হাসান (কর্ণাটক),20 ফেব্রুয়ারি: আইফোনের লোভে 'খুন'। এমনই ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে কর্ণাটকের হাসানে। পুলিশ সূত্রে খবর, অনলাইনে অর্ডার দেওয়া আইফোনের বাক্স খুলে না-দেখানোয় ডেলিভারি বয়কে খুন করেছে এক যুবক (Youth allegedly Killed delivery boy in Karnataka ) । শুধু তাই নয়, মৃতদেহকে একটি বস্তায় পুরে টানা চারদিন শৌচাগারে রেখে দেয় সে । পরে সুযোগ বুঝে দেহের কয়েকটি অংশ পুড়িয়ে নির্জন জায়গায় গিয়ে ফেলে আসে । তবে শেষরক্ষা হল না। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে ঘটনার কিনারা করেছে পুলিশ । অভিযুক্ত যুবককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ।
ঘটনার সূত্রপাত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে । হাসান জেলার আরাসেইকিরে শহরের বাসিন্দা হেমন্ত দত্ত অনলাইনে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড আইফোন অর্ডার দেয়। 7 তারিখ সেটি তার কাছে পৌঁছনোর কথা ছিল । সেই মতো হেমন্ত নায়েক নামে এক কর্মী ওই আইফোনটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে যায়। স্থানীয় এসপি হরিররাম সরকার জানিয়েছেন, বাড়িতে ফোন আসার পর অভিযুক্ত যুবক ডেলিভারি বয়কে জানায় তার কাছে এখন টাকা নেই । আর তাছাড়া ফোনটি নেওয়ার আগে সে বাক্স খুলে দেখবে । কিন্তু ডেলিভারি সংস্থার কর্মী জানান, নিয়ম অনুসারে হাতে টাকা না-পাওয়া পর্যন্ত বাক্স খুলে দেখানো যাবে না। এরপর অভিযুক্ত বাড়ির ভেতরে চলে যায় । একটু পরে বাইরে এসে জানায়, তার এক বন্ধু টাকা নিয়ে আসছে । এই সময়টুকু ডেলিভারি সংস্থার কর্মীকে বাড়িতে ভেতরে এসে বসতে বলে । তাতে রাজি হন ওই কর্মী ।
তদন্তকারীদের অনুমান এরপরই কোনও একটা সুযোগ বুঝে ডেলিভারি সংস্থার কর্মীকে পেছন থেকে আঘাত করে অভিযুক্ত । ছুরি বা ওই ধরনের ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে মনে করছে পুলিশ । ঘটনাস্থলেই ডেলিভারি সংস্থার কর্মীর প্রাণ যায় । এরপর বড় একটি ব্যাগে দেহটি রেখে দেয় অভিযুক্ত । টানা চারদিন বাড়ির শৌচাগারে দেহ রাখার পর 11 ফেব্রুয়ারি একটি মোটর বাইকে করে দেহটি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় অভিযুক্ত। স্থানীয় একটি পেট্রল পাম্প থেকে পেট্রল কেনে এবং কোনও একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে ব্যাগের মধ্যে দেহের কয়েকটি অংশ পুড়িয়ে দেয়। আরও পরে স্থানীয় রেলগেটের কাছে দেহটি ফেলে আসে ।
পরে ওই দেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। শুরু হয় তদন্ত । দেহটি কে বা কারা ফেলে গেল তা জানতে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয় । সে সময় পেট্রল পাম্পের ফুটেজ থেকে এই মোটর বাইকের কথা জানতে পারে পুলিশ । পাশাপাশি কয়েকদিন বাড়ি না-ফেরায় ডেলিভারি কর্মীর বাড়ির লোক পুলিশে মিসিং ডায়েরি করে। ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে পুলিশ । তার সঙ্গে কথা বলতেই গোটা বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায় তদন্তাকারীদের কাছে । আপাতত তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ধারায় মামলাও দায়ের হয়েছে। তবে এখনও কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। এই ঘটনা ওই যুবক একা ঘটিয়েছে নাকি কেউ তাকে সাহায্য করেছিল সেটা জানার কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপনের পর লাতুরে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা যুগলের