দিল্লি, 2 সেপ্টেম্বর : গত কয়েক মাস ধরে উত্তপ্ত লাদাখ সীমান্ত। ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন একাধিক ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকে আরও আঁটোসাঁটো হয়েছে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা। আরও কড়া হয়েছে নজরদারি। এইসব কিছুর পাশাপাশি এবার বোধহয় দুই দেশের মধ্যে ক্যামেরার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। লেন্সের মাধ্যমে চলছে ২৪x৭ পহরা। কারণ তুষারঝড়, প্রাকৃতিক বিপর্যয় সবকিছুর মাঝে এই ৮২৬ কিমি দীর্ঘ LAC-র কোণে কোণে নজর রাখতে প্রয়োজন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা আর চুল চেরা বিশ্লেষণ করার মতো দক্ষ লেন্স। আর ঠিক সেই পথেই এগোচ্ছে ভারত-চিন । সীমান্ত যুদ্ধ কোথাও যেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধও হয়ে উঠেছে ।
২৯-৩০ অগাস্ট রাতে স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্স চিন সেনাকে হারিয়ে হেলমেট ও ব্ল্যাক টপ অধিকার করেছে। সূত্রে খবর, এই স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের লক্ষ্য ছিল, PLA ওই দুর্গম এলাকায় ভারতীয় সেনার গতিবিধি জানার জন্য যে শক্তিশালী ক্যামেরা বসিয়েছিল, তা ধ্বংস করা । এই ক্যামেরার গুরুত্বপূর্ণ নজরদারি নিয়ে সেনাসূত্রে খবর, এই হেলমেট ও ব্ল্যাকটপ প্যাংগং লেকের দক্ষিণ তীরের বাম দিকে অবস্থিত। এর ঠিক ডান দিকে রেজাং লা ও রিনচেন লা রয়েছে, যেখান থেকে কৈলাস রেঞ্জ শুরু হয় । এই সমস্ত এলাকায় চিনের সেনার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এইচ ডি ক্ষমতা সম্পন্ন নাইট ভিশন ক্যামেরা রয়েছে । যা দিনের বেলায় 6 কিমি পর্যন্ত ও রাতে 3 কিমি পর্যন্ত নজরদারি চালাতে পারে । মুহূর্তে রেকর্ড করতে পারে শত্রুপক্ষের গতিবিধিকে । এর আগে UAV বা স্যাটেলাইট ভিত্তিক নজরদারি ক্যামেরাই ব্যবহার করা হত । কিন্তু দুর্গম এলাকা এবং খারাপ আবহাওয়ার জন্য এরা প্রত্যাশিতভাবে কাজ করতে পারেনি ।
এই সমস্ত এলাকায় এই অত্যাধুনিক ক্যামেরাগুলিকে এমনভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে যা সূক্ষ্ম থেকে অতি সূক্ষ্ম গতিবিধিও রেকর্ড করতে পারে । সেনা সূত্রে একটি তথ্য উঠে আসে । যেখানে বলা হয়, চিনের সেনারা খুব একটা বেশি হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না । সাধারণত তাঁরা গাড়ির ব্যবহারই বেশি করে থাকে । অনেক সময়ই ভারতীয় সেনাদের টহল দিতে তাঁরা ক্যমেরার মাধ্যমেই দেখে এবং গাড়ি নিয়ে তা আটকাতে আসে ।
তাই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সমস্ত এলাকায় অত্যাধুনিক ক্যামেরা ব্যবহারের পথে হাঁটছে ভারতীয় সেনা । সোমবারও সেই ক্যামেরাতেই চিনের সেনার গতিবিধি ধরা পড়ে । তাই সীমান্ত সংঘর্ষে এই ক্যামেরা যুদ্ধও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে ।