কলকাতা, 29 নভেম্বর: খাস কলকাতায় অস্বাভাবিক মৃত্যু কলকাতা পুলিশের একজন এএসআইয়ের । নাম শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় । তিনি আলিপুর থানায় কর্মরত ছিলেন । ঘটনাটি যখন ঘটে সেই সময়ে তিনি রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে । অভিযোগ, স্ত্রী ও ছেলে তাঁকে মারধর করে বাড়িতেই হত্যা করেছেন । এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা ।
লালবাজার সূত্রে খবর, আলিপুর থানায় কর্মরত এএসআই শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই নার্ভের সমস্যায় ভুগছিলেন । মাঝেমধ্যেই তিনি থানায় আসতেন না । ঘটনাটি যখন ঘটে সেই সময়ে তিনি ছুটিতে ছিলেন । গতকাল রাতে শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই ঘর থেকে । এলাকার বাসিন্দারা জানান, শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে দীর্ঘদিন ধরেই পাড়াতে দেখা যায়নি । তিনি রোজ সকালে হাঁটতে বেরোতেন ৷ তবে সপ্তাহখানেক ধরে তিনি বাইরে বের হননি ।
এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী এবং তাঁর ছেলে নিত্যদিন তাঁর উপর অত্যাচার চালাতেন । এরকম একাধিক অত্যাচারের সাক্ষী এলাকার বাসিন্দারা । তাঁদের অভিযোগ, স্ত্রী এবং তাঁর ছেলে মারধর করে শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়কে হত্যা করেছেন । ইতিমধ্যেই দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে ।
কয়েক সপ্তাহ আগেই শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আলিপুর থানা থেকে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটি নেন । তিনি বাঙুর হাসপাতালে নিজের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন । দীর্ঘদিন ধরে নার্ভের অসুখে ভোগার ফলে স্বভাবে খানিকটা খিটখিটেও হয়ে গিয়েছিলেন ওই পুলিশকর্মী । সেই কথা আলিপুর থানার অনেকেই জানতেন । স্থানীয়দের অভিযোগ, স্ত্রী এবং ছেলে দিনের পর দিন তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালাতেন । শেষ দিন তাঁকে ঘরের ভেতরেই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ।
শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় । প্রতিবেশীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন । ঘটনাস্থলে যায় রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ । দেহটি কোনওক্রমে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । এছাড়াও ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা । তবে কলকাতা পুলিশের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক এই বিষয়ে কোনও রকমের মন্তব্য করতে চাননি ।
ইতিমধ্যেই এলাকার বাসিন্দারা মৃত এএসআইয়ের স্ত্রী ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন ৷ তবে পুলিশের তরফ থেকে এখনও তাঁদেরকে গ্রেফতার করা হয়নি । তাঁদের রিজেন্ট পার্ক থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । পাশাপাশি ঘরের যেখান থেকে ওই পুলিশকর্মীর দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই জায়গাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ । আজ দুপুরে ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে যেতে পারেন । সেখানে কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেছিল কি না বা মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও ঘটনা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।