দিল্লি, 8 মে : বিশাখাপটনমে রাসায়নিক কারখানায় গতকাল গ্যাস লিকের ঘটনায় মৃত্যু বেডে় 12 জনের । মৃতদের মধ্যে এক জন শিশুও রয়েছে । এই ঘটনায় উপদেশনামা জারি করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক । সেখানে এই ধরনের ঘটনায় কী করা উচিত ও কী করা উচিত নয় সে সম্পর্কে জনগণকে বিভিন্ন উপদেশ দেওয়া হয় ।
স্টাইরিন একধরনের রঙহীন, দাহ্যযুক্ত তরল । এই তরল পলিস্টাইরিন প্লাস্টিক, রাবার, ও ফাইবার গ্লাস তৈরিতে ব্যবহার হয় । উপদেশনামা অনুযায়ী, এই স্টাইরেন শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে । এই তরলের সংস্পর্শে আসার সাধারণ লক্ষণ হল চোখে, নাকে ও ত্বকে জ্বালা অনুভূত হওয়া । এই তরলের সংস্পর্শে দীর্ঘক্ষণ থাকলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা -সহ মানসিক অবসাদ ও মাথা যন্ত্রণা হতে পারে । পরবর্তীতে হাঁপানিতেও ভুগতে হতে পারে আজীবন ৷
উপদেশনামায় বলা হয়, যদি কেউ দুর্ঘটনাক্রমে স্টাইরিনের সংস্পর্শে আসে তাহলে প্রচুর পরিমাণে জল দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে । পাশাপাশি চোখ ও ত্বকে কমপক্ষে 15 মিনিট ধরে জলের ঝাপটা দিতে হবে । একইসঙ্গে স্টাইরিনের সংস্পর্শে আসায় জামা ও জুতো খুলে ফেলতে হবে ।
বায়ুতে স্টাইরিনের মাত্রা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে । তারপর বিশেষ স্টাইরিন চিহ্নিতকরণ ডিভাইসের মাধ্যমে বিষয়টির বিশ্লেষণ করা যেতে পারে । বাতাসে স্টাইরিনের পরিমাণ ও গুণ নির্ধারণের জন্য গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফিরও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে উপদেশনামায় জানানো হয় ।
উপদেশনামায় বলা হয়, "স্টাইরিন মাটি বা জলে মিশলে দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায় । অন্যদিকে বাতাসে মিশলে স্টাইরিন ফোটো কেমিকেলের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় হাইড্রক্সিল ব়্যাডিকাল নির্গত হয় । ফলে সেক্ষেত্রে স্টাইরিন বাতাসে একদিনেরও অর্ধেক সময় থাকে ।" পাশাপাশি কারখানার কর্মীদের সরকার বা শিল্পমূলক সংগঠনগুলির তরফে আয়োজিত বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মসূচিগুলিতে উপস্থিত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় । কারখানার কর্মীদের উদ্দেশে উপদেশনামায় বলা হয়, "পরিবার ও প্রতিবেশীদের বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক সম্পর্কে সচতেন করুন । "
গ্যাস লিকের ঘটনা ঘটলে মানুষকে মাথা ঠান্ডা রেখে দ্রুত বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে । বের হওয়ার সময় রুমাল বা কাপড়ের টুকরো ভিজিয়ে মুখে চাপা দিয়ে রাখতেও বলা হয় । পাশাপাশি এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক PPE কিটের ব্যবস্থা করে রাখতেও বলা হয় ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা উপদেশনামায় এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে খোলা রাখা খাবার, জল গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয় । পাশাপাশি সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছানোর পর জামা-কাপড় বদলে নেওয়ার ও হাত ভালো ধোওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় । একইসঙ্গে জরুরি পরিষেবা পেতে দমকল, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সকেও খবর দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় উপদেশনামায় ।