দিল্লি, 19 জুলাই : মোটা অঙ্কের সুদের লোভ দেখিয়ে নিজের সংস্থা IMA-র অধীনে পনজ়ি স্কিম চালু করেছিল মহম্মদ মনসুর খান । এই স্কিমের মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারণা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল তাকে । তার সংস্থায় টাকা রেখে প্রায় 23 হাজারেরও বেশি আমানতকারী প্রতারিত হয়েছে বলে অভিযোগ । সেই IMA গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক মহম্মদ মনসুর খানকে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) ও ED-র হেপাজতে রয়েছে সে ।
পনজ়ি দুর্নীতিতে গতকাল গভীর রাতে IMA (আই মনেটারি অ্যাডভাইজ়রি)-র কর্তা মনসুরকে গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) । দুবাই থেকে দিল্লি অবতরণের পরই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে ।
মনসুর খানের বিষয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) জানিয়েছে, সংস্থায় প্রায় 4084 কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল, কিন্তু এর মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়েছে 1400 কোটি টাকা । দুবাই যাওয়ার আগে মনসুর না কি বিনিয়োগকারীদের বলেছিল, দেশে ফিরেই টাকাও ফিরিয়ে দেবে সে । কিন্তু সে সবই ছিল ভুয়ো প্রতিশ্রুতি ।
মনসুরের সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করেছে ED । গ্রাহকদের প্রতারণা করা হয়েছে, এমন কয়েক হাজার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে SIT । খান ছাড়াও মোট 22 জনকে গ্রেপ্তার করেছে SIT । IMA সংস্থার 12 অধিকর্তা, বেঙ্গালুরুর আরবান ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার বিজয় শংকর, সহকারী কমিশনার এলসি নাগারাজ, বেঙ্গালুরুর ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি অফিসার, বৃহৎ বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকের এক কর্পোরেটর ও একজন হিসাবরক্ষককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।
আমানতকারীদের তরফে প্রথম লিখিত অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েছিল, তারপরই সে দুবাই পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ । সূত্রের খবর, মহম্মদ মনসুর খানের নামে লুক-আউট নোটিশও জারি করে কেন্দ্রীয় সংস্থা ।
মনসুরের বিরুদ্ধে সমন জারি হয়েছিল 24 জুন । ইন্টারপোলকে অনুরোধ করা হয়, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্লু কর্নার নোটিশ জারি করতে ।
এদিকে দুবাই পালানোর আগে কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক আর রোশন বেগও এই ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেছিল মনসুর । শিবাজিনগরের এই বিধায়ক 400 কোটি টাকা নিয়ে ফেরত দেয়নি বলেও অভিযোগ ছিল । যদিও বেগ এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন আগেই, সেকারণে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারও করা হয় তাকে ।
সোমবার একটি ভিডিয়ো মেসেজ প্রকাশ করে মনসুর । সেখানে সে বলে, ''দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে । তবে দেশ ছাড়াটাই ছিল সবচেয়ে বড় ভুল । কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে দেশ ছাড়তে হয়েছিল । আমি জানি না আমার পরিবার কোথায় এখন ?'' ওই ভিডিয়োয় সে জানিয়েছিল, 24 ঘণ্টার মধ্যে সে দেশে ফিরছে ।
এর আগে 23 জুন মনসুর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশে জানায়, দেশে ফিরতে চায় সে । ব্যবসায় ক্ষতির জন্য যারা দায়বদ্ধ, তাদের সবার কথা পুলিশকে জানাতে চায় ।
9 জুন মনসুরের এক বন্ধু ব্যবসার অংশীদার মহম্মদ খালিদ আহমেদ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, মনসুর তাঁর 4 কোটি 80 লাখ টাকা গায়েব করে দিয়েছে । মার্চ থেকেই তার পনজ়ি স্কিমের আমানতকারীদের সুদ দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল মনসুর ।
