আর্থিকভাবে অসচ্ছ্বল মানুষজন যখন অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন তাদের পক্ষে পরস্পরের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলা খুবই কঠিন!
দেশের ৪০ শতাংশ পরিবার এক কামরার ঘরে থাকে!
তেলুগু রাজ্যগুলিতে এই ধরনের পরিবারের হার ৪৪.২ শতাংশ!
আর দেশের অন্তত ১০.১১ কোটি পরিবারের বাড়িতে দ্বিতীয় কোনও ঘর নেই!
২০২১ সালের জনসুমারিতে নিম্নলিখিত এই কঠিন সত্য উঠে এসেছে।
বস্তিতে বসবাসকারী পরিবারের রাজ্যব্যপী তথ্য
রাজ্য | পরিবারের সংখ্যা (লাখে) |
রাজস্থান | ৩.৮৩ |
পঞ্জাব | ২.৯৬ |
দিল্লি | ৩.৮৩ |
উত্তরপ্রদেশ | ৯.৯২ |
বিহার | ১.৯৬ |
পশ্চিমবঙ্গ | ১৩.৯৩ |
অবিভাজিত অন্ধপ্রদেশ | ২৪.২১ |
তামিলনাড়ু | ১৪.৫১ |
মহারাষ্ট্র | ২৪.৪৯ |
মধ্যপ্রদেশ | ১০.৮৬ |
কোরোনা মহামারীর এই আবহে পরিবারের প্রত্যেককে একে অন্যের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে হয়।যদি পরিবারের কারও সর্দি বা কাশি থাকে তাহলে সেই সংক্রামিত সদস্যকে বাকিদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে আলাদাভাবে রাখা উচিত। যাতে তার সংস্পর্শে এসে বাকিরা আক্রান্ত না হয়ে পড়েন। আমাদের দেশে যেখানে বস্তিবাসীর সংখ্যা এত বেশি সেখানে এইটুকু জায়গায় কী করে সদস্যরা আালাদা আলাদাভাবে থাকবেন? উপরের পরিসংখ্যান বিচার করলে একথা সহজেই অনুমেয় যে এরকম কিছু হওয়া সম্ভব নয়। ২০১১ সালের জনসুমারি অনুযায়ী, দেশের মোট ২৪.৬৭ কোটি পরিবারের মধ্যে ৪০.৯৮ শতাংশেরই বাড়িতে দ্বিতীয় কোনও ঘর নেই। ২০১১ সালে যেহেতু অন্ধ্রপ্রদেশের বিভাজন হয়নি তাই এ সমীক্ষার ফল সেই ভিত্তিতেই প্রস্তুত করা হয়েছে। অবিভাজিত অন্ধ্রপ্রদেশে ২.১০ কোটি পরিবারের মধ্যে অন্তত ৪৪.২০ শতাংশেরই বাড়িতে দ্বিতীয় কোনও ঘর নেই। তাই করোনার মতো মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর এই পরিবারগুলিকে কীভাবে রক্ষা করা সম্ভব তা নিয়ে রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে আলোচনা চলছে।
দেশে মোট পরিবারসংখ্যা (লাখে)
বিষয় | ভারত | অবিভাজিত অন্ধ্রপ্রদেশ |
মোট পরিবারসংখ্যা | ২৪৬৭ | ২১০ |
একটি ঘরে থাকা পরিবার | ১০১১ | ৯২ |
দু’টি ঘরে থাকা পরিবার | ৭৮১ | ৭৩ |
তিনটি ঘরে থাকা পরিবার | ৩৫৮ | ২৮ |
চারটি ঘরে থাকা পরিবার | ১৮৩ | ১১ |
পাঁচটি ঘরে থাকা পরিবার | ৬৩ | ২.৪ |
ছ’টি ঘরে থাকা পরিবার | ৬৮ | ২ |
বস্তি এলাকায় মোট ১.৩৩ কোটি পরিবার বাস করে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র (২৪.৪৯ লক্ষ পরিবার) এবং দ্বিতীয় স্থানে আছে অবিভাজিত অন্ধ্রপ্রদেশ (২৪.২১ লক্ষ পরিবার)। অন্তত ৪৬.৩৫ লক্ষ পরিবার একই কামরায় দিন গুজরান করে।
২৩.৬১ কোটি বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে ভাল থাকা পরিষেবা রয়েছে ১২.৬১ কোটিতে। বাকি বাড়িগুলি বসবাসের উপযোগী নয়। ১.২৭ কোটি বাড়ি ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে। দরিদ্র মানুষরা সেখানে থাকেন। যদিও সব রকম সুযোগ–সুবিধা থেকে বঞ্চিত অবস্থায়।
দেশে মোট পরিবার এবং পরিবারের সদস্যসংসখ্যা
পরিবার ও ঘর সংক্রান্ত বিষয় | দেশে পরিবারের সংখ্যা (কোটিতে) |
একটি ঘরে ছ’জনের বেশি সদস্য থাকেন | ৪.৪৩ |
একটি ঘরে পাঁচ জনের বেশি সদস্য থাকেন | ১.৮৩ |
একটি ঘরে চার জনের বেশি সদস্য থাকেন | ২.৩৯ |
একটি ঘরে তিন জনের বেশি সদস্য থাকেন | ১.৬৩ |
পরিবার এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যার হিসাব
পরিবার সংক্রান্ত বিষয় | সদস্যসংখ্যা (লাখে) | শতাংশ |
চার সদস্যের পরিবার | ২৬.৮ | ৩৪ |
পাঁচ সদস্যের পরিবার | ১৯.৮ | ১৪ |
৬ এবং তার বেশি সদস্যের পরিবার | ২৫.৪ | ৮.৪ |
কী কী সতকর্তা নেওয়া উচিত
দেশের দরিদ্র নাগরিকরা খুবই ছোট ঘরে থাকেন। এবং তাদের বাড়িগুলিও বেশ ঘন সন্নিবিশিষ্ট। দিনের বেশিরভাগ সময় তারা বাড়ির সামনে রাস্তায় কাটান। তাদের একটি বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির দূরত্ব ১০ ফুটের মধ্যেই থাকে। এই কারণে সংক্রমণের হার এদের মধ্যে বেশি হয়। যদি কোনও পরিবারের কোনও সদস্য সর্দি ও কাশিতে ভোগে তাহলে বাকিদের লক্ষ্য রাখা উচিত তাকে যেন দ্রুত সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। নাহলে তা বাকিদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠবে, এমনই দাবি এক সিনিয়র IAS অফিসারের। তিনি আরও বলেছেন যে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত এইসব কলোনিতে যাওয়া, যেখানে বেশিরভাগ সদস্যই দরিদ্র, এবং কোরোনা ভাইরাস রুখতে ওই এলাকায় যদি কারও প্রচণ্ড সর্দি ও কাশি হয়ে থাকে, তবে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে পরীক্ষা করানো এবং চিকিৎসা করানোও সমান জরুরি।