কোথাও ইলেকট্রিক শক দিয়ে, কোথাও আবার ফায়ারিং স্ক্য়য়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া । এরকম একাধিক উপায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় অপরাধীদের ৷ বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সবথেকে বেশি প্রচলিত পন্থা হল ফাঁসি । তবে একটি মাত্র দেশই আছে যেখানে শরীর থেকে মাথা আলাদা করে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয় ৷ দেশটির নাম সৌদি আরব । সেখানে আজও অপরাধীর শরীর থেকে তলোয়ার দিয়ে এক কোপে মাথা বাদ দিয়ে দেওয়া ৷ তাও আবার জনসমক্ষে ।
অপরাধীর সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানবাধিকার সংগঠনগুলি দাবি তুলে আসছে ৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের 2017 সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত 56 টি দেশের আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে ৷
অ্যামেরিকাতে কোনও অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হলে, তাকে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দেওয়া হয় ৷ সেদেশের প্রশাসনের মতে, এটিই কাউকে মেরে ফেলার সবথেকে মানবিক উপায় ৷ যদিও এই নিয়েও বিতর্ক রয়েছে ৷ ইনজেকশনে কোন ড্রাগ ব্যবহার করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেউ কেউ ৷ অন্য দেশগুলিতে যেসব উপায়ে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়, তা অনেকটাই পুরানো পদ্ধতি বলে মনে করে অ্যামেরিকা ৷ কিন্তু অন্তিম পরিণতি সেই একই ৷ অ্যামেরিকা ছাড়াও চিন ও ভিয়েতনামেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে ৷
মৃত্যুদণ্ডের সবথেকে বেশি প্রচলিত মাধ্যম হল ফাঁসি ৷ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, জাপান-সহ বেশ কিছু দেশে এই পদ্ধতি আজও ব্যবহার করা হয় ৷ 2013 সালের এক রিপোর্ট বলছে, ইরানে শুধু সেই বছরেই 369 জনের ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল ৷
ইন্দোনেশিয়ায় আবার অন্য নিয়ম ৷ অপরাধীকে ফায়ারিং স্ক্য়য়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় ৷ অপরাধীর বুকে গুলি করে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা 12 জন সশস্ত্র ঘাতক ৷ এরপরও যদি ওই অপরাধীর মৃত্যু না হয়, তবে তার মাথায় গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় ৷ ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও চিন, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, তাইওয়ান ও ইয়েমেন একইভাবে অপরাধীকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় ৷ বলে রাখা ভালো, আগে অ্যামেরিকাতেও এই পদ্বতি অবলম্বন করা হতো । 2010 সালের পর থেকে তা বদলে ফেলা হয় ।
প্রাণঘাতী ইনজেকশন দেওয়ার পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দিয়েও অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত ছিল অ্যামেরিকায় ৷ অপরাধীকে একটি বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে শক দিয়ে মারা হতো । 1997 সালে এক অপরাধীকে এভাবে প্রাণদণ্ড দিতে গিয়ে তার মাথা ফেটে আগুন ধরে যায় ৷ 2008 সালে এইভাবে প্রাণদণ্ড দেওয়া আইনত নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় সেই দেশে।
মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা দরকার না তুলে দেওয়া, না নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকবে ৷ কিন্তু আগে, আরও নৃশংসভাবে মারা হতো অপরাধীদের ৷ ইউরোপের একাধিক দেশে ও চিনে চারটি ঘোড়ার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হতো অপরাধীর হাত-পা ৷ ঘোড়াগুলি বিপরীত দিকে দৌড়াত, আর অপরাধীর শরীর ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যেত ৷ অনেক ক্ষেত্রে আবার সিংহের মুখের সামনে ছুড়ে ফেলা হতো অপরাধীকে ৷