সিমলা, 6 জুন : দেশে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে এমন প্রায় 27টি কীটনাশক ভারতীয় বাজারে বন্ধ করার পথে কেন্দ্র । মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীকুলের শরীরে এই ধরনের কীটনাশকগুলির ক্ষতিকর প্রভাবের কথা মাথায় রেখেই এই কীটনাশকগুলি নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র । আর এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে হিমাচলপ্রদেশের কৃষকদের মাথায় । বাজারে বিকল্প কীটনাশক না আসলে চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা ।
জৈব চাষের প্রক্রিয়ায় ফলন কম হবে । কাশ্মীর ও হিমাচলপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে অ্যাপেল স্ক্যাবের কারণে প্রতিবছর অনেক গাছের ক্ষতি হয় । এই কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেলে গাছের রোগগুলি কীভাবে দূর করা সম্ভব হবে, তা নিয়েই এখন ভাবতে হবে । এমনই মনে করছেন ডিম্পল পাঞ্জাতা নামের এক প্রোগ্রেসিভ গার্ডেনার ।
ডিম্পল পাঞ্জাতার সুরেই কথা বলছেন হিমাচলপ্রদেশের এক আপেল চাষি প্রেম শর্মা । তিনি বলেন, "সরকার যদি কীটনাশকের ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তবে তার আগে বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করা প্রয়োজন । নাহলে প্রচুর ক্ষতি হয়ে যাবে ।"
তবে হিমাচলপ্রদেশের উদ্যানপালন দপ্তরের ডিরেক্টর মদন মোহন শর্মা বলছেন, চাষিদের এবিষয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই । কৃষক ও উদ্যানপালকদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে বিকল্প থাকছে বলেই দাবি করছেন তিনি । মদন মোহন শর্মার মতে, "সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিশেষ কোনও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না সাধারণ মানুষকে । সরকারের তরফে চারটি বিকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এগুলি প্রতি মরশুমে একবার করে স্প্রে করা যাবে । কৃষক ও উদ্যানপালকরা এই চার ধরনের বিকল্পের মধ্যে যে কোনও একটি ব্যবহার করতে পারবে ।"
20 মে কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয় যে, বর্তমান বাজারে বিক্রি হয় এমন 66টি কীটনাশকের মধ্যে 27টি কীটনাশকের গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখা হবে । 2013 সালে তৈরি অনুপম ভার্মা কমিটি এই কীটনাশকগুলির গুণগত মান পরীক্ষা করবে । এই কমিটি বিশ্ব বাজারে এক বা একাধিক দেশ থেকে নিষিদ্ধ হওয়া কীটনাশক বা বাজার থেকে তুলে নেওয়া কীটনাশক যেগুলি এখনও ভারতীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে, সেগুলির পরীক্ষা করে । এই কমিটির নতুন তালিকায়,কাপতান, কার্বেন্ডাজ়িম, ক্লোরপাইরাইফস, বুচলর, ম্যানকোজ়েব এম 45, জিনোম, জ়িরাম, জ়িনেমসহ একাধিক কীটনাশককে বন্ধ করা হয়েছে । এই সমস্ত কীটনাশকগুলির মানষ ও বাকি প্রাণীকুলের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ওই কমিটি ।