আজ আন্তর্জাতিক দারিদ্র দূরীকরণ দিবস । 2020 সালে এই দিনের থিম হল সামাজিক এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা এবং সকলের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করা । দারিদ্র্যের বহুস্তরীয়তার ক্রমবর্ধমান স্বীকৃতিলাভের অর্থ এই দু’টি বিষয় অবিচ্ছিন্নভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত । তাছাড়াও সামাজিক ন্যায়বিচার ততক্ষণ পর্যন্ত অনুধাবন করা যায় না, যতক্ষণ না জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা একইসঙ্গে এবং সুদৃঢ়ভাবে করা হচ্ছে । অন্যদিকে আয়গত কারণে দারিদ্রে্যর সমস্যার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে যেখানে অগ্রগতি হয়েছে, সেখানেই আবার দারিদ্রে্যর অন্যান্য জরুরি দিকগুলির বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ততটা অগ্রগতি হয়নি । আর এই তালিকায় পরিবেশের দ্রুত এবং ক্রমবর্ধমান প্রভাবও রয়েছে, যদিও তা আরও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির আওতাধীন ।
বিশ্বের একাধিক ক্ষুধার আতিশয্য বিশ্বের দারিদ্রে্যর আরও একটি অন্যতম সমস্যা । যথাযথভাবে বলতে গেলে, 2020 সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার নোবেল কমিটির তরফে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্যামকে (WFP) দেওয়া হয়েছে ক্ষুধা নিবারণে উদে্যাগী হওয়ার জন্য, যুদ্ধবিদীর্ণ এলাকায় শান্তি স্থাপনের জন্য ভূমিকা রেখে চলার জন্য এবং যুদ্ধ-বিবাদ এবং সংঘর্ষ বাঁধানোর হাতিয়ার হিসাবে ক্ষুধাকে ব্যবহার করা আটকাতে মূল চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করার জন্য । 2019 সালে WFP 88টি দেশের অন্তত 100 মিলিয়ন এমন মানুষকে সাহায্য করেছে, যারা ক্ষুধা এবং প্রভূত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার ।
এ বছরের দারিদ্র্য ইশু আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কোভিড-19 প্যানডেমিকের নিদারুণ প্রভাবের ফলে উদ্ভূত দারিদ্র্য এবং কর্মসংস্থানের অভাবের কারণে । পূর্বাভাস অনুযায়ী দারিদ্র্য রেখার নিচে থাকা জনসংখ্যার হার বাড়তে পারে, কমর্সংস্থানের অভাব বাড়তে পারে এবং বহু অস্থায়ী শ্রমিকরা দারিদ্র্যের কবলে এবার পড়তে পারেন । হেলসিঙ্কির UN-WIDER বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পার ক্যাপিটাল আয় বা ভোগের ক্ষেত্রে 10 শতাংশ ‘কাউন্টারঅ্যাকশন’-এর আওতায়, মাথাপিছু দারিদ্রে্যর বৃদ্ধি 1.90 মার্কিন ডলার, 8.20 মার্কিন ডলার এবং 5.50 মার্কিন ডলার, যথাক্রমে 420, 580 এবং 520 মিলিয়ন মানুষের মধ্যে । বিশ্বব্যাপী স্তরে কোভিড-19 এর ক্ষমতা রাষ্ট্রসংঘের 2030 সালের মধ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণের ‘সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট গোল’ সফল করার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে কারণ দারিদ্র্য রেখার তিনটি স্তরের প্রতিনিধিদের আপেক্ষিক এবং সম্পূর্ণ আকৃতিতে যে বৃদ্ধি ঘটেছে, তা 1990 সালের এই প্রথম নথিবদ্ধ হবে এবং সেই বৃদ্ধি দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে অন্তত এক দশকে হওয়া অগ্রগতির পশ্চাৎপসরণ ঘটাতে পারে । দারিদ্র্য রেখায় দিনপিছু 1.90 মার্কিন ডলার এবং 3.2 মার্কিন ডলার আয়ের আওতায় থাকা ‘নতুন দরিদ্র’ শ্রেণিতে যে সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে, তা চোখে পড়ছে বিশ্বের দরিদ্রতম স্থানগুলিতে ৷ বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ায়, যা বিশ্বে দরিদ্র শ্রেণির দুই-তৃতীয়াংশ তথা 80-85 শতাংশের প্রতিনিধি । দক্ষিণ এশিয়ায় দারিদ্র্য 2018 সালে যেখানে ছিল 847 মিলিয়ন, তা 2020 সালে হতে পারে 915 মিলিয়নে, যদি দিনে 3.2 মার্কিন ডলার আয় ধরে হিসাব করা হয় । বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, এ বছর কোভিড-19 আরও 88 মিলিয়ন থেকে 115 মিলিয়ন মানুষকে চরম দারিদ্র্যের মুখে ফেলে দেবে, যার ফলে আর্থিক সংকোচনের জেরে 2021 সালের মধ্যে মোট দরিদ্রের সংখ্যা 150 মিলিয়ন হয়ে দাঁড়াবে । অন্তত 25 বছর ধরে চরম দারিদ্র্য টানা কমে আসছিল । এখন এই প্রজন্মের মধ্যে প্রথম, দারিদ্র্য দূরীকরণের চেষ্টা সবচেয়ে নিকৃষ্টভাবে পিছু হঠল । এই পশ্চাৎপসরণের প্রধান কারণ কোভিড-19, সংঘর্ষ এবং জলবায়ু পরিবর্তন, যার মুখোমুখি সব দেশকেই হতে হচ্ছে তবে বিশেষ করে তাদের, যাদের দরিদ্রদের সংখ্যা বেশি । 2019 সাল থেকে 2020 সাল পর্যন্ত দারিদ্র্যের হারে এই বৃদ্ধি সবথেকে বেশি, যবে থেকে বিশ্বব্যাঙ্ক বিশ্বব্যাপী স্তরে স্থায়ীভাবে দারিদ্র্যের হার নির্ণয় করতে শুরু করেছে । কোভিড-19 যেখানে নতুন বাধা, সংঘর্ষ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বিশ্বের নানা অংশে চরম দারিদ্র্য বেড়েই চলেছে ।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সমীক্ষায়, বস্তি এলাকায় কোরেনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মুম্বই শহরের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে । গোষ্ঠী সদস্যরা যাতে দক্ষভাবে এবং নিষ্ঠাভরে এই কাজ করতে পারে, তার জন্য গৃহীত সক্রিয় পদক্ষেপের প্রশংসায় বিশ্ব ব্যাঙ্ক বলেছে যে, মুম্বইয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকরা শহরের অন্যতম বৃহত্তম নগর এলাকা ধারাভিতে, কোরোনা ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ রুখতে সমর্থ হয়েছেন । আর এই সব কিছুই তারা করেছেন, গোষ্ঠী সদস্য এবং বেসরকারি মেডিক্যাল ক্লিনিকের কর্মচারীদের গতিশীল করে তুলে, ব্যাপক হারে জ্বর এবং অক্সিজেন স্তরের পরীক্ষার ব্যবস্থা করে ।
ভারতে দারিদ্র্যের উপর প্রভাব সবসময়ই খুব বেশি । ভারতে আর্থিক মন্দার প্রকোপ অনেক বেশি নিদারুণ দু’টি কারণে । প্রথমত, কোভিড-19 এর আগে থেকেই অর্থনীতি ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসছিল । সাথে সাথে বাড়ছিল বেকারত্ব, উপার্জন কমে আসা, গ্রামাঞ্চলের দুরাবস্থা, অপুষ্টি এবং সুদূরপ্রসারী অসাম্য । দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্টভাবে ভারতের বৃহৎ অসরকারি ক্ষেত্র খুবই দুর্দশায় রয়েছে । 2017-2018 সালে দেশের মোট 465 মিলিয়ন কর্মচারীর মধ্যে অন্তত 91 শতাংশ (422 মিলিয়ন) অসরকারি ক্ষেত্রের ছিল । নিয়মিত বেতন তথা আয়ের অভাবে কৃষিক্ষেত্র, পরিযায়ী এবং অন্যান্য শ্রেণির শ্রমিকরা লকডাউন পর্বে সবচেয়ে বেশি দুরবস্থার সম্মুখীন হয়েছিল ।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি-র (CMIE) পরিসংখ্যান বলছে, বেকারত্বের হার 8.4 শতাংশ থেকে বেড়ে 27 শতাংশ হয়ে গিয়েছে । 122 মিলিয়ন চাকরি চলে গিয়েছে । ছোট ব্যবসায়ী এবং অস্থায়ী শ্রমিকরাই 91 মিলিয়ন চাকরি হারিয়েছেন । ILO-র রিপোর্টে প্রকাশ, সংকটের সময়ে ভারতে 400 মিলিয়ন অসরকারি ক্ষেত্রের শ্রমিকরা দারিদ্র্যের অতলে তলিয়ে গিয়েছে । আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় প্রকাশ, কোভিড-19-এর প্রকোপের প্রথম কয়েক মাসে গৃহস্থালিক্ষেত্রে 77 শতাংশেরই আগের তুলনায় কম খাবার জুটেছে ।
সরকার 20 লাখ কোটি টাকার আত্মনির্ভর প্যাকেজ ঘোষণা করেছে । যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, GDP প্যাকেজের 10 শতাংশের মধ্যে ‘ফিসক্যাল স্টিমুলাস’ মাত্র GDP-র 1 থেকে 2 শতাংশ । উল্লেখ করা যেতে পারে যে, অপ্রত্যাশিত এই সংকটের গভীরতা বিচার করলে বোঝা যায়, দরিদ্রদের সাহায্য বাড়ানো কতটা তাৎপর্যপূর্ণ এবং জরুরি । সমস্যা যতটা গভীর, ‘ফিসক্যাল রিলিফ’ তথা ‘স্টিমুলাস’ কিন্তু সেই তুলনায় যথাযথ নয় । প্রথম ‘স্টিমুলাস’ ঘোষণার পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার ডাফলো মন্তব্য করেছিলেন যে সরকারের উচিত ছিল সামাজিক স্থানান্তরকরণের প্রকল্পগুলি নিয়ে আরও বলিষ্ঠ কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া । তাঁদের মত অনুযায়ী, সরকার এখন যা ঘোষণা করছে, তা অত্যন্ত স্বল্প অনুদান ৷ কয়েক হাজারের জনগোষ্ঠীর জন্য একেবারেই ক্ষুদ্র ৷ কারণ এরা কিছু দিনেই তা ব্যয় করে ফেলবে ।
বিশ্বব্যাপী স্তরে, বহু দেশে আর্থিক ‘স্টিমুলাস’ ভারতের তুলনায় অনেক বেশি । তাছাড়া স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও অন্যান্য দেশের দেখে শেখার আছে । উদাহরণস্বরূপ, কিছু কিছু ধনী দেশে যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা কোভিড-19 এর জেরে ধসে পড়েছে, সেখানেই ভিয়েতনাম সংকট মোকাবিলার সময়ে সচেতন হয়েছে এবং তাকে নিয়ন্ত্রণও করতে পেরেছে । এই দ্রুত এবং সক্রিয় প্রতিক্রিয়াই, স্বল্প আয়ের অন্যান্য দেশগুলির কাছে মডেল ।
97 মিলিয়নেরও বেশি জনসংখ্যার দেশ, ভিয়েতনামের অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধি যেমন SERS, MERS, হাম এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণেও অভিজ্ঞতা রয়েছে । বছরের পর বছর ধরে এই দেশ, তাদের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতে কাজ করেছে যাতে এই ধরনের রোগের প্রকোপের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারে । নোভেল কোরোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম ভাইরাসের মোকাবিলায় চারটি আপেক্ষিক সাশ্রয়ী সমাধান কাজে লাগিয়েছে । এগুলি হল স্ট্রাটেজিক টেস্টিং, অ্যাপের মাধ্যমে কনট্যাক্ট টেস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা এবং সক্রিয় জনসংযোগ প্রচারসূচি চালানো ।
কোভিড-19 এর জেরে দারিদ্র্যের প্রভাব কমাতে একাধিক উদ্যোগ নিতে হবে ভারতকে । প্রথমত, দরিদ্রদের জন্য খাবার এবং নগদ টাকার মতো জরুরি ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন করতে হবে, আবার পাশাপাশি MGNREGA-র জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধিরও প্রয়োজন আছে । দ্বিতীয়ত, প্যানডেমিক আমাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর সুযোগও দিয়েছে । তৃতীয়ত, আর্থিক বৃদ্ধিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে । 2020-21 সালের মধ্যে আর্থিক বৃদ্ধির হারে 10 শতাংশ সংকোচন হবে বলে মনে করা হচ্ছে । চতুর্থত, কৃষিক্ষেত্র অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে । তবে সম্প্রতি ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক চাষি, যাদের হার দেশের মোট চাষিদের কৃষকদের মধ্যে 86 শতাংশ, তাদের আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার আনা হয়েছে ।
আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি । কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে সব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা হল ক) প্রতি বছর 7 থেকে 8 মিলিয়ন ‘প্রোডাকটিভ জব’ তৈরি করা, খ) শ্রমের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যের বৈষম্য ঘোচানো : দক্ষিণ কোরিয়ার 96 শতাংশ, জাপানের 80 শতাংশ, জার্মানির 95 শতাংশ, ব্রিটেনের 68 শতাংশ এবং আমেরিকার 52 শতাংশের তুলনায় ভারতের শ্রমিকদের মাত্র 10 শতাংশের দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ রয়েছে । গ) উদ্যোগকারী সংগঠন এবং কর্মীসম্পদের সরকারিকরণ ঘ) MSME এবং অসরকারি ক্ষেত্রের দিকে নজর দেওয়া ঙ) অটোমেশন এবং প্রযুক্তিগত বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি এবং চ) সকলের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা ।
‘গিগ’ অর্থনীতিতে আগামী কয়েক বছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে । রপ্তানির জন্য উৎপাদন ক্ষেত্রে দ্বিমুখী কৌশল প্রয়োজন । প্রথমটি হল বস্ত্র, জুতো, আসবাবপত্র এবং নানা ধরনের আলো তৈরির মতো শ্রমনির্ভর ক্ষেত্রগুলির প্রচারের ব্যবস্থা করা । আর দ্বিতীয়টি হল ‘গ্লোবাল ভ্যালু চেন’গুলিতে অংশগ্রহণ করা কারণ চিন এখন এর থেকে দূরে সরে রয়েছে । কর্মসংস্থান তৈরির জন্য আমাদের উদ্ভাবনী শক্তিতে শান দিতে হবে এবং অন্যরকম কিছু ভাবনা চিন্তা করতে হবে ।
তবে শেষপর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন, যা এ বছরের থিমও বটে, সেটাই এখন উদ্বেগের বিষয় দারিদ্র্যতা দূরীকরণের ক্ষেত্রে এবং আগামী বছরগুলিতে তা আরও বাড়বে । পরিসংখ্যান অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে 2030 সালের মধ্যে 68 থেকে 135 মিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের কবলে পড়বেন । বিশেষ করে সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন অত্যন্ত বড় ধরনের বিপদ, কারণ এই এলাকাগুলিতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দরিদ্র জনজাতির বাস । জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাবারের দাম বাড়তে পারে, স্বাস্থ্যহানির ঘটনা ঘটতে পারে এবং বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কবলে পড়তে পারে মানুষ ৷ আর এর ফলে দরিদ্র এবং সাধারণ মানুষ, দুই-ই প্রভাবিত হবেন । বিশেষ করে দরিদ্রতম দেশগুলিতে জলবায়ু পরিবর্তন সম্ভবত সবচেয়ে বড় ছদ্মবেশী চ্যালেঞ্জ আর এই সমস্যা সেই সব দেশের তৈরি করা নয় । মানুষের কাজের ফলে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের জলস্তরও বাড়ছে । আর এই সব হচ্ছে উচ্চ আয়ের দেশগুলি এবং বৃহৎ, দ্রুত বাড়তে থাকা মধ্য আয়ের দেশগুলির যথেচ্ছভাবে ব্যয় করা শক্তিসম্পদের কারণে ।
সবশেষে বলা যায়, 1990 সালের পর থেকে এই প্রথম দারিদ্য ভারতসহ বহু দেশে বাড়তে চলেছে আর তা প্যানডেমিকের জন্যই । তাই এই দারিদ্য দূরীকরণ দিবসে আমরা সেই সব ইশুর উপর জোর দেব, যা দারিদ্র্য লাঘবের এবং 2030 সালের মধ্যে ‘সাসটেনেবেল ডেভলপমেন্ট’ তথা স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যপূরণের জন্য জরুরি । আর এই তালিকায় রয়েছে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিনিয়োগ প্রভৃতি ইশু ।