জয়পুর, 24 সেপ্টেম্বর : পঞ্জাবের পর রাজস্থানেও কি কোন্দল বেধেছে কংগ্রেসের অন্দরে ? দলীয় নেতৃত্বের তৎপরতায় অন্তত তেমনই ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷ কংগ্রেস সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে জয়পুরে ফিরেই বিধানসভার অধ্যক্ষ তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সি পি জোশির (C P Joshi) সঙ্গে বৈঠক করেন দলের আর এক হেভিওয়েট নেতা সচিন পাইলট (Sachin Pilot) ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধেয় প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন তাঁরা ৷ এর আগে গত 17 সেপ্টেম্বর রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) সঙ্গেও জরুরি বৈঠক করেছিলেন সচিন ৷ সেই বৈঠক হয়েছিল দিল্লিতে ৷
আরও পড়ুন : Mukul Sangma : সুস্মিতা দেবের পথে কি মুকুল সাংমা, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দলবদল ঘিরে জল্পনা
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, একেবারে রাজনৈতিক কারণেই সি পি জোশির সঙ্গে বৈঠক করেন সচিন পাইলট ৷ এর পিছনে অন্য আর কোনও কারণ ছিল না ৷ প্রসঙ্গত, রাজস্থান বিধানসভার শেষ নির্বাচনে কংগ্রেস জয়যুক্ত হলেও সরকার গঠনের পথ মসৃণ ছিল না ৷ সচিন পাইলট, নাকি অশোক গেহলট (Ashok Gehlot), কে বসবেন মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে, তা নিয়ে জলঘোলা হয়েছিল বিস্তর ৷ যার রেশ আবারও মাথাচাড়া দিচ্ছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷
সচিন পাইলট বরাবরই রাহুল গান্ধির কাছের লোক বলে পরিচিত ৷ সূত্রে খবর, রাজস্থানে কংগ্রেস নেতাদের মন কার দিকে ঝুঁকে রয়েছে, তার হদিশ পেতেই রাজ্যস্তরের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন সচিন ৷ উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে শেষমেশ বিরোধ মেটাতে পারলেও রাজস্থানে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে কংগ্রেসের ৷ রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ থেকে দলের বিভিন্ন পদে নিয়োগ এবং সাংগঠনিক রদবদল, মনে করা হচ্ছে নবরাত্রির আগেই এইসব বকেয়া কাজগুলি সেরে ফেলতে চাইছে কংগ্রেস ৷ কারণ, ইতিমধ্যেই এনিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে ৷ দীর্ঘ অপেক্ষায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে নেতা-কর্মীদের ৷
কংগ্রেসের অন্দর থেকে যে খবর জানা যাচ্ছে, তা হল, আগামী দিনে সচিন পাইলটকে রাজস্থানেই কোনও বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে, নাকি দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হবে, তা আসন্ন পুজোর মরশুমের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ৷ সেই কারণেই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন সচিন ৷ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, হাওয়া আসলে কোন দিকে বইছে ৷
অশোক গেহলট ও সচিন পাইলটকে বাদ দিলে সি পি জোশিই হলেন রাজস্থান কংগ্রেসের তৃতীয় ব্যক্তি, যাঁর সরাসরি হাইকম্যান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে ৷ বিধায়কদের একটা বড় অংশও তাঁর কট্টর সমর্থক ৷ তাই জোশির সমর্থন সচিন পাইলটের জন্য অত্যন্ত জরুরি ৷ ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, এমনি এমনি সি পি জোশির সঙ্গে দেখা করতে যাননি সচিন ৷ হাইকম্যান্ড নির্ঘাৎ তাঁকে কোনও বার্তা দিয়েছিল ৷ সেই বার্তা পৌঁছে দিতেই বিধানসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি ৷
আরও পড়ুন : Charanjit Singh Channi : পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ চরণজিতের
প্রসঙ্গত, জোশি বরাবরই হাইকম্য়ান্ডের কাছের এবং ভরসার মানুষ ৷ এই কারণেই ইউপিএ জমানায় রেল ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি ৷ পরবর্তীতে দেশের সাতটি রাজ্যেও দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে ৷ তাই রাজস্থানের রাজনীতিতে বড় কোনও পট পরিবর্তন হলে জোশির অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷