ETV Bharat / bharat

রক্ষকই ভক্ষক হয়ে দাঁড়ালে মহাবিপদ? - সিবিআই এক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা

ভারতের সিবিআই একদিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অন্যদিকে ব্যর্থ তদন্তপদ্ধতিতে জর্জরিত । যার জন্য মানুষের হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে সিবিআই । দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হয়ে নিজেরাই দুর্নীতির অভিযোগে ডুবে রয়েছে । বহুবার আদালত বলেছে, এই সংস্থা কেন্দ্র সরকারের খাঁচাবন্দি তোতায় পরিণত হয়েছে । যদিও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সিবিআইকে শক্তিশালী তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে উঠে আসতে হবে, যার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করবে না ।

CBI
CBI
author img

By

Published : Jan 20, 2021, 11:27 AM IST

সিবিআই এক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যার ওপর নিজস্ব ক্ষমতা ও বল প্রয়োগ করে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের গুরুদায়িত্ব রয়েছে । তারা নিজেরাই দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত! এটা নিন্দুকদের আনা কোনও অভিযোগ নয়, তেতো এই সত্যিটা সংস্থা নিজেই যাচাই করে দেখেছে । আট পৃষ্ঠার এফআইআরে সিবিআই স্পষ্ট বলেছে, তাদের নিজেদের অফিসাররা ব্যাঙ্ক প্রতারণায় যুক্ত কিছু কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং অবৈধভাবে তাদের সাহায্য করেছে । চার্জশিট দাখিল হয়েছে চারজন সিবিআই অফিসার, যার মধ্যে দুই ডিএসপি এবং কয়েকজন আইনজীবী সহ কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে । সংক্রান্তির দিন 14 জায়গায় তাদের অফিসে সিবিআই ব্যাপক তল্লাশি চালায় । এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, গাজিয়াবাদ, নয়ডা, মিরাট ও কানপুর । সিবিআই ইন্সপেক্টর কপিল ধনকড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের জন্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের থেকে বেশ কয়েক দফায় 16 লাখ টাকা নিয়েছেন । দুই ডিএসপি দুজন আইনজীবীর কাছ থেকে 15 লাখ টাকা করে নিয়েছেন । তার সঙ্গে যে মিডলম্যানরা গোটা বিষয়টা করেছিল, তাদের দেওয়া টাকা সংক্রান্ত নথি থেকেই স্পষ্ট, আমাদের সিস্টেমের মধ্যে দুর্নীতির সংস্কৃতি কতটা গভীরভাবে গেঁথে রয়েছে । লাখ লাখ টাকা যেভাবে হাতবদল হচ্ছে, তাতে দেশের সম্মান ধুলোয় লুটোচ্ছে এবং আরও মামলার তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা চমকে দেওয়ার মতো বেড়ে চলেছে ।

সাতান্ন বছর আগে ‘অল ফুলস ডে’ (1 এপ্রিল)-তে তৈরি হয়েছিল সেন্ট্রাল বিওরো অফ ইনভেস্টিগেশন । শাসনের যন্ত্র হিসাবে তার মানের ক্রমশ অবনতি হয়েছে এবং ইন্দিরা গান্ধির সময়ে তা দুর্নীতিতে ভরে যায় । বহুবার আদালত বলেছে, এই সংস্থা কেন্দ্র সরকারের খাঁচাবন্দি তোতায় পরিণত হয়েছে । যদিও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সিবিআইকে শক্তিশালী তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে উঠে আসতে হবে, যার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করবে না । কাজের মাধ্যমেই সবার প্রশংসার যোগ্য হয়ে উঠতে হবে । কিন্তু সংস্থার উন্নতির কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না । রাজনৈতিক চাপ ও অন্যান্য কারণে বহু মামলা হারিয়ে যায় । অনেকেই মনে করেন, নেতাদের হস্তক্ষেপ ছাড়া, ব্যাপক দুর্নীতিও বর্তমান দুরবস্থার প্রধান কারণ ।

আরও পড়ুন :দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে অস্বাভাবিক বৃষ্টির জন্য দায়ি 'লা নিনা' আদতে কী ?

সিবিআই গর্বিতভাবে দাবি করে যে সততা, পরিশ্রম, নিরপেক্ষতা হল তাদের তিনটি নীতি!

সিবিআই রাজনৈতিক নেতাদের সুরে সুর মেলানোর জন্য সুপরিচিত এবং বারংবার নির্লজ্জভাবে নিজেদের মেরুদণ্ডহীন বলে প্রমাণ করেছে । দু’বছর আগে অলোক ভার্মা এবং রাকেশ আস্থানার সংঘাত পুরো সংস্থাকেই ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল । সেইসময় আস্থানী একটি বিশেষ তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যারা মইন কুরেশি নামে এক মাংস-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছিল । সিবিআই অলোক ভার্মার নেতৃত্বে একটি এফআইআর দায়ের করে, তখন দু’মাসের মধ্যে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা । মোদ্দা কথায়, দুর্নীতির মামলায় প্রধান কালপ্রিট হলেন আস্থানা স্বয়ং, যিনি স্পেশাল ডিরেক্টরের ক্ষমতাবলে কলকাঠি নাড়ছিলেন! সতীশ নামে এক ব্যক্তির জবানবন্দি তোলপাড় ফেলে দেয়, যেখানে তিনি বলেন সিবিআইয়ের জাল থেকে বেরোনোর জন্য তিনি ৩ কোটি টাকা দিলেও অফিসাররা তাঁকে হয়রান করছেন । গত মার্চে রাকেশ আস্থানাকে সিবিআই ক্লিনচিট দেওয়ার পর বিশেষ আদালত মামলাটি খারিজ করে, এবং এই সংঘাত সরকারিভাবে শেষ হয় । অভিযোগ ছিল, ঘুষ দেওয়া হয়েছে এবং আরও ঘুষ চাওয়া হয়েছে । তবুও কাউকেই দোষী প্রমাণ করা যায়নি!

এখন মুম্বই ও উত্তর প্রদেশে বহু কোটি টাকার ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে এবং বহু অফিসারই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত । কেউ জানে না শেষ পর্যন্ত কী হবে । সিবিআই খুবই দক্ষ এটা প্রমাণ করতে যে অপরাধটা সত্য, আর মামলাটা মিথ্যে । প্রশ্ন হল, ডিপার্টমেন্টের চোরেদের ক্ষেত্রে এটা আলাদা হবে কিনা ।

আরও পড়ুন : জানুন কে এই জো বাইডেন ?

2019 সালের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, গুরুগ্রামে ভুপিন্দর সিং হুডা সরকারের 1400 একর জমি অধিগ্রহণ বিতর্ক-মামলায় সিবিআই গা ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছে । 2009 সালের মামলা এখনও ঝুলে থাকায় কড়া সমালোচনা করেছে আদালত । এবার সিবিআইয়ের দক্ষতা কেমন সেটা দেখা যাবে এবং তারা নিজেদের ঘরের অভিযোগগুলো কতটা সফলভাবে মেটায়, সেদিকেও নজর রাখা হবে । কেন্দ্রের বক্তব্য, তিন বছরে 36 জন সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে । এই তালিকা দীর্ঘ হয়েই চলেছে । দেড় দশক পর সিবিআই তাদের ক্রিমিনাল ম্যানুয়ালে রদবদল করেছে । এখন থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায় সমস্ত তদন্ত সর্বাধিক 9 মাসের মধ্যে শেষ করে ফেলা হবে । যদি নিজেদের মধ্যে থাকা চোরদের বিরুদ্ধে সিবিআই এই ডেডলাইন সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারে, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে ।

আরও পড়ুন : বিদেশি ও ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্সে সামঞ্জস্য আনার দাবি

দশ বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের মাথায় পিজে থমাসের নিয়োগ খারিজ করে দিয়েছিল । আদালত বলেছিল, কীভাবে নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকা এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমনে সবথেকে বড় সংস্থার দায়িত্বে আসতে পারেন? সিবিআইয়ের ওপর দুর্নীতি খুঁজে বার করার দায়িত্ব যেমন রয়েছে, তাদের উচিত অভ্যন্তরীণ অপরাধীদেরও কড়া হাতে শাস্তি দেওয়া । আমেরিকায় এফবিআই (ফেডারেল বিওরো অফ ইনভেস্টিগেশন) এবং সিআইএ (সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি) নিয়ন্ত্রিত হয় বিশেষ আইনের মাধ্যমে । রাশিয়া, জার্মানি ও জাপানেও তদন্তকারী সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট নিয়মের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে কাজ করে । উল্টোদিকে ভারতের সিবিআই একদিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অন্যদিকে ব্যর্থ তদন্তপদ্ধতিতে জর্জরিত, যার জন্য তারা মানুষের হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে । দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হয়ে নিজেরাই গলা পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে ডুবে – কোনও সংস্থার কাছে এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে? একমাত্র যদি দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীরা দ্রুত কঠোর শাস্তি পায়, অন্যদেরও সংশোধন হবে, এবং তারা আর দুর্নীতি করতে সাহস করবে না । এর ফলে সিবিআইও তাদের ভাবমূর্তি উন্নত করে হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে । আপনি কী বলেন?

সিবিআই এক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা যার ওপর নিজস্ব ক্ষমতা ও বল প্রয়োগ করে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের গুরুদায়িত্ব রয়েছে । তারা নিজেরাই দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত! এটা নিন্দুকদের আনা কোনও অভিযোগ নয়, তেতো এই সত্যিটা সংস্থা নিজেই যাচাই করে দেখেছে । আট পৃষ্ঠার এফআইআরে সিবিআই স্পষ্ট বলেছে, তাদের নিজেদের অফিসাররা ব্যাঙ্ক প্রতারণায় যুক্ত কিছু কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এবং অবৈধভাবে তাদের সাহায্য করেছে । চার্জশিট দাখিল হয়েছে চারজন সিবিআই অফিসার, যার মধ্যে দুই ডিএসপি এবং কয়েকজন আইনজীবী সহ কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে । সংক্রান্তির দিন 14 জায়গায় তাদের অফিসে সিবিআই ব্যাপক তল্লাশি চালায় । এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, গাজিয়াবাদ, নয়ডা, মিরাট ও কানপুর । সিবিআই ইন্সপেক্টর কপিল ধনকড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের জন্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের থেকে বেশ কয়েক দফায় 16 লাখ টাকা নিয়েছেন । দুই ডিএসপি দুজন আইনজীবীর কাছ থেকে 15 লাখ টাকা করে নিয়েছেন । তার সঙ্গে যে মিডলম্যানরা গোটা বিষয়টা করেছিল, তাদের দেওয়া টাকা সংক্রান্ত নথি থেকেই স্পষ্ট, আমাদের সিস্টেমের মধ্যে দুর্নীতির সংস্কৃতি কতটা গভীরভাবে গেঁথে রয়েছে । লাখ লাখ টাকা যেভাবে হাতবদল হচ্ছে, তাতে দেশের সম্মান ধুলোয় লুটোচ্ছে এবং আরও মামলার তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা চমকে দেওয়ার মতো বেড়ে চলেছে ।

সাতান্ন বছর আগে ‘অল ফুলস ডে’ (1 এপ্রিল)-তে তৈরি হয়েছিল সেন্ট্রাল বিওরো অফ ইনভেস্টিগেশন । শাসনের যন্ত্র হিসাবে তার মানের ক্রমশ অবনতি হয়েছে এবং ইন্দিরা গান্ধির সময়ে তা দুর্নীতিতে ভরে যায় । বহুবার আদালত বলেছে, এই সংস্থা কেন্দ্র সরকারের খাঁচাবন্দি তোতায় পরিণত হয়েছে । যদিও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সিবিআইকে শক্তিশালী তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে উঠে আসতে হবে, যার ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করবে না । কাজের মাধ্যমেই সবার প্রশংসার যোগ্য হয়ে উঠতে হবে । কিন্তু সংস্থার উন্নতির কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না । রাজনৈতিক চাপ ও অন্যান্য কারণে বহু মামলা হারিয়ে যায় । অনেকেই মনে করেন, নেতাদের হস্তক্ষেপ ছাড়া, ব্যাপক দুর্নীতিও বর্তমান দুরবস্থার প্রধান কারণ ।

আরও পড়ুন :দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে অস্বাভাবিক বৃষ্টির জন্য দায়ি 'লা নিনা' আদতে কী ?

সিবিআই গর্বিতভাবে দাবি করে যে সততা, পরিশ্রম, নিরপেক্ষতা হল তাদের তিনটি নীতি!

সিবিআই রাজনৈতিক নেতাদের সুরে সুর মেলানোর জন্য সুপরিচিত এবং বারংবার নির্লজ্জভাবে নিজেদের মেরুদণ্ডহীন বলে প্রমাণ করেছে । দু’বছর আগে অলোক ভার্মা এবং রাকেশ আস্থানার সংঘাত পুরো সংস্থাকেই ঝাঁকিয়ে দিয়েছিল । সেইসময় আস্থানী একটি বিশেষ তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যারা মইন কুরেশি নামে এক মাংস-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছিল । সিবিআই অলোক ভার্মার নেতৃত্বে একটি এফআইআর দায়ের করে, তখন দু’মাসের মধ্যে তাঁর অবসর নেওয়ার কথা । মোদ্দা কথায়, দুর্নীতির মামলায় প্রধান কালপ্রিট হলেন আস্থানা স্বয়ং, যিনি স্পেশাল ডিরেক্টরের ক্ষমতাবলে কলকাঠি নাড়ছিলেন! সতীশ নামে এক ব্যক্তির জবানবন্দি তোলপাড় ফেলে দেয়, যেখানে তিনি বলেন সিবিআইয়ের জাল থেকে বেরোনোর জন্য তিনি ৩ কোটি টাকা দিলেও অফিসাররা তাঁকে হয়রান করছেন । গত মার্চে রাকেশ আস্থানাকে সিবিআই ক্লিনচিট দেওয়ার পর বিশেষ আদালত মামলাটি খারিজ করে, এবং এই সংঘাত সরকারিভাবে শেষ হয় । অভিযোগ ছিল, ঘুষ দেওয়া হয়েছে এবং আরও ঘুষ চাওয়া হয়েছে । তবুও কাউকেই দোষী প্রমাণ করা যায়নি!

এখন মুম্বই ও উত্তর প্রদেশে বহু কোটি টাকার ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে এবং বহু অফিসারই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত । কেউ জানে না শেষ পর্যন্ত কী হবে । সিবিআই খুবই দক্ষ এটা প্রমাণ করতে যে অপরাধটা সত্য, আর মামলাটা মিথ্যে । প্রশ্ন হল, ডিপার্টমেন্টের চোরেদের ক্ষেত্রে এটা আলাদা হবে কিনা ।

আরও পড়ুন : জানুন কে এই জো বাইডেন ?

2019 সালের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, গুরুগ্রামে ভুপিন্দর সিং হুডা সরকারের 1400 একর জমি অধিগ্রহণ বিতর্ক-মামলায় সিবিআই গা ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছে । 2009 সালের মামলা এখনও ঝুলে থাকায় কড়া সমালোচনা করেছে আদালত । এবার সিবিআইয়ের দক্ষতা কেমন সেটা দেখা যাবে এবং তারা নিজেদের ঘরের অভিযোগগুলো কতটা সফলভাবে মেটায়, সেদিকেও নজর রাখা হবে । কেন্দ্রের বক্তব্য, তিন বছরে 36 জন সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে । এই তালিকা দীর্ঘ হয়েই চলেছে । দেড় দশক পর সিবিআই তাদের ক্রিমিনাল ম্যানুয়ালে রদবদল করেছে । এখন থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের আওতায় সমস্ত তদন্ত সর্বাধিক 9 মাসের মধ্যে শেষ করে ফেলা হবে । যদি নিজেদের মধ্যে থাকা চোরদের বিরুদ্ধে সিবিআই এই ডেডলাইন সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারে, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে ।

আরও পড়ুন : বিদেশি ও ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্সে সামঞ্জস্য আনার দাবি

দশ বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের মাথায় পিজে থমাসের নিয়োগ খারিজ করে দিয়েছিল । আদালত বলেছিল, কীভাবে নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকা এক ব্যক্তি দুর্নীতি দমনে সবথেকে বড় সংস্থার দায়িত্বে আসতে পারেন? সিবিআইয়ের ওপর দুর্নীতি খুঁজে বার করার দায়িত্ব যেমন রয়েছে, তাদের উচিত অভ্যন্তরীণ অপরাধীদেরও কড়া হাতে শাস্তি দেওয়া । আমেরিকায় এফবিআই (ফেডারেল বিওরো অফ ইনভেস্টিগেশন) এবং সিআইএ (সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি) নিয়ন্ত্রিত হয় বিশেষ আইনের মাধ্যমে । রাশিয়া, জার্মানি ও জাপানেও তদন্তকারী সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট নিয়মের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে কাজ করে । উল্টোদিকে ভারতের সিবিআই একদিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং অন্যদিকে ব্যর্থ তদন্তপদ্ধতিতে জর্জরিত, যার জন্য তারা মানুষের হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে । দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হয়ে নিজেরাই গলা পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে ডুবে – কোনও সংস্থার কাছে এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে? একমাত্র যদি দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মীরা দ্রুত কঠোর শাস্তি পায়, অন্যদেরও সংশোধন হবে, এবং তারা আর দুর্নীতি করতে সাহস করবে না । এর ফলে সিবিআইও তাদের ভাবমূর্তি উন্নত করে হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে । আপনি কী বলেন?

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.