খাড়গোন (মধ্যপ্রদেশ), 7 অগস্ট: খাবারের প্য়াকেট চুরির অভিযোগে এক দলিত যুবকের উপর অমানুষিক অত্যাচার (Attack on Dalit Youth) করল উন্মত্ত জনতা ৷ সূত্রের দাবি, তাঁর ধর্মীয় পরিচয় জানতে প্রথমে তাঁকে টেনে, হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তারপর তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে মারমুখী জনতা ৷ ছিঁড়ে ফেলা হয় তাঁর অন্তর্বাসও ! গত 2 জুলাই পৈশাচিক এই ঘটনাটি ঘটে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) নিমরানি শিল্পাঞ্চলে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত যুবকের বয়স 32 বছর ৷ সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল, এই ঘটনার পর মারমুখী জনতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করেনি পুলিশ ৷ উলটে আক্রান্ত যুবককেই গ্রেফতার করে নিয়ে যায় তারা ৷ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই যুবকের উপর যেভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে, তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না ৷ উন্মত্ত জনতা তাঁর হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেয় ৷ সেই অবস্থায় চারিদিক থেকে শুরু হয় হামলা ৷ সকলে মিলে ওই যুবককে চড়, থাপ্পড়, ঘুসি, লাথি মারতে থাকে ৷ পোশাক ছিঁড়ে কার্যত তাঁকে বিবস্ত্র করে দেওয়া হয় ৷
এই ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন ওই যুবকের মা ৷ তিনি বলেন, তাঁর ছেলের উপর যেভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে, তেমন আচরণ কোনও পশুর উপর করতে গেলেও মানুষের বুক কাঁপে ! তারপরও পুলিশ তাঁর ছেলেকেই গ্রেফতার করায় হতাশা লুকিয়ে রাখতে পারেননি ওই মহিলা ৷
এদিকে, এই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে কেউ বা কারা সোশ্য়াল মিডিয়ায় তা আপলোড করে দেয় ৷ মুহূর্তে ভাইরাল হয় ভিডিয়োটি ৷ প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে টনক নড়ে পুলিশের ৷ একজন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয় ৷ সেইসঙ্গে, যে সংস্থার খাবার চুরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল, সেখানকার চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷
এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় স্থানীয় খালতানকা আউটপোস্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজেন্দ্র সিং বাঘেলকে ৷ অভিযোগ, সবকিছু জানা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি তিনি ৷ উলটে আক্রান্ত যুবককেই জেলে ভরে দিয়েছেন ! রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন খাড়গোনের পুলিশ সুপার ধরমবীর সিং ৷ কেন তিনি আইন অনুযায়ী তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করলেন না, কেন ব্যবস্থা নিলেন না অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে, রাজেন্দ্রর কাছ থেকে সেসবের জবাব তলব করা হয়েছে ৷