্তু তারপরেও দেরিতে পদক্ষেপ করেছি । আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছি । আর তারপর যেমন তেমন করে লকডাউন করে দিয়েছি ।"

এদিকে গতকাল বকেয়া GST মেটানোর দাবিতে সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধীরা । আজ সেই প্রক্ষিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেন, " আমরা দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না । আমাদের প্রধানমন্ত্রী এর আগে একজন সফল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন । তিনি জানেন, রাজ্যগুলির কী কী প্রয়োজন । রাজ্যগুলিকে কখনোই বঞ্চিত করা হবে না ।"

বর্তমানে রাজ্যগুলির বকেয়া GST মেটানোর ক্ষেত্রে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে "অ্যাক্ট অফ গড" হিসেবে ব্যাখ্যা করেন অর্থমন্ত্রী । আর এই নিয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আজ মুখ খুললেন লোকসভায় DMK সাংসদ দয়ানিধি মারান । প্রশ্ন তোলেন, " কেন্দ্র কীভাবে আশা করে যে রাজ্য এত ঋণের বোঝা টানবে ?"

GST ইশুতে সংসদে সরব হন BSP নেতা রীতেশ তিওয়ারিও । বলেন, "কোরোনা পরিস্থিত আদতে কেন্দ্রের জন্য শাপে-বর হয়েছে । এখন যে কোনও নীতি ব্যর্থ হলেই সরকার সেটাকে অ্যাক্ট অফ গড বলতে পারবে । কিন্তু মানুষকে ভুললে চলবে না যে, একসময়ে ভালো অর্থনীতি হঠাৎ পড়ে যাওয়ার কারণ শুধুমাত্র সরকারের ব্যর্থতা ।"

আরও পড়ুন : "বিভ্রান্ত হবেন না" কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

এদিকে রাজ্যসভায় পাশ হয় মন্ত্রীদের বেতন ও ভাতা সংক্রান্ত সংশোধনী বিল, 2020 ও হোমিওপ্যাথি সেন্ট্রাল কাউন্সিল সংশোধনী বিল, 2020 ।

DMK-র রাজ্যসভার সাংসদ টি শিবা আজ হোমিওপ্যাথি সেন্ট্রাল কাউন্সিল সংশোধনী বিল নিয়ে রাজ্যসভায় বলেন, " গণতন্ত্রের গোড়ায় আঘাত করার আরও একটি প্রয়াস সরকারের । যেদিন থেকে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেদিন থেকে বেশিরভাগ বিলে তারা রাজ্য সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে । স্ট্যান্ডিং কমিটিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে উপদেষ্টা কমিটিতে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না । রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব অবশ্যই থাকা উচিত ।"

এদিকে গতকাল চূড়ান্ত নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে লোকসভায় পাশ হয়েছে কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি । কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন হরসিমরত কউর বাদল । এরপর আজ নেহরু-গান্ধি পরিবারকে খোঁচা দেওয়ার ইশুতে লোকসভা মুলতুবি । সবমিলিয়ে টানা দু'দিন সরগরম সংসদের বাদল অধিবেশন ।

দিল্লি, 18 সেপ্টেম্বর : চলছে সংসদের বাদল অধিবেশন । আজ পঞ্চম দিন । আজ লোকসভায় নেহরু-গান্ধি পরিবারকে খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করেন BJP সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর । পালটা বাক্যবাণ আসে কংগ্রেসের দিক থেকেও । অনুরাগ ঠাকুরকে ছোকরা বলে সম্বোধন করা হয় কংগ্রেস শিবিরের তরফে । আর এর জেরেই দফায় দফায় মুলতুবি হল লোকসভা । পাশাপাশি, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা শাসকদলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা ।

বিরোধের সূত্রপাত পি এম কেয়ারস ফান্ড নিয়ে । লোকসভায় তখন ট্যাক্সেশন ও অন্যান্য আইনের সংশোধন সংক্রান্ত বিল নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন অনুরাগ ঠাকুর । নিজের বক্তব্যের মাঝে পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে কথা শুরু করেন তিনি । প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে চলতে থাকা কোরোনা পরিস্থিতির মধ্যেই এই তহবিলের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ।

পি এম কেয়ারস প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, "হাইকোর্ট থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট, সব আদালতে পি এম কেয়ারস তহবিল বৈধ বলে জানানো হয়েছে । ছোটো ছোটো শিশুরাও তাদের পিগি ব্যাঙ্কের জমানো টাকা দান করেছে । যখন পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন একবার প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল নিয়েও আলোচনা হোক । 1948 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ঘটা করে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন । কিন্তু 1948 সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তা নথিভুক্তই হয়নি । পি এম কেয়ারস একটি নথিভুক্ত তহবিল । আপনারা শুধুমাত্র গান্ধি ও নেহরু পরিবারের জন্যই তহবিল তৈরি করেছেন । নেহরু, সোনিয়া গান্ধি প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের সদস্য ছিলেন । এর তদন্ত হওয়া উচিত ।"

এরপরই বিরোধী শিবির বিশেষত কংগ্রেসের তরফ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ আসতে থাকে । লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরি তো BJP সাংসদকে "ছোকরা" বলে বসেন । অনুরাগ ঠাকুরকে উদ্দেশ করে বলেন, "হিমাচলের এই ছেলেটি কে ? তিনি কীভাবে এই বিতর্কের মধ্যে নেহরুকে টেনে আনছেন ? আমরা কি নরেন্দ্র মোদির নাম নিয়েছি ? দু-দিনের ছোকরা ..."

দু-পক্ষের বাক্যবাণে তুমুল হইচই শুরু হয়ে যায় লোকসভার ভিতরে । নেহরু ও গান্ধি পরিবারকে নিয়ে মন্তব্য়ের জন্য সাংসদকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তোলে কংগ্রেস শিবির । স্লোগান ওঠে, "গোলি মারো মন্ত্রী"-র পদত্যাগের দাবিতেও । প্রসঙ্গত, CAA -এর প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের গুলি করার বিষয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অনুরাগ ঠাকুর ।

আরও পড়ুন : প্রতিরক্ষা খাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই 74 শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগে শিলমোহর কেন্দ্রের

এদিকে লোকসভার অধিবেশন কক্ষে মুখে মাস্ক পরে থাকার জন্য বিরোধীদের অনুরোধ করেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা । বলেন, "যাঁরা স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নিয়ম মানবেন না, তাঁদের নাম লিখে সংসদের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। "

এরপরই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন । BJP সাংসদদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় । কল্যাণবাবু বলেন, "আপনি যদি চান, আমাদের বাইরে বের করে দিন । কিন্তু আমরা এটা চলতে দেব না ।"

এরপরই অধ্যক্ষ বাধ্য হন লোকসভা মুলতুবি করে দিতে । সমস্যার সমাধান করতে সংসদীয় নেতাদের একটি বৈঠকে বসার জন্যও আহ্বান করেন তিনি । কিন্তু বৈঠক শেষে অধিবেশন শুরু হলে ফের শুরু হয় হই হট্টগোল । ফলে আবারও মুলতুবি করে দিতে হয় লোকসভা ।

পরে অবশ্য অনুরাগ ঠাকুর নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন । বলেন, "তিনি কাউকে আঘাত করার জন্য এইধরনের মন্তব্য করেননি । তাঁর মন্তব্যের জন্য কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি সে-জন্য দুঃখিত ।"

আজকের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের তরফে ট্যাক্সেশন ও অন্যান্য আইনের সংশোদন সংক্রান্ত বিলের তীব্র বিরোধিতা শুরু করা হয় । বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেসও । তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন,"পি এম কেয়ারস তহবিলের প্রয়োজন কী ? যেহেতু বলা হচ্ছে, এই তহবিলের কোনও অডিট রাখা হচ্ছে না, তাই আমি দাবি করছি এই পি এম কেয়ারস তহবিল অবিলম্বে বন্ধ করা হোক । যে টাকা অনুদান এসেছে, তা প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের সঙ্গে যুক্ত করা হোক ।" পি এম কেয়ারস তহবিল নিয়ে আজ সংসদে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারিও ।

আরও পড়ুন : বাদল অধিবেশনে প্রতিদিন বাধ্যতামূলক অ্যান্টিজেন পরীক্ষা

পাশাপাশি কোরোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কেন্দ্র অনেক দেরিতে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে বলেও অভিযোগ আনেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ । বলেন, "আমরা জানুয়ারি মাস থেকে কোরোনার বিষয়ে জানতাম । কিন্তু তারপরেও দেরিতে পদক্ষেপ করেছি । আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছি । আর তারপর যেমন তেমন করে লকডাউন করে দিয়েছি ।"

এদিকে গতকাল বকেয়া GST মেটানোর দাবিতে সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধীরা । আজ সেই প্রক্ষিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বলেন, " আমরা দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না । আমাদের প্রধানমন্ত্রী এর আগে একজন সফল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন । তিনি জানেন, রাজ্যগুলির কী কী প্রয়োজন । রাজ্যগুলিকে কখনোই বঞ্চিত করা হবে না ।"

বর্তমানে রাজ্যগুলির বকেয়া GST মেটানোর ক্ষেত্রে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তাকে "অ্যাক্ট অফ গড" হিসেবে ব্যাখ্যা করেন অর্থমন্ত্রী । আর এই নিয়েই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আজ মুখ খুললেন লোকসভায় DMK সাংসদ দয়ানিধি মারান । প্রশ্ন তোলেন, " কেন্দ্র কীভাবে আশা করে যে রাজ্য এত ঋণের বোঝা টানবে ?"

GST ইশুতে সংসদে সরব হন BSP নেতা রীতেশ তিওয়ারিও । বলেন, "কোরোনা পরিস্থিত আদতে কেন্দ্রের জন্য শাপে-বর হয়েছে । এখন যে কোনও নীতি ব্যর্থ হলেই সরকার সেটাকে অ্যাক্ট অফ গড বলতে পারবে । কিন্তু মানুষকে ভুললে চলবে না যে, একসময়ে ভালো অর্থনীতি হঠাৎ পড়ে যাওয়ার কারণ শুধুমাত্র সরকারের ব্যর্থতা ।"

আরও পড়ুন : "বিভ্রান্ত হবেন না" কৃষকদের উদ্দেশে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর

এদিকে রাজ্যসভায় পাশ হয় মন্ত্রীদের বেতন ও ভাতা সংক্রান্ত সংশোধনী বিল, 2020 ও হোমিওপ্যাথি সেন্ট্রাল কাউন্সিল সংশোধনী বিল, 2020 ।

DMK-র রাজ্যসভার সাংসদ টি শিবা আজ হোমিওপ্যাথি সেন্ট্রাল কাউন্সিল সংশোধনী বিল নিয়ে রাজ্যসভায় বলেন, " গণতন্ত্রের গোড়ায় আঘাত করার আরও একটি প্রয়াস সরকারের । যেদিন থেকে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেদিন থেকে বেশিরভাগ বিলে তারা রাজ্য সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে । স্ট্যান্ডিং কমিটিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে উপদেষ্টা কমিটিতে রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না । রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব অবশ্যই থাকা উচিত ।"

এদিকে গতকাল চূড়ান্ত নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে লোকসভায় পাশ হয়েছে কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি । কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন হরসিমরত কউর বাদল । এরপর আজ নেহরু-গান্ধি পরিবারকে খোঁচা দেওয়ার ইশুতে লোকসভা মুলতুবি । সবমিলিয়ে টানা দু'দিন সরগরম সংসদের বাদল অধিবেশন ।

Last Updated : Sep 18, 2020, 11:03 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.