নয়াদিল্লি, 2 জানুয়ারি : ভারত ও চিনের (Indo China conflict) মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা ক্রমে বাড়ছে প্রতিবেশী দেশের আগ্রাসী নীতিতে ৷ দেশের ভূখণ্ডে একের পর এক দখলদারির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বেজিং ৷ তবে চুপ করে বসে থাকার পাত্র নয় দিল্লিও ৷ চিনকে (indo china standoff) জবাব দিতে ভারতও পরিকল্পিত ভাবে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বলে দাবি করলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এসপি সিনহা (Retired Major General SP Sinha)৷ যেখানে যখন প্রয়োজন, সেখানে বাহিনীকে যাতে দ্রুত সরানো যায়, সে জন্য সড়কপথ ও সেতু নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বর্ডার রোডস অর্গ্যানাইজেশন (Border Roads Organisation)৷
28 ডিসেম্বর সীমান্তে তৈরি হওয়া নতুন 24টি সেতু ও তিনটি সড়কপথ দেশবাসীকে উৎসর্গ করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Minister for Defence Rajnath Singh)৷ জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, অরুণাচলপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশের সীমান্তে এই নির্মাণ করেছে বিআরও ৷ এগুলির মধ্যে পূর্ব লাদাখে তৈরি হওয়া চিসুমলে-ডেমচক রোড বিশ্বের সর্বোচ্চ রাস্তা যেখানে মোটরগাড়ি চলে ৷ 19,000 ফিটেরও বেশি উচ্চতায় এই সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ৷ গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলে নিয়েছে এই নবনির্মিত রাস্তা ৷
বর্তমানে চিন যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে আগামী দিনেও দু দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেই মত অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সিনহার ৷ এই অবস্থায় চিনা সীমান্তে প্রতিনিয়ত নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিআরও-র ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি ৷ ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "আগের সরকারের আমলে সীমান্তের সড়ক উন্নয়নের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ৷ বর্তমানে চিন সীমান্ত লাগোয়া এই পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে আমাদের বাহিনী আরও উৎসাহিত হবে ৷ কোনওরকম প্রতিরোধের প্রয়োজন পড়লে আমরা শত্রুদের কড়া জবাব দিতে সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত ৷"
গলওয়ান উপত্যকা (Galwan Valley) নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখনও কাটেনি ৷ 2020 সালে সেখানে সংঘর্ষ বেঁধে গিয়েছিল দু দেশের সেনার মধ্যে ৷ এরপর দফায় দফায় সেনা স্তরে ও কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হলেও এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্তই রয়ে গিয়েছে ৷ শুধুমাত্র উত্তর প্যাংগং সো লেক (de-escalation in north of Pangong Tso) ও কৈলাস রেঞ্জ থেকে সেনা সরিয়েছে দু পক্ষ ৷ তবে ওই এলাকার বাকি অংশে এখনও উত্তেজনার পরিবেশ রয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Tricolour on China Border: চিন-নেপাল সীমান্তে 100 ফুটের তেরঙ্গা উত্তোলন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর
এ বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার বিকে খান্না (Brig BK Khanna) ইটিভি ভারতকে বলেছেন, "কেন চিনারা প্যাংগং সো-এর উত্তর দিকটা ছেড়ে দিল ? এর কারণ আমাদের বাহিনী পাহাড়ের চূড়ায় বসেছিল এবং আমাদের নজর ছিল চিনের মলডো গ্যারিসনের উপর ৷ সেই কারণেই ভয় পেয়ে সেনা সরাতে সম্মত হল বেজিং ৷"
এ বিষয়ে একই মত মেজর জেনারেল সিনহারও ৷ তিনি বলছেন, "আমাদের পাহাড়ের চূড়ার অবস্থান ছাড়া উচিত না, কারণ ওটাই আমাদের দর কষাকষির জায়গা ৷"
আরও পড়ুন: India-China Relation : সম্পর্কের অবনতিতে চিনকেই দায়ী করলেন জয়শঙ্কর