দিল্লি, ৪ মার্চ : পাকিস্তানের হেপাজত থেকে দেশের মাটিতে পা রাখার পর তিনদিনও কাটেনি। ইতিমধ্যে দ্রুত ককপিটে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। হাসপাতালে থাকাকালীন নিজের ঊর্ধ্বতন কমান্ডার ও চিকিৎসকদের কাছে এই ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। সংবাদসংস্থা PTI সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে জইশের তিনটি ট্রেনিং ক্যাম্পে অভিযানের পর বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তান বায়ুসেনার F-১৬ যুদ্ধবিমান। পালটা তাড়া করে ভারতীয় বায়ুসেনার কয়েকটি বিমান। এর মধ্যে একটি MiG-২১ বাইসন বিমান চালাচ্ছিলেন অভিনন্দন। তিনি একটি F-১৬ বিমানকে ঘায়েল করেন। কিন্তু পাকিস্তানের বিমানের পালটা মিজ়াইল হানায় অভিনন্দনের বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিমানটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় অভিনন্দন বিমান থেকে প্যারাসুটে ঝাঁপ দেন। কিন্তু, হাওয়ার গতি বিপরীতমুখী থাকায় তিনি ভারতের দিকে না গিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ল্যান্ড করেন। সেখানে পাকিস্তানের সেনা তাঁকে নিজেদের হেপাজতে নেয়। অভিনন্দনের রক্তাক্ত মুখের একটি ভিডিয়ো পাক সেনার তরফে প্রকাশ করার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেনেভা কনভেনশন চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ তোলে ভারত। অবশ্য বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। দীর্ঘ টালবাহানার পর শুক্রবার (১ মার্চ) রাত ৯টা ২১ মিনিটে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখেন উইং কমান্ডার। সেদিন রাতেই তাঁকে দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের রিসার্চ অ্যান্ড রেফারাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত দুদিন ধরে সেখানেই তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। আরও এক সপ্তাহের বেশি তাঁকে হাসপাতালেই কাটাতে হবে বলে জানা গেছে।
কিন্তু, আর তর সইছে না অভিনন্দন বর্তমানের। হাসপাতালের চিকিৎসকদের তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব ফের নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গায় ফিরতে চান। চিকিৎসকরা জানান, পাকিস্তানে মানসিক নির্যাতন সইতে হলেও রীতিমতো উত্তেজনায় ফুটছেন উইং কমান্ডার। তা দেখে চিকিৎসকরা তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব ককপিটে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁরা বলেন, "তিনি যাতে তাড়াতাড়ি ককপিটে ফিরতে পারেন সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।" যে পরিবারের তিন প্রজন্ম দেশের বায়ুসেনায় রয়েছে, সেই পরিবারের সন্তানের রক্তে এরকম উদ্যম থাকবে, তা বলাইবাহুল্য বলে মত প্রাক্তন জওয়ানদের। আর সেই উদ্যমের উপর ভর করেই আগামী দিনেও দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চান উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান।