কলকাতা, 3 মে: সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমোদন মিলছে না ৷ বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট । কারও কারও ক্ষেত্রে বিচারপর্ব শুরু করতে রাজ্যপালের অনুমতি লাগবে। আবার কারও ক্ষেত্রে প্রয়োজন মুখ্যসচিবের অনুমতি। এই বিষয় নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাই এই সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশা কাটাতে সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷
বিচারপর্বে অনুমতি সংক্রান্ত ধোঁয়াশা তৈরির কারণ কী?
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য সরকারি আধিকারিকদের জামিন মামলায় নতুন তথ্য তুলে ধরলেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের তরফের আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, তাঁর দুই মক্কেলকে চাকরিতে নিযুক্ত করেছিলেন রাজ্যপাল । ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেম করে বিচার শুরু করার ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্যের মুখ্যসচিবের নয় । তবে রাজ্যের মুখ্যসচিব নিজের বক্তব্য জানতে প্রায় দু'মাস সময় চেয়েছেন। তাই আপাতত জামিনের আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে চান দুই অভিযুক্ত।
রাজ্যের মুখ্যসচিব না রাজ্যপাল, বিচারপর্বে কার অনুমোদন লাগবে?
এখন পর্যন্ত যাদের বিচারপর্ব শুরু করা যাচ্ছে না, তাঁদের মধ্যে কাদের রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমোদন লাগবে আর কাদের রাজ্যপালের অনুমোদন লাগবে, সেটা আগামী মঙ্গলবার আদালতে জানাতে হবে। কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ধীরজ ত্রিবেদীকে এই বিষয়টি জানানোর নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সে ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যসচিবের অনুমতির জন্য বসে থাকতে হবে না । রাজ্যপাল অনুমতি দিয়ে দিলেই নিম্ন আদালতে বিচারের কাজ শুরু করে দেওয়া যাবে।
কবে থেকে থমকে নিয়োগ দূর্নীতির বিচার প্রক্রিয়া?
উল্লেখ্য, নিয়োগ দূর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পর সিবিআইয়ের মামলায় জামিনের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ একইসঙ্গে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবিরেশ ভট্টাচার্য-সহ এই মামলায় জড়িত একাধিক ব্যাক্তি। নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় একাধিকবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের ভুমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। কারণ, 2022 সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিবিআই এদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শুরু করার জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিবের অনুমতি চাইলেও তিনি তা এখনও দেননি । এখন লোকসভা নির্বাচনের পরিস্থিতিতে তিনি ব্যাস্ত বলে এই বিষয়ে একাধিকবার সময় চেয়েছেন হাইকোর্টের কাছে । তাতেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি বাগচি।
আরও পড়ুন:
- সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন কবে? মুখ্যসচিবকে জানানোর শেষ সুযোগ দিল হাইকোর্ট
- নতুন করে হবে এসএসসি'র নিয়োগ, মাথায় হাত 2016 সালের চাকরিপ্রার্থীদের