চণ্ডীগড়, 26 সেপ্টেম্বর: বিতর্কিত তিনটি কৃষি বিলের প্রতিবাদে আন্দোলন আরও জোরালো করতে আগামী 29 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত "রেল রোকো"(ট্রেন থামাও) আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী করার সিদ্ধান্ত পঞ্জাবের কৃষকদের৷ "কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে বিরোধীরা৷" কেন্দ্রের সেই দাবিও নস্যাৎ করেছেন তাঁরা ৷ তাঁরা জানিয়েছে, "বিরোধীরা আমাদের বিভ্রান্ত করেনি ৷ আমরা বিলের মুদ্রিত কপি পড়েছি৷"
কিষাণ মজদুর সংগ্রাম সমিতির রাজ্য সম্পাদক, সারওয়ান সিং পান্ধে ৷ যিনি সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হওয়া "কৃষকবিরোধী" তিনটি বিল পঞ্জাবি ভাষায় অনুবাদ করেছেন এবং সেখানকার কৃষকদের মধ্যে বিরতণ করেছেন ৷ তিনি বলেন, " প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের দোষারোপ করছেন ৷ তিনি বলছেন বিরোধীরা আমাদের (কৃষকদের) বিলের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করছে ৷ এটি সঠিক নয় ৷ আমরা অধ্যাদেশ (এখন বিল) পরেছি ৷"এই বিলের পেছনে পুঁজিবাদীদের হাত রয়েছে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন ৷ তিনি বলেন, "কৃষি আইনে এই পরিবর্তনগুলি আনার জন্য দেশের পুঁজিবাদীরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রেরণা দিয়েছেন ৷ কিন্তু আমরা এই বিলের কাছে মাথানত করবো না ৷" সারওয়ান সিং পান্ধে বলেন, " আমাদের সঙ্গে সারা দেশের কৃষকদের সমর্থন রয়েছে ৷ এই আন্দোলন দেশের একটি বৃহৎ জনগনের আন্দোলন ৷ প্রধানমন্ত্রীকে "কৃষক বিরোধী" এই বিল প্রত্যাহার করতেই হবে ৷ কৃষক আইনে এই পরিবর্তনগুলি কার্যকরি করতে পারবেন না তিনি৷"একই সঙ্গে তিনি জানিয়েদেন বিল বিরোধী এই আন্দোলন কৃষকদের ৷ তাই কোনও রাজনৈতিক দলকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হতে দেওয়া হবে না ৷
পঞ্জাবে রেল লাইন উপর কৃষকদের তিনদিন ধরে ক্রমাগত "রেল রোকো" আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যেই কমকরে 28টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে ৷ যদিও রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত সংশোধিত সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি ৷
কৃষি বিল 2020 প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার দেশজুড়ে আন্দোলনে সারা ভারত কিষাণ মজদুর সংগ্রাম সম্বন্বয় কমিটির 265 টির বেশি কৃষক সংগঠন যোগদান করে৷ পাশাপাশি যারা কিষাণ মজদুর সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন 100টির কাছাকাছি কৃষক সংগঠন এই আন্দোলনে যোগদান করে ৷ দেশজুড়ে কোরোনা আবহের মধ্যেই জাতীয় সড়ক, রেল লাইন অবরোধ করে হাজার হাজার কৃষক ৷ এই আন্দোলন ভারত বনধের একটি অংশ মাত্র ৷ যতক্ষণ না পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সারা মিলবে ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে ৷ প্রয়োজনে প্রতিবাদে আন্দোলন আরও জোরালো করার হুশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা ৷
যদিও শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রী BJP-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন "তারা যেন কৃষকদের কাছে যায় এবং তাঁদের এই বিলের গুরুত্ব একই সঙ্গে বিলের জটিল বিষয়গুলি তাঁদের সামনে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করে৷" কৃষি বিল নিয়ে বিতর্কের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর জোট সঙ্গীরা দাবি করে এসেছেন যে কৃষকদের বিরোধীরা বিভ্রান্ত করছে ৷ যেখানে কৃষকেরা ভয় পাচ্ছেন যে এই বিলের কারণে হয়তো তাঁরা উৎপাদিত দ্রব্যের MSP অর্থাৎ সর্বনিম্ন বিক্রয় মূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন ৷ সেই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থার প্রবেশ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের বিপদের মুখে ফেলবে ৷ যদিও কেন্দ্রের BJP সরকার বারবারই দাবি করে এসেছে যে এই বিলের জন্যই কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত শষ্যের উত্তম মূল্য পাবে ৷ এই বিল কৃষকদের উৎপাদিত শষ্য তাঁদের পছন্দের বাজার ও দামে বিক্রির অনুমতি প্রদান করবে ৷