দিল্লি, 23 জুন : CBSE-র ক্লাস টুয়েলভ-এর বাকি পরীক্ষা 1 থেকে 15 জুলাইয়ের মধ্যে হবে কি না তা নিয়ে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে । COVID-19'এর সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে । এই পরিস্থিতিতে ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষা নিয়ে চিন্তাভাবনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টকে আজ জানিয়েছে CBSE এবং কেন্দ্র সরকার ।
বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন এবং দীনেশ মহেশ্বরী ও সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, পড়ুয়ারা যে উদ্বিগ্ন সে বিষয়ে কেন্দ্র সরকার এবং CBSE জানে । এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । সলিসিটর জেনেরাল শীর্ষ আদালতকে এই বিষয়টি আজকের মতো মুলতবি করার আবেদন জানান । পাশাপাশি তিনি বলেন, "বোর্ড ও কেন্দ্র যা সিদ্ধান্ত নেবে তা আদালতকে জানানো হবে । এরপর বিচারপতি খান উইল করে নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি 25 জুন পর্যন্ত মুলতবি করে দেন ।
সম্প্রতি কয়েকজন অভিভাবক CBSE-র ফলাফল প্রকাশের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন । শীর্ষ আদালতের কাছে তাঁঁরা আবেদন করেন, "বোর্ডের যে পরীক্ষাগুলো ইতিমধ্যে হয়ে গেছে এবং বাকি বিষয়ে স্কুলের অ্যাসেসমেন্টের উপর ভিত্তি করে যেন ফলাফল প্রকাশ করা হয় । CBSE-র তরফে বাকি পরীক্ষা নিয়ে 18 মে একটি নোটিশ জারি করা হয় । সেখানে ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষার দিনক্ষণ বলে দেওয়া হয়েছিল । ওই নোটিশ বাতিলের জন্য আবেদন জানান অভিভাবকরা । পাশাপাশি আজ আলাদা করে ICSE-র পরীক্ষা নিয়ে আরেকটি মামলার শুনানি গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট । ওই মামলায় ICSE পরীক্ষা বাতিলের আবেদন জানানো হয়েছে । মামলাকারীর তরফে শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়, CBSE পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্র যা সিদ্ধান্ত নেবে তা তারা মেনে চলবে । যদিও বেঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয় ICSE নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, CBSE পরীক্ষা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে তা ICSE-র ক্ষেত্রে লাগু হবে না । CBSE এবং ICSE দু'টি মামলা 25 জুন পর্যন্ত মুলতবি করেছে শীর্ষ আদালত । গতকাল বোম্বে হাইকোর্টের তরফে মহারাষ্ট্র সরকারকে ICSE পরীক্ষার অনুমোদন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হয় । মহারাষ্ট্র সরকার 10 এবং 12 জুলাই ICSE-র বাকি পরীক্ষা ঘোষণা করেছিল । সেই বিষয়ে গতকাল আদালত জানায়, রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক ।
CBSE-র ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষা বাতিলের বিষয়ে 17 জুন আদালতকে বোর্ড জানিয়েছিল, খুব কম সময়ের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে না । দেশজুড়ে কোরোনার পরিস্থিতি এবং কয়েক লাখ পড়ুয়ার সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিবাবকরা । আবেদনে বলা হয়, যদি পরীক্ষা দিতে হয় তাহলে কোরোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে । অভিযোগ কোরোনা পরিস্থিতি বিচার করে CBSE বিদেশে 250 স্কুলের ক্লাস টেন এবং টুয়েলভ-এর পরীক্ষা বাতিল করেছে । পরীক্ষার্থীদের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা এবং স্কুলের অ্যাসেসমেন্ট নম্বরের উপর ভিত্তি করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে । গত এপ্রিল মাসে CBSE দেশের সমস্ত স্কুলকে ক্লাস নাইন এবং ক্লাস ইলেভেনের পড়ুয়াদের স্কুলের অ্যাসেসমেন্টের উপর ভিত্তি করে পাশ করানোর নির্দেশ দেয় ।
25 মে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ ও উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, CBSE ক্লাস টেন ও ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষা 15 হাজার কেন্দ্রে নেওয়া হবে । আগে যা তিন হাজার কেন্দ্রে নেওয়া হত । পড়ুয়াদের সুরক্ষা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচ গুণ বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র । কিন্তু এর ফলে পড়ুয়াদের জীবন বিপদের দিকে ফেলে দেওয়া হবে বলে অভিভাবকদের তরফে শীর্ষ আদালতকে জানানো হয় । পাশাপাশি আবেদনে বলা হয়, 50 শতাংশ ক্ষেত্রে উপসর্গহীন COVID-19 আক্রান্ত রোগীর কথা জানা যাচ্ছে । সেক্ষেত্রে যেসব পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবেন, তাঁঁদের মধ্যে কেউ না কেউ কোরোনা ভাইরাস বহন করে আনতে পারেন । বাকি পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের জীবন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে ।
আবেদনে আরও বলা হয়, IIT-র মতো দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরীক্ষা বাতিল করেছে । করোনার সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে তারা তাদের ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছে । পাশাপাশি পরীক্ষা কেন্দ্র যদি কনটেনমেন্ট জো়নের মধ্যে পড়ে, সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ওই মামলায় ।