আলিপুরদুয়ার, 25 অগস্ট: চা-বাগান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড় করতেই হিমশিম খায় শ্রমিক পরিবারগুলি ৷ তাই এবার নিজেরদের জীবনধারণের মানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, চা-বাগানে সীমাবদ্ধ থাকছেন না শ্রমিকরা ৷ এবার বিকল্প আয়ের খোঁজে একাধিক উদ্যোগ চা-বাগান শ্রমিকদের ৷ নিজেরাই সমবায় সমিতি তৈরি করে স্বর্নিভর হওয়ার পথ খুঁজে নিয়েছেন ৷
সমবায় সমিতি গড়ে বিকল্প আয়ের পথে চা-বাগান শ্রমিকরা ৷ (ইটিভি ভারত) আর চা-পাতা তোলা নয়, এবার বাগানের শ্রমিকরা খুললেন 'বাগানিয়া বাজার' ৷ এটি একটি দোকান ৷ যা শুরু করেছেন চা-বাগানের মহিলারা ৷ সেখানে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন আদিবাসী সমাজের পোশাক এবং তাঁদের সাজের নানা অলঙ্কার ৷ আপাতত সমবায় সমিতির মাধ্যমে পাওয়া ঋণের অর্থে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও শিলিগুড়ি থেকে সামগ্রী কিনে এনে বিক্রি করছেন তাঁরা ৷ আগামী দিনে এই ব্যবসাকে আরও বড় করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন, মধু চা-বাগান সমবায় সমিতির সম্পাদক কণিকা ধনওয়াল ৷
তিনি জানান, "ভবিষ্যতে এই ব্যবসার পুঁজি বাড়িয়ে নিজেরাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের পোশাক, গয়না ও নানা সামগ্রী তৈরি করব ৷ এর জন্য আরও বড় জায়গা লাগবে ৷ নিজেদের গোডাউন তৈরি করব ৷ সেখানে অনেক মহিলারা কাজ করবেন ৷" বাগানের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যাতে শুধু চা-বাগানের উপর নির্ভরশীল না-হন, সেই লক্ষ্যে এক বছর আগে বাগানের বেশ কয়েকজন শ্রমিক পরিবার মিলে সমবায় সমিতি তৈরি করেন ৷ এরপর তাঁরা বাড়িতেই জৈব সার, অলঙ্কার ও নানা সামগ্রী তৈরি করে বাজারে তা বিক্রি করেন ৷ সেখানে করে লাভের মুখ দেখার পর, বৃহত্তর উদ্দেশ্যে ব্যবসা শুরু করেন তাঁরা ৷
ডুয়ার্সে এই প্রথম আদিবাসী সম্প্রদায়ের পোশাক বিক্রয়ের জন্য, এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কণিকা ধনওয়াল ৷ তিনি জানান, চা-বাগানে একজন শ্রমিক দিনে 200-250 টাকা উপার্জন করছেন ৷ এতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাপন করাই দুর্বিষহ হয়ে উঠছে ৷ ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছেন তাঁরা ৷ তাই এবার নিজেদের জীবনযাপনের মান বাড়াতে ও সুরক্ষিত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এই 'বাগানিয়া বাজার' তৈরি করা হয়েছে ৷ আগামী দিনে এই বাগানিয়া বাজারকে বড় আকার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের ৷