পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

সোনার দোকানের কর্মচারী থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর, জানেন কে এই মিলন ? - CID Arrests TMC Councillor

TMC Councilor Arrested by CID: ব্যবসায়ী অপহরণে আগেও যোগ ছিল তৃণমূল কাউন্সিলর মিলন সর্দারের ৷ মুক্তিপণ বাবদ প্রায় 9 কোটি হাতিয়েও নিয়েছিল মিলন ও তাঁর দলবল। শেষ কয়েকবছরে রকেট গতিতে উত্থান মিলন সর্দারের। করছেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি । মিলনকে নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিন এই প্রতিবেদনে ৷

TMC Councilor Arrested by CID
চিহ্নিত করা ব্যক্তি মিলন, জানেন তিনি কে? (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 20, 2024, 2:25 PM IST

বারাসত, 20 সেপ্টেম্বর:সোনার দোকানের সামান্য কর্মচারী থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর! শেষ কয়েক বছরে রকেট গতিতে উত্থান মিলন সর্দারের।করেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি! এহেন শাসকদলের কাউন্সিলরের অপহরণ-কাণ্ডে যোগ থাকার অভিযোগ কিংবা সেই অভিযোগে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া, কোনওটাতেই আশ্চর্যের কিছু দেখছেন না বিরোধীরা।

বিরোধীদের দাবি, কাউন্সিলর মিলন সর্দারের অপরাধের প্রবণতা ছিল আগে থেকেই (ইটিভি ভারত)

বিরোধীদের দাবি, কাউন্সিলর মিলন সর্দারের অপরাধের প্রবণতা ছিল আগে থেকেই। কারণ, আগেও আবাস যোজনার দুর্নীতির টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সময় তৃণমূলের এই কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন উপভোক্তাদের একাংশ। যার ফলে দীর্ঘদিন তাঁকে এলাকাছাড়া হয়ে থাকতে হয়েছিল। এরপর, বিষয়টি ধামচাপা পড়ে গেলে আবারও এলাকায় ফেরেন তিনি। কিন্তু, তারপরেও মিলন সর্দারের কুকীর্তি থেমে থাকেনি!

শেষ কয়েক বছরে রকেট গতিতে উত্থান মিলন সর্দারের (নিজস্ব ছবি)

কে এই মিলন সর্দার?

  • কাউন্সিলর হওয়ার আগে বারাসত শহরে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন মিলন। তাঁর সামান্য মাইনে দিয়ে কোনও মতে সংসার চলত পরিবারের। বারাসতের দ্বিজহরি দাস কলোনিতে বাড়ি এই যুবকের। ছুটির ফাঁকে মাঝেমধ্যে স্থানীয় তৃণমূল পার্টি অফিসেও যাতায়াত ছিল মিলনের।সেই যাতায়াতের সুবাদেই তৃণমূল নেতৃত্বের নেক-নজরে পড়ে যান তিনি। এরপরই 2015 সালের পৌর নির্বাচনে 33 নম্বর ওয়ার্ড থেকে শাসকদলের তরফে টিকিট দেওয়া হয় তাঁকে। সেই নির্বাচনে জিতে কাউন্সিলরও হয়ে যান মিলন।
    ব‍্যবসায়ী অপহরণ-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল কাউন্সিলর (নিজস্ব ছবি)

মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ-

  • অভিযোগ, তারপর থেকেই একের পর এক অপকর্মের ঘটনায় নাম জড়াতে থাকে তৃণমূলের এই কাউন্সিলরের। এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়, মিলনের দৌরাত্ম্য! নিন্দুকরা বলেন, "জমি-বাড়ি থেকে প্রোমোটিং। সবকিছুতেই তোলা দিতে হত কাউন্সিলর মিলন সর্দারকে। এছাড়া জমি জবরদখল, পুকুর ভরাট, হুমকি দিয়ে সম্পত্তি বাগিয়ে নেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ তো রয়েছেই। যদিও, বারাসতের প্রভাবশালী এক নেতার অত‍্যন্ত ঘনিষ্ঠ হওয়ায় মিলন সর্দারের যাবতীয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সেভাবে কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ফলে, অপকর্ম করেও এতদিন 'সাত খুন মাফ' হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
  • প্রশাসক বোর্ড ভেঙে 2022 সালে বারাসত পৌরসভার যখন নির্বাচন হয়, সেসময়েও অদ্ভুতভাবে তৃণমূলের টিকিট পেয়ে যান এই মিলন সর্দার।তবে, সেবার 33 নম্বর ওয়ার্ড নয়, পাশের 2 নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দু'বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হতেই মিলনের 'দাদাগিরি'ও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। কার্যত ফুলে ফেঁপে ওঠে তাঁর সম্পত্তি। একসময় অপরাধ জগতেও নাম জড়িয়ে যায় এই তৃণমূল কাউন্সিলরের।

সিআইডি সূত্রে খবর, এর আগেও ত্রিপুরার ওই ব‍্যবসায়ীকে অপহরণের ছক কষেছিলেন তিনি ৷ মুক্তিপণ বাবদ প্রায় 9 কোটি হাতিয়ে নেয় মিলন ও তাঁর দলবল। অভিযোগ, সেই টাকার অধিকাংশই গিয়েছিল তৃণমূল কাউন্সিলরের কাছে। মুক্তিপণের টাকায় বারাসতে একের পর এক জমি কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু, এবার মুক্তিপণের 2 কোটি 25 লক্ষ টাকা আদায় করতে গিয়েই ধরা পড়ে যান মিলন ও তাঁর সঙ্গীরা। আপাততে অভিযুক্ত সকলেই রয়েছেন সিআইডি হেফাজতে।

এদিকে, গ্রেফতার হতেই তৃণমূল কাউন্সিলরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে, দল থেকে শুধু বহিষ্কার করলেই হবে না, মিলনের কাউন্সিলর পদও খারিজ করতে হবে। এই দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম, উভয় দলের নেতৃত্বই।

ABOUT THE AUTHOR

...view details