ETV Bharat / bharat

কোরোনা ভাইরাসের মিউটেশন নির্ণয়, পর্যাপ্ত প্রযুক্তি রয়েছে ভারতে

author img

By

Published : Apr 28, 2020, 7:11 PM IST

ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা পদক্ষেপ হল পরীক্ষার হার বৃদ্ধি করা । পাশাপাশি সরকার এবং স্বাস্থ্যবিদদের জারি করা সতর্কতামূলক নির্দেশাবলী মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷

Novel corona virus vaccine
কোরোনা ভাইরাস প্রতিষেধক

IIT দিল্লির বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস–এর বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত সইদ ই হাসনৈন বলেছেন যে, ‘‘নভেল কোরোনা ভাইরাসের মিউটেশন নির্ণয় এবং ভাইরাসের জিনোম ক্রমপর্যায় পাঠোদ্ধার করার জন্য যে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি প্রয়োজন, তা ভারতের আছে ।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ভারতীয় সংগঠনগুলি ভাইরাস প্রতিরোধের ওষুধ এবং প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করে চলেছে ।

অধ্যাপক হাসনৈন, যিনি একজন বৈজ্ঞানিক নীতি উপদেষ্টাও বটে, জানিয়েছেন যে, প্রতিষেধক তৈরি করতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে । জনসাধারণকে তাঁর পরামর্শ, সরকার এবং স্বাস্থ্যবিদদের জারি করা সতর্কতামূলক নির্দেশাবলী মেনে চলুন । এছাড়াও তাঁর মতে, ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা পদক্ষেপ হল পরীক্ষার হার বৃদ্ধি করা । অধ্যাপক হাসনৈনকে ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানির ‘অর্ডার অফ মেরিট’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল । 2016 সালে তিনি জামিয়া হামদর্দের উপাচার্য পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন । এনাডুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হল ।

কী কারণে এই নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হল? আমরা কি একে আগে থেকে সনাক্ত করতে পারি? নতুন ভাইরাসের উদ্ভব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । ভাইরাস কণা ধীরে ধীরে বিকশিত হয় । এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে কয়েক দশক লেগে যায় । এই ভাইরাসের ভৌগোলিক উৎপত্তিস্থলও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আগে থেকে একে সনাক্ত করা কার্যত অসম্ভব । COVID-19 এর মূলে থাকা SARS-COV-2 কোথা থেকে এসেছে, তা নির্দিষ্ট করে বলা খুব কঠিন । নোবেলজয়ী লুক মন্টাগনিয়ের, যিনি HIV আবিষ্কার করেছিলেন, জানিয়েছেন নভেল কোরোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে গবেষণাগারে । ভারতে COVID-19 নিয়ে গবেষণার কী কী সুবিধা আছে? এই ভাইরাসের জিনোম ক্রমপর্যায় চিহ্নিত করা এবং তার জেনেটিক মিউটেশন নির্ধারণ করার জন্য কিছু মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দরকার । COVID-19 প্রতিরোধী ওষুধ এবং প্রতিষেধক গড়ে তোলায় আমরা পারর্দশী । আমাদের দেশের মধ্যে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) ইমিউনো বায়োলজিক্যাল ওষুধের সেরা প্রস্তুতকারক । অতীতে, হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক তৈরি করেছিল ROTAVAC (রোটাভাইরাসের প্রথম প্রতিষেধক) এবং বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিল ।

প্যানডেমিক নিয়ন্ত্রণে ভারতের ভূমিকা কেমন? আমরা সঠিক পথে রয়েছি । ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের দায়ভার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের (ICMR) হাতে অর্পণ করে GoI সঠিক পদক্ষেপ করেছে । প্রতি দিন কাউন্সিল 30 হাজার পরীক্ষা করছে । আগামী দিনগুলিতে পরীক্ষা সংখ্যা বাড়বে । অ্যামেরিকা, স্পেন, ইতালি এবং ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারতে কোরোনা সংক্রমণের সংখ্যা কম ।

প্রতিষেধক তৈরি করতে কত সময় লাগবে? বেশ কিছু সংগঠন এ নিয়ে কাজ করে চলেছে । বিশ্বজুড়ে অন্তত পাঁচটি প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অপেক্ষা চলছে । BCG মডেলের উপর নির্ভর করে SII পুণে একটি প্রতিষেধক তৈরির কাজ করে চলেছে । ভারত বায়োটেকও এর উপর কাজ করছে । প্রতিষেধক তৈরি করতে কয়েক মাস থেকে এক বছরও লেগে পারে । হাসনৈন জানান, ‘‘জামিয়া হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক মাস ধরে COVID-19 নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছি ।’’ নভেল কোরোনা ভাইরাস থেকে ভারতীয়দের কি ব্যতিক্রমী অনাক্রম্যতা রয়েছে? কিছু কিছু বিষয়, যেমন কম সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা এ কথার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে ভারতীয়দের অনাক্রম্যতা বেশ মজবুত । তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এটা এখনও প্রমাণিত হয়নি । যে সব দেশে BCG প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এবং সেখানে COVID-19 এ মৃত্যুর হার কম ।

জনগণকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন? এখনও পর্যন্ত COVID-19 এর কোনও প্রতিষেধক নেই । যতক্ষণ না কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক আসছে, ততক্ষণ আমাদের সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে নিজেদের রক্ষা করতে হবে । সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন জারি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া পদক্ষেপ । এর পাশাপাশি আমাদের ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যরক্ষার দিকে জোর দিতে হবে, মাস্ক পরতে হবে এবং 20 সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে নির্দিষ্ট ব্যবধানে, বার বার।

IIT দিল্লির বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস–এর বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত সইদ ই হাসনৈন বলেছেন যে, ‘‘নভেল কোরোনা ভাইরাসের মিউটেশন নির্ণয় এবং ভাইরাসের জিনোম ক্রমপর্যায় পাঠোদ্ধার করার জন্য যে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি প্রয়োজন, তা ভারতের আছে ।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ভারতীয় সংগঠনগুলি ভাইরাস প্রতিরোধের ওষুধ এবং প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করে চলেছে ।

অধ্যাপক হাসনৈন, যিনি একজন বৈজ্ঞানিক নীতি উপদেষ্টাও বটে, জানিয়েছেন যে, প্রতিষেধক তৈরি করতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে । জনসাধারণকে তাঁর পরামর্শ, সরকার এবং স্বাস্থ্যবিদদের জারি করা সতর্কতামূলক নির্দেশাবলী মেনে চলুন । এছাড়াও তাঁর মতে, ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা পদক্ষেপ হল পরীক্ষার হার বৃদ্ধি করা । অধ্যাপক হাসনৈনকে ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানির ‘অর্ডার অফ মেরিট’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল । 2016 সালে তিনি জামিয়া হামদর্দের উপাচার্য পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন । এনাডুর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হল ।

কী কারণে এই নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হল? আমরা কি একে আগে থেকে সনাক্ত করতে পারি? নতুন ভাইরাসের উদ্ভব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । ভাইরাস কণা ধীরে ধীরে বিকশিত হয় । এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে কয়েক দশক লেগে যায় । এই ভাইরাসের ভৌগোলিক উৎপত্তিস্থলও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আগে থেকে একে সনাক্ত করা কার্যত অসম্ভব । COVID-19 এর মূলে থাকা SARS-COV-2 কোথা থেকে এসেছে, তা নির্দিষ্ট করে বলা খুব কঠিন । নোবেলজয়ী লুক মন্টাগনিয়ের, যিনি HIV আবিষ্কার করেছিলেন, জানিয়েছেন নভেল কোরোনা ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে গবেষণাগারে । ভারতে COVID-19 নিয়ে গবেষণার কী কী সুবিধা আছে? এই ভাইরাসের জিনোম ক্রমপর্যায় চিহ্নিত করা এবং তার জেনেটিক মিউটেশন নির্ধারণ করার জন্য কিছু মৌলিক সুযোগ-সুবিধা দরকার । COVID-19 প্রতিরোধী ওষুধ এবং প্রতিষেধক গড়ে তোলায় আমরা পারর্দশী । আমাদের দেশের মধ্যে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) ইমিউনো বায়োলজিক্যাল ওষুধের সেরা প্রস্তুতকারক । অতীতে, হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক তৈরি করেছিল ROTAVAC (রোটাভাইরাসের প্রথম প্রতিষেধক) এবং বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিল ।

প্যানডেমিক নিয়ন্ত্রণে ভারতের ভূমিকা কেমন? আমরা সঠিক পথে রয়েছি । ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের দায়ভার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের (ICMR) হাতে অর্পণ করে GoI সঠিক পদক্ষেপ করেছে । প্রতি দিন কাউন্সিল 30 হাজার পরীক্ষা করছে । আগামী দিনগুলিতে পরীক্ষা সংখ্যা বাড়বে । অ্যামেরিকা, স্পেন, ইতালি এবং ফ্রান্সের মতো উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারতে কোরোনা সংক্রমণের সংখ্যা কম ।

প্রতিষেধক তৈরি করতে কত সময় লাগবে? বেশ কিছু সংগঠন এ নিয়ে কাজ করে চলেছে । বিশ্বজুড়ে অন্তত পাঁচটি প্রতিষেধকের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অপেক্ষা চলছে । BCG মডেলের উপর নির্ভর করে SII পুণে একটি প্রতিষেধক তৈরির কাজ করে চলেছে । ভারত বায়োটেকও এর উপর কাজ করছে । প্রতিষেধক তৈরি করতে কয়েক মাস থেকে এক বছরও লেগে পারে । হাসনৈন জানান, ‘‘জামিয়া হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক মাস ধরে COVID-19 নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছি ।’’ নভেল কোরোনা ভাইরাস থেকে ভারতীয়দের কি ব্যতিক্রমী অনাক্রম্যতা রয়েছে? কিছু কিছু বিষয়, যেমন কম সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা এ কথার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে ভারতীয়দের অনাক্রম্যতা বেশ মজবুত । তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এটা এখনও প্রমাণিত হয়নি । যে সব দেশে BCG প্রতিষেধক তৈরির কাজ চলছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এবং সেখানে COVID-19 এ মৃত্যুর হার কম ।

জনগণকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন? এখনও পর্যন্ত COVID-19 এর কোনও প্রতিষেধক নেই । যতক্ষণ না কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক আসছে, ততক্ষণ আমাদের সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে নিজেদের রক্ষা করতে হবে । সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন জারি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া পদক্ষেপ । এর পাশাপাশি আমাদের ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যরক্ষার দিকে জোর দিতে হবে, মাস্ক পরতে হবে এবং 20 সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে নির্দিষ্ট ব্যবধানে, বার বার।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.