বাচ্চাদের মধ্যে আগেভাগে কোরোনা উপসর্গ চিহ্নিত করা এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ । এনিয়ে হায়দরাবাদের রেনবো হাসপাতালের নিওনেটাল পেডিয়াট্রিশিয়ান বিজয়ানন্দ জামালপুরীর সঙ্গে কথা বলেছে ETV ভারত সুখীভব ।
বাচ্চাদের মধ্যে কোরোনা সংক্রমণ কতটা সাধারণ ?
আমরা সঠিক তথ্যটা জানি না। কারণ, বিশ্বজুড়ে সমীক্ষাগুলিতে উপসর্গবিহীন শিশুদের পরীক্ষা করা হয়নি । যদিও আমরা জানি, কোরোনা সদ্যোজাত থেকে 18 বছর বয়সি- সবাইকে সংক্রমিত করতে পারে । অর্থাৎ, বিশ্বজুড়ে শিশু চিকিৎসার সম্পূর্ণ ক্ষেত্রটাকেই ।
বড়দের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে ছোটোদের মধ্যে কোরোনা অসুস্থতা কতটা আলাদাভাবে দেখা দেয় ?
ব্রিটেন, অ্য়ামেরিকা এবং চিন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের মধ্যে 2 শতাংশ শিশু, যা রোগের ব্যাপ্তিকে ধরলে খুবই সামান্য অংশ । কোরোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশু 5 শতাংশ এবং সংক্রমণের মাত্রা মৃদু থেকে মাঝামাঝি। তা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে কোরোনার জেরে একটা “পেডিয়াট্রিক মাল্টি-সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম” তৈরি হয়েছে যেখানে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জ্বালা করছে । এক্ষেত্রে আপনার শরীরেই ইমিউনিটি বেড়ে গিয়ে অন্যান্য অঙ্গগুলির উপর প্রভাব ফেলে । কিন্তু, এক্ষেত্রেও আক্রান্ত শিশুর অনুপাত অনেক কম । এই গুরুতর অসুস্থতা সবসময় দেখা যায় না; এক হাজার আক্রান্ত শিশুর মধ্যে একজনের হয় ।
বাচ্চাদের মধ্যে আপনি কী ধরনের উপসর্গ দেখতে পেয়েছেন এবং কখন বাবা-মার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত ?
জ্বর
সবথেকে বেশি দেখা যায় জ্বর এবং তার সঙ্গে কাশি ও মাথাব্যথা । মাথাব্যথা ততটা বেশিও দেখা যায় না (কোরোনা উপসর্গ নিয়ে আসা চারজন শিশুর মধ্যে একজনের মাথাব্যথা থাকতে পারে) । গলায় জ্বালা বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় না । দ্বিতীয়ত, একদম ছোট্টরা, বিশেষ করে প্রি-স্কুলের বাচ্চারা বলতে পারে না যে তাদের গলায় জ্বালা করছে কি না । তারা অনবরত কাঁদতে থাকে অথবা খেতে চায় না, বা খাবার গিলতে কষ্ট হয় এবং লালা ঝরতে থাকে ।
অন্যান্য উপসর্গ হতে পারে- শরীরে যন্ত্রণা । একটু বড় বাচ্চা আপনাকে সেটা বলতে পারবে, কিন্তু একদম ছোটোরা তাদের খেলা বন্ধ করে দেবে বা কাঁদবে । বমি বা ডায়েরিয়াও দেখা যেতে পারে । শ্বাসকষ্ট বেশি হয় না । সক্রিয়তা অনেকটা কমে যাওয়া এবং স্বাভাবিক আচরণের বাইরে কিছু । যেমন- বাচ্চা হয়ত উঠে দাঁড়াতে বা নড়তে চাইছে না । সাধারণভাবে জ্বর হলে বাচ্চাদের সক্রিয়তা কিছুটা কমে যায়, কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা আরও স্পষ্ট । এই উপসর্গগুলি সম্পর্কে বাবা-মা-রা সচেতন হলে এটা নিশ্চিত করা যাবে যে প্রতিটি বাচ্চা সময়ে চিকিৎসা পাবে ।