দিল্লি, 10 সেপ্টেম্বর : আজ জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে উঠতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর ইশু ৷ 9 সেপ্টেম্বর থেকে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় শুরু হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংসদের (UNHRC) 42 তম অধিবেশন । চলবে 27 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । এই অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই যোগ দিয়েছে । অধিবেশনে জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকারের বিষয়টি তুলবে বলে পাকিস্তান জানিয়েছে । তবে পাকিস্তানের বিরোধিতায় পালটা প্রস্তুতি নিয়েছে ভারতও ।
অধিবেশনে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহেমুদ কুরেশি জেনেভা গেছেন ৷ তিনি অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবেন ৷ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি টুইট করেছেন, "জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি পাকিস্তান অবশ্যই অধিবেশনে তুলবে ।" ভারতের তরফে প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন বিদেশমন্ত্রকের সচিব বিজয় ঠাকুর সিং ৷ এছাড়া থাকবেন ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া ৷ আজ দুপুরে পাকিস্তানের প্রতিনিধি কুরেশি অধিবেশনে তাঁর বক্তব্য রাখবেন । তাঁর বক্তব্যের পর ভারতের প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্য পেশ করবেন ৷ কিন্তু ভারতের তরফে জেনেভায় কোনও মন্ত্রীকে না পাঠিয়ে কেন শুধুমাত্র সচিবকেই পাঠানো হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে ভারত জম্মু-কাশ্মীর বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের মনোভাবকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশেষ আমল দিতে চায় না বলেই পাঠানো হয়নি কোনও মন্ত্রী ৷
8 অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার । এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে পাকিস্তান । যদিও আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা এই ইশুতে চিন ছাড়া কাউকে পাশে পায়নি । 370 ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টিও অধিবেশনে পাকিস্তান তুলবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । জম্মু-কাশ্মীর ইশুতে পাকিস্তানের বক্তব্যের পালটা বেশ কয়েকটি বিষয় অধিবেশনে উত্থাপন করতে পারে ভারত ৷ সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, জোর করে হিন্দু ও শিখদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করা ইত্যাদি । এছাড়া পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট বালতিস্তানে শিয়া সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টিও বৈঠকে উত্থাপন করতে পারে ভারত ৷ ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর ইশুতে UNHRC-র 47টি সদস্য দেশের সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয়েছে ভারত ৷
এদিকে, জম্মু-কাশ্মীর ইশুতে যাতে দুইদেশের মধ্যে যাতে শান্তি বজায় থাকে তার জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের হাইকমিশনার মিশেল বাচলেট ৷ ভারতের কাছে তাঁর আবেদন ,"জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ যাতে সঠিক পরিষেবা পায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করুক ভারত । এছাড়া সেখানে যাদের আটক করা হয়েছে তারাও যেন যোগ্য মর্যাদা ও সুবিধা পায় । " ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের কাছেই মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি ৷ জম্মু-কাশ্মীর ইশুতে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে মানিবাধিকারকে সুরক্ষিত রাখাই এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করছেন ৷ মিশেলের এই আবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন কুরেশি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ৷ UNHRC-কে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করার আবেদন জানিয়েছেন ইমরান ৷ মিশেলের বক্তব্যের পালটা উত্তর ভারতের তরফে এখনও পাওয়া যায়নি ৷ তবে আজ অধিবেশনে ভারত তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে খবর ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের এক আধিকারিকের কথায়, "আমাদের যা বলার আমরা আজকের অধিবেশনে বলব" ৷