ETV Bharat / bharat

প্যানডেমিকে রুদ্ধ অর্থনৈতিক গতি, বাড়ছে দারিদ্র - COVID-19

কোরোনা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ১.৩১ কোটি মানুষকে সংক্রমিত করেছে ৷ এই ভাইরাস শুধু ৫.৭২ লাখ মানুষের জীবনই কেড়ে নেয়নি ৷ বরং বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ভেঙে চুরমার করেছে এবং মানুষের জীবনযাপনের মান মারাত্মক ভাবে নিচে নামিয়ে দিয়েছে ৷

corona
corona
author img

By

Published : Jul 18, 2020, 7:11 AM IST

Updated : Jul 18, 2020, 4:51 PM IST

সারা বিশ্বের কয়েক মিলিয়ন মানুষের জীবনকে ক্রমশ গ্রাস করছে ‘দারিদ্রতা’ ৷ রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে যে COVID-19 প্যানডেমিক চলাকালীন কয়েক মিলিয়ন মানুষ দরিদ্র এবং খিদের জ্বালায় বেঁচে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ৷ WHO সতর্ক করে জানিয়েছে, যতক্ষণ না ন্যূনতম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোরোনা সংকট আরও খারাপের দিকে যাবে ৷ কোরোনা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ১.৩১ কোটি মানুষকে সংক্রমিত করেছে ৷ এই ভাইরাস শুধু ৫.৭২ লাখ মানুষের জীবনই কেড়ে নেয়নি ৷ বরং বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ভেঙে চুরমার করেছে এবং মানুষের জীবনযাপনের মান মারাত্মক ভাবে নিচে নামিয়ে দিয়েছে ৷

গত বছর হিসেব করা হয়েছিল, ৬৯ কোটি মানুষ পুষ্টির অভাবে ভুগছেন ৷ তবে এই বছর এই পরিসংখ্যান বৃদ্ধি পেয়ে নতুন অঙ্ক তৈরি করছে ৷ গত বছরের সংখ্যার সঙ্গে আরও ১৩.২ মিলিয়ন মানুষ যুক্ত হতে পারেন এই COVID-19 ছড়িয়ে পড়ার কারণে ৷ একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে এমনই জানিয়েছে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ৷ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে সারা বিশ্বের ৩০০ কোটি মানুষের নিজেদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিযোগ্য খাবার কেনার এবং খাওয়ার সামর্থ্য নেই ৷ কোরোনার জেরে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে গিয়েছে এবং প্রাপ্তবয়স্করা কাজ হারাচ্ছেন ৷ অন্যদিকে স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় শিশু পড়ুয়ারা দুপুরের খাবারের জন্য মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ তরুণ ও বয়স্কদেরও অনাহার এবং দারিদ্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ৷ অন্যদিকে কোরোনা সরকারকে একটা দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে ৷ নাগরিকদের পর্যাপ্ত পুষ্টির সুযোগ দিয়ে সরকার কি ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে হওয়া প্রতি বছরের ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার খরচ বাঁচাবে ৷ যেহেতু সারা বিশ্বের অর্থনীতি ক্রমশ মন্দার দিকে চলে যাচ্ছে, ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে পূরণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া উন্নয়নের কাজগুলি শেষ হবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ কোরোনার সঙ্গে বন্যা, পঙ্গপালের আক্রমণের মতো ঘটনায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের সামাজিক অবস্থাকে আরও নামিয়ে দেবে বলে উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ৷

২০১৫ সালে ১৯৩ টি দেশ ১৭ টি সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস এজেন্ডার অনুমোদন দিয়েছিল ৷ যা নির্ধারণ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ ৷ এর উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীর সমস্ত দেশকে অগ্রগতির পর্যায়ে নিয়ে আসা ৷ ভারতের মতো দেশ যারা 15 বছরের অপরেশনাল ডায়ানমিক্সের বার্ষিক মূল্যায়নের দিকে এগোচ্ছে, সেই উদ্যোগে কোরোনা প্যানডেমিক কঠোর আঘাত করেছে ৷ দারিদ্র্য বিমোচন হল বিশ্বব্যাপী প্রথম লক্ষ্য, যখন খিদের জ্বালা নিরসন করা দ্বিতীয় লক্ষ্য ৷ সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণমূলক কাজ, ভালো মানের শিক্ষা, লিঙ্গসাম্যতার মতো লক্ষ্যগুলি এর পরে আসে । ভারত গত পাঁচ বছর ধরে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ৷ এর সমস্ত প্রচেষ্টা একটা প্রাণঘাতী ভাইরাসের এক ধাক্কায় কার্যত ভেসে গিয়েছে ৷ যার ফলস্বরূপ COVID-19 প্যানডেমিক হয়েছে ৷ আর অর্থনীতির অবস্থা একেবারে নিচের স্তরে নেমে গিয়েছে ৷ আর ভারতের ক্ষেত্রে, রাজ্যগুলির সময়োপযোগী মানদণ্ডের বার্ষিক ভাবে পর্যালোচনা করে সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলসের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগনোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেখানে পুরো প্রক্রিয়াটাই কার্যত আগুনে গিয়ে পড়েছে ৷

অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক, যাঁরা বিশ্বের কর্মী সংখ্যার অর্ধেক ৷ এই শ্রমিকদের মোট সংখ্যা ১৬০ কোটি ৷ তাঁদের রোজগার কমে গিয়েছে ৷ যার ফলে মারাত্মক ভাবে নেমে গিয়েছে গ্লোবাল ইকোনমিক ইনডেক্স ৷ এক সপ্তাহ আগে রাষ্ট্রসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এই তথ্য জানিয়েছে ৷ টিকাকরণে ব্যাঘাত ঘটা এবং অন্যান্য পুষ্টি প্রকল্প ব্যাহত হওয়ায় এই বছর মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ COVID-19 এর জেরে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ১৫৭ কোটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রসংঘের তরফে হিসেব করা হয়েছে ৷ আর যেহেতু কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা কম, তাই কয়েক বিলিয়ন শিশুর শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৷ এইভাবে কোরোনা শুধুমাত্র বর্তমান প্রজন্মেরই ক্ষতি করছে না, দেশের ভবিষ্যৎকেও নষ্ট করে দিচ্ছে ৷ নীতি আয়োগ, যা ভারত সরকারের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে, তারা জানিয়েছে যে GDP এর অতিরিক্ত ৬.২ শতাংশ যদি ভারত খরচ করতে পারে, তাহলেই সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলসের লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে ৷ বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, যাতে প্রতিটি দেশই নাজেহাল, সেই পরিস্থিতিতে সরকারের কাজের গতি বজায় রাখাই একটা বড় পরীক্ষা !

সারা বিশ্বের কয়েক মিলিয়ন মানুষের জীবনকে ক্রমশ গ্রাস করছে ‘দারিদ্রতা’ ৷ রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে যে COVID-19 প্যানডেমিক চলাকালীন কয়েক মিলিয়ন মানুষ দরিদ্র এবং খিদের জ্বালায় বেঁচে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ৷ WHO সতর্ক করে জানিয়েছে, যতক্ষণ না ন্যূনতম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোরোনা সংকট আরও খারাপের দিকে যাবে ৷ কোরোনা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ১.৩১ কোটি মানুষকে সংক্রমিত করেছে ৷ এই ভাইরাস শুধু ৫.৭২ লাখ মানুষের জীবনই কেড়ে নেয়নি ৷ বরং বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ভেঙে চুরমার করেছে এবং মানুষের জীবনযাপনের মান মারাত্মক ভাবে নিচে নামিয়ে দিয়েছে ৷

গত বছর হিসেব করা হয়েছিল, ৬৯ কোটি মানুষ পুষ্টির অভাবে ভুগছেন ৷ তবে এই বছর এই পরিসংখ্যান বৃদ্ধি পেয়ে নতুন অঙ্ক তৈরি করছে ৷ গত বছরের সংখ্যার সঙ্গে আরও ১৩.২ মিলিয়ন মানুষ যুক্ত হতে পারেন এই COVID-19 ছড়িয়ে পড়ার কারণে ৷ একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে এমনই জানিয়েছে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ৷ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে সারা বিশ্বের ৩০০ কোটি মানুষের নিজেদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিযোগ্য খাবার কেনার এবং খাওয়ার সামর্থ্য নেই ৷ কোরোনার জেরে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে গিয়েছে এবং প্রাপ্তবয়স্করা কাজ হারাচ্ছেন ৷ অন্যদিকে স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় শিশু পড়ুয়ারা দুপুরের খাবারের জন্য মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৷ তরুণ ও বয়স্কদেরও অনাহার এবং দারিদ্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ৷ অন্যদিকে কোরোনা সরকারকে একটা দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে ৷ নাগরিকদের পর্যাপ্ত পুষ্টির সুযোগ দিয়ে সরকার কি ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে হওয়া প্রতি বছরের ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার খরচ বাঁচাবে ৷ যেহেতু সারা বিশ্বের অর্থনীতি ক্রমশ মন্দার দিকে চলে যাচ্ছে, ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে পূরণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া উন্নয়নের কাজগুলি শেষ হবে না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ কোরোনার সঙ্গে বন্যা, পঙ্গপালের আক্রমণের মতো ঘটনায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের সামাজিক অবস্থাকে আরও নামিয়ে দেবে বলে উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ৷

২০১৫ সালে ১৯৩ টি দেশ ১৭ টি সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস এজেন্ডার অনুমোদন দিয়েছিল ৷ যা নির্ধারণ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ ৷ এর উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীর সমস্ত দেশকে অগ্রগতির পর্যায়ে নিয়ে আসা ৷ ভারতের মতো দেশ যারা 15 বছরের অপরেশনাল ডায়ানমিক্সের বার্ষিক মূল্যায়নের দিকে এগোচ্ছে, সেই উদ্যোগে কোরোনা প্যানডেমিক কঠোর আঘাত করেছে ৷ দারিদ্র্য বিমোচন হল বিশ্বব্যাপী প্রথম লক্ষ্য, যখন খিদের জ্বালা নিরসন করা দ্বিতীয় লক্ষ্য ৷ সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণমূলক কাজ, ভালো মানের শিক্ষা, লিঙ্গসাম্যতার মতো লক্ষ্যগুলি এর পরে আসে । ভারত গত পাঁচ বছর ধরে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে ৷ এর সমস্ত প্রচেষ্টা একটা প্রাণঘাতী ভাইরাসের এক ধাক্কায় কার্যত ভেসে গিয়েছে ৷ যার ফলস্বরূপ COVID-19 প্যানডেমিক হয়েছে ৷ আর অর্থনীতির অবস্থা একেবারে নিচের স্তরে নেমে গিয়েছে ৷ আর ভারতের ক্ষেত্রে, রাজ্যগুলির সময়োপযোগী মানদণ্ডের বার্ষিক ভাবে পর্যালোচনা করে সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলসের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগনোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, সেখানে পুরো প্রক্রিয়াটাই কার্যত আগুনে গিয়ে পড়েছে ৷

অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক, যাঁরা বিশ্বের কর্মী সংখ্যার অর্ধেক ৷ এই শ্রমিকদের মোট সংখ্যা ১৬০ কোটি ৷ তাঁদের রোজগার কমে গিয়েছে ৷ যার ফলে মারাত্মক ভাবে নেমে গিয়েছে গ্লোবাল ইকোনমিক ইনডেক্স ৷ এক সপ্তাহ আগে রাষ্ট্রসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এই তথ্য জানিয়েছে ৷ টিকাকরণে ব্যাঘাত ঘটা এবং অন্যান্য পুষ্টি প্রকল্প ব্যাহত হওয়ায় এই বছর মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷ COVID-19 এর জেরে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ১৫৭ কোটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রসংঘের তরফে হিসেব করা হয়েছে ৷ আর যেহেতু কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা কম, তাই কয়েক বিলিয়ন শিশুর শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৷ এইভাবে কোরোনা শুধুমাত্র বর্তমান প্রজন্মেরই ক্ষতি করছে না, দেশের ভবিষ্যৎকেও নষ্ট করে দিচ্ছে ৷ নীতি আয়োগ, যা ভারত সরকারের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে, তারা জানিয়েছে যে GDP এর অতিরিক্ত ৬.২ শতাংশ যদি ভারত খরচ করতে পারে, তাহলেই সাস্টেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলসের লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে ৷ বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, যাতে প্রতিটি দেশই নাজেহাল, সেই পরিস্থিতিতে সরকারের কাজের গতি বজায় রাখাই একটা বড় পরীক্ষা !

Last Updated : Jul 18, 2020, 4:51 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.