লখনউ, 3 অক্টোবর : দু'দিন টানাপোড়েনের পর ব্যারিকেড সরল হাথরসের প্রবেশপথ থেকে । কিন্তু শুধুই সংবাদমাধ্যমে প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়েছে । নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই কড়া নিরাপত্তা জারি ছিল বলে দাবি করছে স্থানীয় প্রশাসন । যদিও নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, টাকা নিয়ে আপস করার প্রস্তাব দেওয়া হয় তাদের । কিন্তু তারা টাকা চায় না, বিচার চায় ।
গত দু'দিন বন্ধ ছিল হাথরসে ঢোকার মুখ । জারি ছিল কড়া নিরাপত্তা । কোনও বিরোধী দল এবং সংবাদমাধ্যমকে হাথরসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না । কথা বলতে দেওয়া হয়নি নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে । তৃণমূল সাংসদ এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে । কিন্তু কেন এই কড়াকড়ি ? বারবার সেই প্রশ্নই উঠেছে ।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল । এমনকী টাকা নিয়ে আপসের কথা বলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করে পরিবার । মামলা তুলতে বারবার চাপ দেওয়া হয়েছে । গতকালও তারা বাইরে বের হতে পারেনি । বাড়িতে সবজি নেই । তা কিনতে যেতে পারেনি বলেও জানায় তারা ।
কড়া নজরদারি জারি এক মুহূর্তও বন্ধ হয়নি । গতকাল নির্যাতিতার এক ভাই খেতের মধ্যে দিয়ে পালিয়ে আসে । সংবাদমাধ্যমকে জানায়, পরিবারকে কার্যত বন্দী বানিয়ে রেখেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ । এমনকী তাদের মোবাইল ফোনও নিয়ে নেওয়া হয়েছে । প্রতিমুহূর্তে চলছে হুমকি । বলে, "তার কাকার বুকে লাথি মারেন জেলাশাসক । তিনি অজ্ঞান হয়ে যান ।"
কিন্তু, দু'দিন পর সেইসব অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করে স্থানীয় প্রশাসন । হাথরসের যুগ্ম জেলাশাসক প্রেম প্রকাশ বলেন, "সংবাদমাধ্যমকে সেই ছেলেটি যে কথা জানিয়েছে সব ভিত্তিহীন । যদি একটি বাচ্চা পালিয়ে আসতে পারে । তার অর্থ পরিবারের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না । কোনও ফোন নিয়ে নেওয়া হয়নি ।"
শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই নিরাপত্তা জারি করা হয়েছিল বলে দাবি করেন প্রেম প্রকাশ । বলেন, বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত করছিল । তাদের তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই সংবাদমাধ্যমকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে । কিন্তু 144 ধারা জারি রয়েছে । তাই পাঁচজনের বেশি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি প্রবেশ করতে পারবেন না । পরবর্তী নির্দেশ এলে অন্যদেরও প্রবেশ করতে দেওয়া হবে ।
আজ হাথরস যাচ্ছে রাহুল গান্ধি নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল
এদিকে অভিযুক্তের পরিবারের দাবি, তাদের ছেলে নির্দোষ । মিথ্যা ফাঁসানো হচ্ছে । 25 লাখ টাকার জন্য নিজের মেয়েকে খুন করেছে পরিবার ।
"ফোন বাজেয়াপ্ত, বাড়ির বাইরে আসতে বাধা", অভিযোগ হাথরসে নির্যাতিতার পরিজনদের
আজ আবার নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন রাহুল গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা । এর আগেও 1 অক্টোবর তাঁরা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন । কিন্তু, উত্তরপ্রদেশ ঢোকার আগেই তাঁদের আটকানো হয় । কংগ্রেসকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় পুলিশের । ধস্তাধস্তিতে পড়ে যান রাহুল । তাঁদের আটক করা হয় । কংগ্রেসের দাবি, উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস প্রধানকে গৃহবন্দী করে রেখেছে পুলিশ । অজয় কুমার লাল্লু প্রশ্ন তুলেছেন, কেন তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়েছে ? কী লুকাতে চাইছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন?